উচ্চমাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায়টির অবশিষ্ট তথ্য গুলিকে নীচে তুলে ধরা হলো। আশা করছি, বিগত পর্ব গুলির মতো আজকের পর্বটিও ছাত্রছাত্রীদের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের প্রস্তুতির জন্য কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হলো হলো - ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে প্রবর্তিত বিভিন্ন ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা, কোম্পানির বানিজ্য নীতি, অবশিল্পায়ন, ভারতে রেলপথের সূচনা ও শিল্পায়ন, ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বৌদ্ধিক যুক্তি, চিনে ক্যান্টন বানিজ্য ও অসম চুক্তি ব্যবস্থা।
উচ্চমাধ্যমিক তৃতীয় অধ্যায় : সংক্ষিপ্ত তথ্য (Part - 3) |
(ক.) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা :-
- মুঘল আমলে প্রদেশের ক্ষমতাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হতো। যথা - দেওয়ানি ও নিজামত।
- কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বিচারের ক্ষমতাকেই বলা হতো দেওয়ানি। দেওয়ানির ক্ষমতা যিনি লাভ করতেন তাকে বলা হতো দেওয়ান।
- মুঘল সম্রাট প্রত্যেক প্রদেশের জন্য আলাদা আলাদা দেওয়ান নিযুক্ত করতেন। দেওয়ানরা তাদের কাজের জন্য মুঘল সম্রাটের কাছে দায়বদ্ধ ছিলেন।
- অন্যদিকে প্রদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বকে বলা হতো নিজামত। নিজামতের দায়িত্ব প্রদেশের নবাবের হাতে থাকতো।
- বক্সারের যুদ্ধের (১৭৬৪) পর ১৭৬৫ খ্রিঃ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষর করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যার দেওয়ানির ক্ষমতা অর্থাৎ রাজস্ব আদায় ও দেওয়ানি বিচারের অধিকার লাভ করেছিলো।
- দেওয়ানির অধিকার লাভ করার পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মহম্মদ রেজা খানকে বাংলার এবং সিতাব রায়কে বিহার ও ঊড়িষ্যার নায়েব - দেওয়ান পদে নিযুক্ত করেছিলো।
- রেজা খান ও সিতাব রায় বাংলায় রাজস্ব আদায়ের জন্য "আমিলদার" নামে কর্মচারী নিযুক্ত করেছিলেন। এরা সর্বোচ্চ পরিমান রাজস্ব আদায় করে দেওয়ার শর্তে নিযুক্ত হতেন।
- গভর্নর কার্টিয়ার আমিলদারি প্রথা বাতিল করে রাজস্ব আদায়ের জন্য সুপারভাইজার নিয়োগ করেন।
- ১৭৭২ খ্রিঃ ওয়ারেন হেস্টিংস ভারতে এসে দ্বৈত শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটান এবং দেওয়ানির ক্ষমতা সরাসরি গ্রহন করেন।
- ১৭৭২ খ্রিঃ ওয়ারেন হেস্টিংস পাঁচশালা বন্দোবস্ত চালু করেন। একে ইজারাদারি ব্যবস্থাও বলা হয়।
- পাঁচশালা বন্দোবস্তে পাঁচ বছরের জন্য ইজারাদারদের জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।
- ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৩ খ্রিঃ বাংলায় দস্তক প্রথার অবসান ঘটান।
- ১৭৭৩ খ্রিঃ বোর্ড অব রেভেনিউ গঠন করেন এবং
- ১৭৭৬ খ্রিঃ "আমিনি কমিশন" গঠন করেন।
- ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৭ খ্রিঃ একসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। এই বন্দোবস্তে এক বছরের জন্য জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।
- কর্নওয়ালিশের আমলে ভারতে জমি বন্দোবস্ত দেওয়া নিয়ে দুটি অভিমত দেখা দেয়। রাজস্ব বিভাগের প্রধান স্যার জন শোর বলেন মুঘল আমলে জমিদাররাই ছিলেন জমির মালিক। সুতরাং জমিদারদের সঙ্গেই ভূমি বন্দোবস্ত করা উচিত। অন্যদিকে কোম্পানির দলিল বিভাগের প্রধান জেমস গ্রান্ট বলেন, মুঘল আমলে জমির প্রকৃত মালিক ছিলো সরকার। জমিদাররা ছিলো শুধুমাত্র রাজস্ব সংগ্রাহক। তাই কৃষকদের সঙ্গেই জমি বন্দোবস্ত করা উচিত। এই বিতর্ক "শোর - গ্রান্ট বিতর্ক" নামে পরিচিত।
