ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অর্থ, ব্যাখ্যা ও ধারনা

"পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ" প্রবর্তিত মাধ্যমিক ইতিহাসের    বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য শব্দার্থের অর্থ ও ব্যাখ্যা এখানে তুলে ধরা হলো। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এই আলোচ্য শব্দ গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, আজকের আলোচনাটি কিছুটা হলেও ছাত্রছাত্রীদের কাজে লাগবে এবং তাদের সমৃদ্ধ করবে। 

ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অর্থ, ব্যাখ্যা ও ধারনা
ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অর্থ, ব্যাখ্যা ও ধারনা 

গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক শব্দার্থের অর্থ, ব্যাখ্যা ও ধারনা :-

(১.) হিস্টোরিয়া - অনুসন্ধান

(২.) বাইশ গজের খেলা বলা হয় - ক্রিকেটকে বলা হয়।

(৩.) পাস্তা - ময়দা দিয়ে তৈরি একধরনের খাবার।

(৪.) টপ্পা - পাঞ্জাবের উট চালকদের গান, যার প্রবর্তক ছিলেন গোলাম নবি।

(৫.) গজল - আরবে রাজার স্তুতিমূলক গানকে গজল বলা হত।

(৬.) মুন্ডুজামা - কেরালায় পুরুষদের বিশেষ পোশাক।

(৭.) অঙ্গরাখা - গুজরাটে পুরুষদের বিশেষ পোশাক।

(৮.) চান্নিয়া চোলি - গুজরাটে নারীদের বিশেষ ধরনের পোশাক।

(৯.) ব্রাহ্মিকা স্টাইল - পার্সি স্টাইলে কুঁচি দিয়ে ব্লাউজ সহযোগে শাড়ি পরার স্টাইল। জ্ঞানদানন্দিনী দেবী ব্রাহ্মসমাজের নারীদের জন্য এই শাড়ি পরার স্টাইল বাংলাতে প্রবর্তন করেছিলেন।

(১০.) ই মেল - ইলেকট্রনিক্স মেল বা বার্তা।

(১১.) ইন্টারনেট - কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট নির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ইন্টারনেট বলে।

(১২.) ফটোগ্রাফি - আলোকচিত্র। সূর্যের আলোকে ব্যবহার করে ক্যামেরার সাহায্যে ছবি তোলাকেই ফটোগ্রাফি বলে।

(১৩.) ফেমিনিজম/মানবীবিদ্যা - নারী সংক্রান্ত বিদ্যা চর্চাকে ফেমিনিজম বা মানবীবিদ্যা বলা হয়।

(১৪.) মহাফেজখানা - সরকারি নথিপত্র যেখানে সংরক্ষিত থাকে তাকেই "মহাফেজখানা" বলা হয়। ভারতের চারটি মহাফেজখানা হল - দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই ও চেন্নাই।

(১৫.) সরকারি নথিপত্র - সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম লিখিত ডকুমেন্টের মধ্য দিয়েই হয়। এই লিখিত ডকুমেন্ট গুলিকেই সরকারি নথিপত্র বলে।

(১৬.) C. B. I - "Central Bureau of Investigation". ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা হল CBI.

(১৭.) CID, ED - ভারতের গোয়েন্দা বিভাগ

(১৮.) আত্মজীবনী - নিজের জীবনকাহিনী বা আত্মকথা মূলক সাহিত্যকে আত্মজীবনী বলা হয়।

(১৯.) স্মৃতিকথা - কোন বিশেষ সময় বা ঘটনার স্মৃতিচারনামূলক কথন বা সাহিত্যকে স্মৃতিকথা বলে।

(২০.) সাময়িকপত্র বা ম্যাগাজিন - নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত এবং বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচিত বাঁধাই পত্রিকাকেই সাধারনত সাময়িকপত্র বলে।

(২১.) সংবাদপত্র - তাৎক্ষণিক খবর সম্বলিত সস্তা কাগজে বাঁধাইহীন পত্রিকা, যা সাধারনত দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত হয়।

(২২.) বটতলা সাহিত্য - উত্তর কলকাতার শোভাবাজার থেকে বিডন স্কোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত চিৎপুরের রাস্তার দুদিকের অঞ্চলকে বলা হতো বটতলা। এখানে নিন্মমানের ছাপাখানায় প্রকাশিত পুস্তক গুলিকেই এককথায় বটতলা সাহিত্য বলা হতো।

