উচ্চমাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায় : সংক্ষিপ্ত তথ্য (Part - 2)

উচ্চমাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায়টির দ্বিতীয় পর্বে আমরা ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলি তুলে ধরছি। এই সকল তথ্য গুলি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি, উল্লেখিত তথ্য গুলি পশ্চিমবঙ্গের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও পরীক্ষা প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে। 

উচ্চমাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায় : সংক্ষিপ্ত তথ্য (Part - 2)
উচ্চমাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায় : সংক্ষিপ্ত তথ্য (Part - 2)


(ক.) ক্ষমতা হস্তান্তরের পটভূমি - সি আর ফর্মুলা, ওয়াভেল পরিকল্পনা, মন্ত্রী মিশন : সংক্ষিপ্ত তথ্য 

  1. পাকিস্তান সমস্যার সমাধানের জন্য "সি আর ফর্মুলা" পেশ করেন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, ১৯৪৪ খ্রিঃ
  2. ১৯৪৪ খ্রিঃ গান্ধী অনুগামী চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী প্রস্তাব দেন, মুসলিম লিগ প্রথমে কংগ্রেসের স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন করবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে গন ভোটের মাধ্যমে পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি যাচাই ও বাস্তবায়িত করা হবে। এটিই "সি আর ফর্মুলা" বা "রাজাজি সূত্র" নামে পরিচিত। 
  3. মহম্মদ আলি জিন্না সি আর ফর্মুলা প্রত্যাখ্যান করেছিলো। 
  4. ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে বড়োলাট ওয়াভেল ১৯৪৫ খ্রিঃ ১৪ ই জুন কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের কাছে যে পরিকল্পনা পেশ করেন, তাই "ওয়াভেল পরিকল্পনা" নামে পরিচিত।
  5. ওয়াভেল পরিকল্পনায় বলা হয় - (ক) ব্রিটিশ সরকার ভারতে খুব শীঘ্রই ক্ষমতা হস্তান্তর ও নতুন সংবিধান রচনা করবে। (খ) নতুন সংবিধান রচনার আগে ভারতীয়দের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। (গ) বড়োলাট ও প্রধান সেনাপতি বাদে সকল ভারতীয় সদস্যদের নিয়ে বড়োলাটের কার্যনির্বাহক সমিতি গঠন করা হবে। (ঘ) কার্যনির্বাহক সমিতিতে হিন্দু ও মুসলিম সদস্যদের অনুপাত সমান হবে।
  6. জিন্নার অনমনীয় মনোভাবের কারনে ওয়াভেল পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে নি।
  7. ১৯৪৫ খ্রিঃ লেবার পার্টির ক্লিমেন্ট এটলি ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। 
  8. ১৯৪৬ খ্রিঃ ২৪ শে মার্চ মন্ত্রী মিশন ভারতে আসে
  9. ভারতে ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে আলাপ আলোচনার জন্য ১৯৪৬ খ্রিঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৩ জন সদস্যকে নিয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল ভারতে আসে। এই দলটি "মন্ত্রী মিশন" বা "ক্যাবিনেট মিশন" নামে পরিচিত।
  10. মন্ত্রী মিশনের ৩ জন সদস্য ছিলেন - ভারত সচিব স্যার পেথিক লরেন্স, বানিজ্য সভার সভাপতি স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস, নৌ বাহিনীর প্রধান এ ভি আলেকজান্ডার

(খ.) গনপরিষদ গঠন, মাউন্টব্যাটন ঘোষনা ও ভারতীয় স্বাধীনতা আইন : সংক্ষিপ্ত তথ্য 

  1. মন্ত্রী মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতের সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে ১৯৪৬ খ্রিঃ গনপরিষদ গঠিত হয়
  2. গনপরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ
  3. বাংলায় লিগ সরকারের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় পুলিশ ও প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় রেখে কলকাতায় ১৯৪৬ খ্রিঃ ১৬ থেকে ২০ আগস্ট পাঁচদিন ধরে যে একতরফা দাঙ্গা ও হিন্দুদের ওপর মুসলিমদের অত্যাচার চলে, তাকে "কলকাতা হত্যাকাণ্ড" বা Great calcutta killing বলা হয়।
  4. ১৯৪৬ খ্রিঃ ১৬ ই আগস্ট মুসলিম লিগ বলপূর্বক ভাবে পাকিস্তান আদায় করার জন্য "প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের" ডাক দেন। 
  5. "ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম" গ্রন্থটি লিখেছিলেন - মৌলানা আবুল কালাম আজাদ।
  6. ১৯৪৬ খ্রিঃ ২ রা সেপ্টেম্বর, জওহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে (প্রধানমন্ত্রীত্বে) ভারতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
  7. ১৯৪৭ খ্রিঃ ১৫ ই আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভের পর ২৯ শে আগস্ট সংবিধান রচনার জন্য একটি খসড়া কমিটি গঠন করা হয়।
  8. সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি হন ড. বি আর আম্বেদকর। 
  9. ১৯৪৭ খ্রিঃ ৩ রা জুন লর্ড মাউন্টব্যাটন ভারত বিভাগের যে পরিকল্পনা ঘোষনা করেন, তাকেই "মাউন্টব্যাটন প্রস্তাব" বা "মাউন্টব্যাটন রোয়েদাদ" বলা হয়।
  10. মাউন্টব্যাটন পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতকে ভারতপাকিস্তান নামে দুটি ডোমিনিয়নে বিভক্ত করা হয়েছিলো। 
  11. ১৯৪৭ খ্রিঃ ৪ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে "ভারতের স্বাধীনতা আইন" পাশ হয়। এই আইন ১৮ ই জুলাই ইংল্যান্ডের রাজার সম্মতি লাভ করে।
  12. স্যার সিরিল রেডক্লিফ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করেন। রেডক্লিফ লাইন অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তান বিভাজিত হয়। 
  13. দেশভাগ ও স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হন মহম্মদ আলি জিন্না এবং প্রধানমন্ত্রী হন লিয়াকৎ আলি খান। 
  14. স্বাধীনতার পর ভারতের গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী এবং প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন জওহরলাল নেহেরু। 
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post