- ১৭৮৯ খ্রিঃ দশশালা বন্দোবস্ত চালু করেন লর্ড কর্নওয়ালিশ। এই ব্যবস্থায় দশ বছরের জন্য জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিলো।
- ১৭৯৩ খ্রিঃ লর্ড কর্নওয়ালিশ বাংলা, বিহার ও ঊড়িষ্যায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেন।
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো জমিদারদের সঙ্গে।
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে রাজস্বের হার চিরকালের জন্য অপরিবর্তিত থাকতো।
- প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট দিনে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অন্তর্গত প্রত্যেক জমিদারদের দেয় রাজস্ব পরিশোধ করতে হতো। একে "সূর্যাস্ত আইন" বলা হতো।
- মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ১৮২০ খ্রিঃ রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত চালু করেন ক্যাপ্টেন আলেকজান্ডার রিড ও স্যার টমাস মনরো।
- রায়তওয়ারি বন্দোবস্ত সরাসরি রায়ত বা কৃষকদের সঙ্গে করা হয়েছিলো।
- স্যার এলফিনস্টোন ১৮২২ খ্রিঃ উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও মধ্য ভারতের কিছু কিছু অঞ্চলে মহলওয়ারি বন্দোবস্তের প্রচলন করেন।
- মহলওয়ারি বন্দোবস্তে কয়েকটি গ্রামকে নিয়ে এক একটি মহল বা তালুক গঠন করে কয়েকজন ব্যক্তির হাতে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হতো।
- ভাইয়াচারি বন্দোবস্ত পাঞ্জাব অঞ্চলে প্রচলিত ছিলো। এই ব্যবস্থায় প্রত্যেক চাষির ওপর পৃথক পৃথক ভাবে রাজস্ব ধার্য করা হতো এবং রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব গ্রামেরই একজন ব্যক্তির হাতে প্রদান করা হতো।
(খ.) কোম্পানির বানিজ্য নীতি,অবশিল্পায়ন, রেলপথ স্থাপন, শিল্পায়ন ও বৌদ্ধিক বিচার :-
- ভারতে কোম্পানির একচেটিয়া বানিজ্য ১৮১৩ খ্রিঃ পর্যন্ত বহাল থাকে।
- ১৮১৩ খ্রিঃ চার্টার আইনে কোম্পানির একচেটিয়া বানিজ্যের অবসান ঘটানো হয়।
- ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথমদিকে দেশীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অগ্রিম চুক্তি করে অগ্রিম অর্থ প্রদানের মাধ্যমে জিনিসপত্র কিনতো। এই দেশীয় ব্যবসায়ীদেরই "দাদনি ব্যবসায়ী" বলা হতো।
- ভারতে পন্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে এজেন্সি ব্যবস্থা চালু করেন লর্ড কর্নওয়ালিশ। এজেন্সি ব্যবস্থায় কোম্পানি তার নিজস্ব এজেন্ট নিযুক্ত করে দেশীয় পন্য ক্রয় করতো।
- পলাশীর যুদ্ধের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বানিজ্য নীতি, একের পর এক দেশীয় রাজ্যের পতন, দেশীয় শিল্পের ওপর অসম শুল্কনীতি, ইংল্যান্ডের কলকারখানা থেকে আগত সস্তা কাপড়ের আমদানি ইত্যাদির ফলে ভারতে সমৃদ্ধ কুটির শিল্প ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে শিল্প নির্ভরতা কমে এবং কৃষি নির্ভরতা বৃদ্ধি পায়। এই বিশেষ অর্থনৈতিক অবস্থাকেই "অবশিল্পায়ন" বলা হয়।
- ভারতে অবশিল্পায়নের প্রধান কারন গুলি ছিলো - (ক) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া বানিজ্য নীতি, (খ.) ভারতীয় শিল্পের ওপর ব্রিটিশ সরকারের অসম শুল্ক নীতি, (গ) ইংল্যান্ডের কলকারখানার সস্তা কাপড়ের ভারতের বাজার দখল, (ঘ) দেশীয় শিল্পের পৃষ্ঠপোষক দেশীয় রাজ্য গুলির অবলুপ্তি ইত্যাদি।