(২৩.) বামাবোধিনী - বামা শব্দের অর্থ নারী, বোধিনী শব্দের অর্থ বন্দনা করা, প্রশংসা করা বা বোধদয় ঘটনো অর্থাৎ সচেতনত বা জাগরন ঘটানো। বামাবোধিনী ছিলো ব্রাহ্মসমাজের নেতা উমেশচন্দ্র দত্তের সম্পাদনায় ১৮৬৩ খ্রিঃ প্রকাশিত একটি নারীকেন্দ্রীক পত্রিকা

(২৪.) হিন্দু প্যাট্রিয়ট - প্যাট্রিয়ট শব্দের অর্থ হল দেশপ্রেমিক। হিন্দু দেশপ্রেমিক বা হিন্দু প্যাট্রিয়ট ছিল ১৮৫৩ খ্রিঃ গিরিশচন্দ্র ঘোষ ও হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত একটি জাতীয়তাবাদী সংবাদপত্র

(২৫.) নকশা - উনিশ শতকে একধরনের ব্যঙ্গাত্মক রম্যরচনাকে নকশা বলা হতো। বিশেষ ঈঙ্গিতপূর্ন রসাত্মক সাহিত্যকেই সাধারনত নকশা বলা হত।

(২৬.) হুতোম প্যাঁচার নকশা - কালীপ্রসন্ন সিংহের লেখা প্রথম সামাজিক ব্যঙ্গ সাহিত্য ছিল হুতোম প্যাঁচার নকশা।

(২৭.) প্রাচ্যবাদী - প্রাচ্য অর্থাৎ ভারতের ভাষা, সাহিত্য ও ইতিহাস চর্চার সমর্থকদের প্রাচ্যবাদী বলা হয়।

(২৮.) পাশ্চাত্যবাদী - ইওরোপের ভাষা অর্থাৎ ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য ও দর্শনের সমর্থকদের পাশ্চাত্যবাদী বলা হয়।

(২৯.) Man making religion - মানুষ তৈরির ধর্ম। স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মচিন্তা ও দর্শন এই নামে পরিচিত।

(৩০.) নববেদান্ত - স্বামী বিবেকানন্দ বেদান্তের মূল দার্শনিক তত্ত্বকে কর্মে প্রয়োগ করে, বেদান্তের যে নতুন ব্যাখ্যা দেন তাকেই নববেদান্ত বা প্র্যাকটিক্যাল বেদান্ত বলা হয়।

(৩১.) সতী - যে নারী স্বামীর প্রতি চির অনুগত ও বিশ্বস্ত থেকে সর্বদা সব অবস্থায় স্বামীর অনুগামীনী হন, তাকেই সতী বলে। হিন্দু ধর্মে "সতীত্বের" ধারনাকে সধবা নারীর শ্রেষ্ঠ রূপ বলে ঘোষনা করা হয়েছিলো। সতীত্বের ধারনা থেকেই মৃত স্বামীর অনুগামীনী স্ত্রীর জন্য "সহমরন প্রথার" উদ্ভব ঘটেছিলো।

(৩২.) বিদ্রোহ - প্রচলিত কোন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সম্মিলিত সশস্ত্র বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকেই বিদ্রোহ বলে।

(৩৩.) অভ্যুত্থান - রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনগনের ক্ষোভকে ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্ঠির সশস্ত্র সামরিক সংগ্রামকেই অভ্যুত্থান বলে।

(৩৪.) বিপ্লব - প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত, ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তনকেই বিপ্লব বলা হয়।

(৩৫.) চুয়াড় - চুয়াড় কথার অর্থ হল দূরবৃত্ত বা নীচ জাতি। ইংরেজ আশ্রিত জমিদাররা মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার কিছু অঞ্চলের আদিবাসীদের চুয়াড় বলতো।

(৩৬.) পাইক ও পাইকান জমি - চুয়াড়রা স্থানীয় জমিদারদের অধীনে সৈনিকের কাজ করতো। এদের পাইক বলা হতো। পাইকের বেতনের বদলে বেতনের সমানুপাতিক যে নিষ্কর জমি ভোগ করতো তাকে পাইকান জমি বলে।

(৩৭.) জঙ্গলমহল - চুয়াড় বিদ্রোহের পর বাঁকুড়া, মেদিনীপুর ও বিষ্ণুপুর শহরকে নিয়ে ১৮০০ খ্রিঃ যে পৃথক প্রশাসনিক অঞ্চল বা জেলা গঠন করে তাকেই জঙ্গলমহল বলে।

(৩৮.) দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি - কোল বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার কোলদের জন্য পৃথক প্রশাসনিক অঞ্চল বা এলাকা গঠন করে।

(৩৯.) দিকু - আদিবাসী এলাকায় বহিরাগত অ - আদিবাসী জমিদার, ব্যবসায়ী, মহাজন ও ইংরেজ কর্মচারীদের দিকু বা শত্রু বলা হতো।

(৪০.) হুল - বিদ্রোহ

(৪১.) দামিন - ই - কোহ - পাহাড়ের প্রান্তদেশ

(৪২.) শালগেরো - শালগাছের ডাল। 

(৪৩.) সিধু - কানু ডহর - সিধু কানুর সম্মান রক্ষার্থে তৈরি বিশেষ জায়গা বা ভূমি

(৪৪.) কেনারাম ও বেচারাম - বিশেষ দুই ধরনের বাটখারা। কেনারাম ছিলো বেশি ওজনের বাটখারা। বেচারাম ছিলো কম ওজনের বাটখারা। সাঁওতাল অধ্যুষিত এলাকায় বহিরাগত ব্যবসায়ীরা এই দুই বাটখারা ব্যবহার করে পন্য কেনাবেচা করতো ও সাঁওতালদের প্রতারনা করতো।

(৪৫.) সাঁওতাল পরগনা - সাঁওতাল বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক সাঁওতালদের জন্য তৈরি করা বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল বা জেলা

(৪৬.) উলঘুলান - ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খলা।

(৪৭.) মুন্ডা - গ্রাম প্রধান

(৪৮.) খুঁৎকাঠি প্রথা - জমির যৌথ মালিকানা

(৪৯.) ধরতি আবা - ধরনীর পিতা। বিরসা মুন্ডাকে ধরতি আবা বলা হতো। 

(৫০.) সিং বোঙা - মুন্ডাদের সূর্য দেবতা

(৫১.) খুঁটি - মুন্ডা বিদ্রোহের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বা এলাকা

(৫২.) বীরসা সম্প্রদায় - বীরসা মুন্ডার ধর্মীয় আদর্শের অনুগামীবৃন্দ "বীরসা সম্প্রদায়" নামে পরিচিত ছিলো।

(৫৩.) বেত বেগারি প্রথা - বিনা পারিশ্রমিক বেগার খাটাকে বলা হয় "বেত বেগারি প্রথা"।

(৫৪.) "ওয়াহাবি" - "ওয়াহাবি" কথার অর্থ হল - নবজাগরন। ইসলামের পুর্নজাগরনের জন্য অষ্টাদশ শতাব্দীতে আরবে আব্দুল ওয়াহব ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা করেন। পরে এই আন্দোলন ভারতে ও বাংলাতেও শুরু হয়। 

(৫৫.) "তারিখ - ই - মহম্মদীয়া" - হজরত মুহাম্মদ প্রদর্শিত পথকে বলা হয় - "তারিখ - ই - মহম্মদীয়া"। এর অর্থ হজরত মুহাম্মদ প্রদর্শিত পথ। 

(৫৬.) "দার - উল - হারব" - "দার - উল - হারবের" অর্থ হল - বিধর্মী বা অমুসলিমদের দেশ

(৫৭.) "দার - উল - ইসলাম" - "দার উল ইসলাম" কথার অর্থ হল - ইসলামের দেশ বা ইসলামের পবিত্র ভূমি। ওয়াহাবি আন্দোলনকারীদের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো ভারতকে "দার - উল ইসলামে" পরিনত খর। 

(৫৮.) বাঁশের কেল্লা - বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা তিতুমিরের প্রধান প্রশাসনিক দুর্গ বা কেল্লা ছিলো" বাঁশের কেল্লা"। এটি বাঁশ ও মাটি দিয়ে নির্মিত হয়েছিলো। বাংলার বারাসত বসিরহাট অঞ্চল ছিলো তিতুমিরের বিদ্রোহের প্রধান কেন্দ্র। 

(৫৯.) ফরাজি - আরবি ভাষায় "ফরাজি" কথার অর্থ হল - ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য

(৬০.) হল্কা - দুদুমিঞা কর্তৃক গঠিত বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলকে বলা হতো "হাল্কা"।

(৬১.) দাদন - "দাদন" হল অগ্রিম অর্থ প্রদান করে নীলচাষের জন্য করা চুক্তি। বাংলায় দাদন প্রথায় বিদেশী নীলকররা নীলচাষ করতো। 