- দেশীয় শিল্পের অবক্ষয়ের ফলে /অবশিল্পায়নের ফলে - (ক) ভারত একটি রপ্তানিকারক দেশ থেকে আমদানিকারক দেশে পরিনত হয়। (খ) ভারতের চিরাচরিত কুটির শিল্প ও শিল্প সমৃদ্ধ শহর গুলির পতন ঘটে। (গ) দেশে বেকারত্ব ও দারিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। (ঘ) কৃষির ওপর চাপ বৃদ্ধি পায় এবং কৃষিতে মাথাপিছু আয় কমে যায়।
- ভারতীয় রেলপথের জনক বলা হয় - লর্ড ডালহৌসিকে।
- ভারতে সর্বপ্রথম রেলপথের প্রতিষ্ঠা করেন - গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেল কোম্পানি।
- লর্ড ডালহৌসির আমলে ১৮৫৩ খ্রিঃ ভারতে সর্বপ্রথম রেলপথের প্রতিষ্ঠা হয়।
- ১৮৫৩ খ্রিঃ বোম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ভারতের প্রথম রেলপথ স্থাপিত হয়েছিলো।
- ১৮৫৪ খ্রিঃ হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ভারতের দ্বিতীয় রেলপথ স্থাপিত হয়েছিলো।
- গ্যারান্টি ব্যবস্থা রেলপথ স্থাপনের সঙ্গে যুক্ত ছিলো।
- ভারতে রেলপথ নির্মানের কোম্পানি গুলিকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে কোম্পানি গুলিকে সরকার কয়েকটি বিষয়ে গ্যারান্টি বা প্রতিশ্রুতি দেয়। এই ব্যবস্থাকেই "গ্যারান্টি প্রথা" বলা হয়।
- ভারতীয় রেল ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য ১৯০৫ খ্রিঃ রেল বোর্ড গঠিত হয়।
- লর্ড বেন্টিঙ্কের আমলে ভারতে সর্বপ্রথম চা চাষের সূচনা ঘটে।
- ভারতের প্রথম পাটকল স্থাপিত হয় - কলকাতার নিকটবর্তী রিষড়ায়। ১৮৫৫ খ্রিঃ এটি প্রতিষ্ঠা করেন জর্জ অকল্যান্ড।
- ১৮১৪ খ্রিঃ রানিগঞ্জে সর্বপ্রথম কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়।
- ১৮৭৪ খ্রিঃ বাংলার বরাকরে প্রথম লৌহ ও ইস্পাত কারখানা স্থাপিত হয়।
- ১৮৩৩ খ্রিঃ চার্টার আইনের ফলে নীলকর সাহেবরা ভারতে জমি কেনার অধিকার লাভ করেছিলেন।
- বাউড়িয়া কটন মিল স্থাপিত হয়েছিলো হাওড়ায় ১৮১৮ খ্রিঃ।
- ১৯০৭ খ্রিঃ জামসেদজি টাটা জামসেদপুরে টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।
- বাঙালি অধ্যাপক প্রমথনাথ বসু ময়ূরভঞ্জের গোরুমহিষানী অঞ্চলে লৌহখনির আবিষ্কার করেন এবং জামসেদজি টাটাকে লৌহ ইস্পাত কারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করেন।
- প্রমথনাথ বসুর অনুরোধে জামসেদজি টাটা জামসেদপুরে ইস্পাত কারখানা স্থাপন করেন।
- জেমস মিল সর্বপ্রথম সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভারতের ইতিহাস লেখেন।
- দ্যা হিস্ট্রি অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া (১৮১৭) গ্রন্থটি লেখেন - জেমস মিল।
- জেমস মিল ভারতের ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করেন - হিন্দু যুগ, মুসলিম যুগ ও ব্রিটিশ যুগ।
- উপযোগবাদের প্রবক্তা ছিলেন - জেরেমি বেন্থাম।
(গ.) চিনের ইতিহাস :-
- চিনারা নিজেদের দেশকে "স্বর্গীয় দেশ" এবং চিন সম্রাট কে "স্বর্গের সন্তান" বলে মনে করতো।
- ঊনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় মাঞ্চু রাজবংশ শাসিত চিন সবদিক থেকেই একটি পিছিয়ে পড়া দেশ ছিলো।
- বিদেশী রাষ্ট্র প্রধান বা বিদেশী বনিকরা চিন সম্রাটের সঙ্গে দেখা করলে চিনের চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী নজরানা বা উপঢৌকন দিতে হতো এবং চিনা সম্রাটের সামনে নতজানু হয়ে অভিবাদন জানাতে হতো একে বলা হতো "কাও তাও" প্রথা।
- ইওরোপীয়দের মধ্যে পোর্তুগিজ বনিকরাই সর্বপ্রথম চিনে বানিজ্য করতে এসেছিলো।