(৬২.) এলাকা চাষ বা নিজ আবাদি - নীলকররা জমিদারদের কাছ থেকে জমি কিনে বা ভাড়া নিয়ে ভাড়াটিয়া চাষীদের দিয়ে যে নীলচাষ করাতো, তাকে "নিজ আবাদি" বা "এলাকা চাষ" বলে।

(৬৩.) রায়তি/দাদনী আবাদী/বে এলাকা চাষ - নীলকররা চাষীকে অগ্রিম টাকা দাদন দিয়ে চাষীর জমিতে যে নীলচাষ করাতো, তাকে "রায়তি" বা "দাদনী আবাদী" বা "বে এলাকা চাষ" বলা হতো।

(৬৪.) তিন কাঠিয়া প্রথা - কুড়ি কাঠা জমি নিয়ে এক বিঘা হয়। এই এক বিঘা বা কুড়ি কাঠা জমির মধ্যে তিন কাঠা জমিতে বিহারে কৃষকদের বাধ্যতামূলক ভাবে নীল চাষ করতে হতো। একেই "তিন কাঠিয়া প্রথা" বলে।

(৬৫.) এনফিল্ড রাইফেল - ক্রিমিয়ার যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে "এনফিল্ড রাইফেল" নামে এক নতুন বন্দুক প্রচলন করা হয়, যার টোটা দাঁতে কেটে বন্দুকে ভারতে হতো। ভারতীয় সিপাহী বাহিনীতে এনফিল্ড রাইফেলের প্রবর্তন সিপাহী বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারন ছিলো।

(৬৬.) ব্যাঙ্গচিত্র - আমরা যে সমাজে বাস করি সেই সমাজে যদি বিপরীতধর্মী কিছু দেখি, যা আমাদের চোখে বেমানান তার আঁকা ছবিকেই সাধারনত "কার্টুন" বা "ব্যাঙ্গচিত্র" বলা হয়। ব্যাঙ্গচিত্র আঁকা হয় ব্যক্তি ও সমাজের দ্বিচারিতা ও আচরনের অসঙ্গতির দিক গুলিকে তুলে ধরার জন্য।

(৬৭.) প্রসেস ওয়ার্ক বা প্রসেস শিল্প - বহু সংখ্যক ছবিকে একই সঙ্গে বইতে ছাপার কৌশল বা পদ্ধতিকেই "প্রসেস ওয়ার্ক" বা "প্রসেস শিল্প" বলে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী এর উদ্ভাবক ছিলেন।

(৬৮.) হাফটোন ব্লক - ফটোগ্রাফকে বইপত্রে ছাপার উপযুক্ত করে ব্লক তৈরির প্রযুক্তিকেই বলে "হাফটোন ব্লক পদ্ধতি"।

(৬৯.) বিদ্যাসাগর সাট - বাংলা ছাপাখানার সুবিধার্থে বিদ্যাসাগর বাংলা বর্নমালার সংস্কার করে বাংলা অক্ষরের যে নতুন রূপ দেন, তাকেই "বিদ্যাসাগর সাট" বলে।

(৭০.) বিদ্যাবনিক - বাংলা ছাপাখানা খুলে বিদ্যাসাগর প্রভূত অর্থ উপার্জন ও ব্যাবসায়িক সাফল্য লাভ করেন। এজন্য তাকে "বিদ্যাবনিক" বলা হতো।

(৭১.) চৌকিদারি কর - ব্রিটিশ আমলে চৌকিদাররা গ্রামে পাহারা দিতো। গ্রামের নিরাপত্তার জন্য যে চৌকিদার নিয়োগ করা হতো তার কর সাধারনভাবে "চৌকিদারি কর" নামে পরিচিত ছিলো।

(৭২.) গোলদিঘির গোলামখানা - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় স্বদেশী আন্দোলনের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে "গোলদিঘির গোলামখানা" বলে অভিহিত করেছিলেন।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গোলদিঘির পাড়ে অবস্থিত ছিলো এবং এর  উদ্দেশ্য ছিলো ভারতীয়দের কেরানি তৈরি করে গোলামকরে রাখা। এজন্যই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে গোলদিঘির গোলামখানা বলা হতো।

(৭৩.) সমাজতন্ত্র - মার্কসবাদে সামাজিক সাম্য এবং  অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য যে তন্ত্র বা শাসন পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, তাকেই এককথায় "সমাজতন্ত্র" বলা হয়।

(৭৪.) রাজাকার - হায়দরাবাদ রাজ্যে নিজামের অনুগ্রহপুষ্ট যে মৌলবাদী সশস্ত্র সেনাদল গঠন করা হয়েছিলো, তাকেই "রাজাকার" বলা হয়।

(৭৫.) বীরাষ্টমীব্রত - স্বদেশী যুগে সরলাদেবী চৌধুরানী প্রবর্তিত মহাষ্টমীর দিনে পালনীয় বিশেষ ব্রতর নাম ছিলো বীরাষ্টমীব্রত। বীর পুত্রের মঙ্গল কামনায় এই ব্রত পালন করা হতো।

(৭৬.) ক্যাসটন - উইলিয়াম ক্যাসটন ছিলেন ইংল্যান্ডের মুদ্রন শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা। ১৪৭৬ খ্রিঃ ক্যাসটন সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে একটি প্রিন্টিং প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম মুদ্রিত ইংরেজি বই বিক্রি করেন। ইংল্যান্ডে উইলিয়াম ক্যাসটনের সঙ্গে তুলনা করে বাংলা মুদ্রন শিল্পের প্রতিষ্ঠাতা চার্লস উইলকিন্সকে "বাংলার ক্যাসটন" বলা হতো।

(৭৭.) "মজলিস্ ইত্তেহাদ উল মুসলিমিন - ভারত বিরোধী হায়দ্রাবাদের একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী সংগঠন ছিলো" মজলিস্ ইত্তেহাদ উল মুসলিমিন"। এই সংগঠনের প্রধান নেতা ছিলেন কাশিম রেজভি। এই সংগঠন হায়দ্রাবাদের ভারত ভুক্তির বিরোধিতা করেছিলো।

(৭৮.) নিজাম - হায়দ্রাবাদের নবাবকে "নিজাম" বলা হতো। নিজাম ছিলো একটি উপাধি। হায়দ্রাবাদের মুসলিম শাসকদের নিজাম নামেই ডাকা হতো।

(৭৯.) অপারেশন পোলো - ভারত ভুক্তির উদ্দেশ্যে ১৯৪৮ খ্রিঃ হায়দ্রাবাদে জেনারেল জয়ন্ত নারায়ন চৌধুরীর নেতৃত্বে যে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিলো, তার নাম দেওয়া হয়েছিলো - অপারেশন পোলো।

(৮০.) "Instrument of Accession" - ভারত ভুক্তি দলিলের নাম ছিলো Instrument of Accession।

(৮১.) রেডক্লিফ লাইন - ১৯৪৭ খ্রিঃ স্যার সিরিল রেডক্লিফের নেতৃত্বে ভারত ও পাকিস্তান গঠনের জন্য যে ভৌগলিক সীমারেখা চিহ্নিত করা হয় তা "রেডক্লিফ লাইন" নামে পরিচিত। অর্থাৎ রেডক্লিফ লাইন অনুযায়ী ভারতবর্ষ  - "ভারত" ও "পাকিস্তান" এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছিলো।

(৮২.) পুনর্বাসনের যুগ - স্বাধীনতা লাভের প্রথম পাঁচবছর ভারত সরকার পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছিলো বলে এই সময়কাল "পুনর্বাসনের যুগ" নামে পরিচিত হয়।

(৮৩.) "ন্যাশনাল কনফারেন্স"- কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ছিলো ন্যাশনাল কনফারেন্স, যার প্রধান নেতা ছিলেন শেখ আবদুল্লা।

(৮৪.) নমঃশূদ্র - পূর্ববঙ্গের নিন্মবর্গীয় কৃষিজীবী সম্প্রদায় নমঃশূদ্র নামে পরিচিত ছিলেন। এরা পূর্বে চন্ডাল নামে পরিচিত ছিলো। এই সম্প্রদায়ের নেতা শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর নমঃশূদ্রদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য তাদের নিয়ে "মতুয়া" নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

(৮৫.) বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স/অনুশীলন সমিতি/ যুগান্তর দল -  বাংলার একটি গুপ্ত বিপ্লবী সমিতি।

(৮৬.) কারলাইল সার্কুলার/লিয়ন সার্কুলার /পেডি সার্কুলার - ১৯০৫ খ্রিঃ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন থেকে ছাত্রদের দূরে রাখবার সরকারি নিষেধাজ্ঞা মূলক বিজ্ঞপ্তি। 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post