- পোর্তুগিজরা চিনের ম্যাকাও বন্দরে তাদের বানিজ্যিক ঘাঁটি নির্মানের অনুমতি পেয়েছিলো।
- চিনে বিদেশীরা ক্যান্টন বন্দরের মধ্য দিয়ে বানিজ্য চালাতো।
- ক্যান্টন বন্দরের মধ্য দিয়ে চিনে চিনে যে এক বন্দর কেন্দ্রিক বৈদেশিক বানিজ্য চলতো, তাকে "ক্যান্টন বানিজ্য" বলা হয়।
- "কো হং" ছিলো চিনের একটি বনিক সংঘ। ক্যান্টন বন্দরে বৈদেশিক বনিকরা কো হং দের মাধ্যমে বৈদেশিক বানিজ্য চালাতো।
- চিন বিদেশী বনিকদের অনীহা প্রকাশ করে বিদেশী বনিকদের প্রতি যে কঠোর নীতি ও মনোভাব নিয়েছিলো তাকে "রুদ্ধদ্বার নীতি" বলা হয়।
- ১৮৩৯ খ্রিঃ প্রথম অফিম যুদ্ধ হয়েছিলো ইংল্যান্ডের সঙ্গে চিনের।
- ১৮৪২ খ্রিঃ নানকিং এর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ইংল্যান্ডের সঙ্গে চিনের।
- নানকিং এর সন্ধি দ্বারা - (ক) ক্যান্টন, সাংহাই, অ্যাময়. ফুচাও, নিংগপো এই ৫ টি বন্দর চিন ইওরোপীয় বনিক দের জন্য খুলে দিতে বাধ্য হয়। তাছাড়া (খ) হংকং বন্দর চিরকালের জন্য চিন ইংরেজদের হাতে ছেড়ে দেয়। (গ) কো হং প্রথা বাতিল করা হয়।
- ১৮৪৩ খ্রিঃ চিনের সঙ্গে ইংল্যান্ডের "বগের সন্ধি" স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধি দ্বারা ইংল্যান্ড চিনে অতি রাষ্ট্রীক অধিকার লাভ করে।
- ১৮৪৪ খ্রিঃ চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "ওয়াংসিয়ার চুক্তি" স্বাক্ষরিত হয়।
- ১৮৪৪ খ্রিঃ ফ্রান্সের সঙ্গে চিনের "হোয়ামপোয়ার সন্ধি" স্বাক্ষরিত হয়।
- ১৮৫৬ খ্রিঃ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সঙ্গে চিনে দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধ হয়।
- দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে পরাজিত হবার পর চিনের সঙ্গে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের ১৮৫৮ খ্রিঃ" টিয়েনসিনের সন্ধি" স্বাক্ষরিত হয়।
- টিয়েনসিনের সন্ধি স্বাক্ষর করার পর ফ্রান্স ও ব্রিটেনের যৌথ বাহিনী ১৮৬০ খ্রিঃ বলপূর্বক পিকিং দখল করে চিনকে পিকিং কনভেনশনে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।
- ১৮৯৫ খ্রিঃ চিনের সঙ্গে জাপানের "শিমনোসেকির সন্ধি" স্বাক্ষরিত হয়।
- ১৮৩৯ খ্রিঃ প্রথম আফিম যুদ্ধে পরাজিত হবার পর চিনের ওপর ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশ গুলি একতরফা ভাবে একাধিক চুক্তি ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলো। এই চুক্তি গুলিকেই অসম চুক্তি বলা হয়।
- অসম চুক্তির ফলে চিন একটি আধা ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
- আই হো চুয়ান নামে গুপ্ত সমিতি চিনে বক্সার বিদ্রোহ শুরু করে (১৯০০)।
- ১৯০১ খ্রিঃ ১১ টি বিদেশী রাষ্ট্র চিনের ওপর বক্সার প্রটোকল নামে এক অসম চুক্তি চাপিয়ে দেয়।
(ঘ.) চিনের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের অসম চুক্তির একটি তালিকা :-
(১.) চিনের সঙ্গে ব্রিটেনের চুক্তি : - নানকিংয়ের চুক্তি (১৮৪২), ও বগের চুক্তি (১৮৪৩)।
(২.) চিনের সঙ্গে ফ্রান্সের চুক্তি :- হোয়ামপোয়ার সন্ধি (১৮৪৪)।
(৩.) চিনের সঙ্গে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের যৌথ চুক্তি :- টিয়েনসিনের চুক্তি (১৮৫৮),পিকিং কনভেনশন চুক্তি (১৮৬০)।
(৪.) চিনের সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তি :- আইগুনের সন্ধি (১৮৫৮)।
(৫.) চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি :- ওয়াংসিয়ার সন্ধি (১৮৪৪)।
(৬.) চিনের সঙ্গে জাপানের চুক্তি :- শিমনোসেকির সন্ধি (১৮৯৫)।