ইন্দো - পারসিক ঐতিহ্য :সংক্ষিপ্ত তথ্য


ইন্দো - পারসিক ঐতিহ্য : সংক্ষিপ্ত তথ্য
ইন্দো - পারসিক ঐতিহ্য : সংক্ষিপ্ত তথ্য 

(১.) ভারতে মুসলিম শাসনকালে আরবি ও পারসিক ধারায় এবং আরবি ও ফার্সি ভাষাতে ইতিহাস চর্চা ও বহু ঐতিহাসিক গ্রন্থ রচনার যে ধারা বা ঐতিহ্য সৃষ্টি হয়েছিলো, তাকেই এককথায় "ইন্দো পারসিক ঐতিহ্য" বলা হয়।

(২.) ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চার ধারা ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০ বছর ধরে চালু ছিলো। ভারতে সুলতানি যুগ থেকে শুরু করে মুঘল যুগ পর্যন্ত এই ইতিহাস চর্চার ধারা বজায় ছিলো। 

(৩.) অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতে ব্রিটিশ শক্তির আবির্ভাব ও ভারত শাসনের ফলে এই ইতিহাস চর্চার অবসান ঘটে।

(৪.) ভারতে একাদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত ইন্দো - পারসিক "ইতিহাস চর্চার" যে ধারা গড়ে উঠেছিলো, তার মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন -

  • (ক.) ঐতিহাসিক ঘটনার উপস্থাপনে ধারাবাহিক কালানুক্রম ও সঠিক সন তারিখের ব্যবহার।
  • (খ.) আরবি, তুর্কি ও ফার্সি ভাষাতে এই সময়কালের ইতিহাস গ্রন্থ গুলি লেখা হয়েছিলো।
  • (গ.) ভারতে ইন্দো - পারসিক ঐতিহাসিকরা ইতিহাস আলোচনাকে রাজনৈতিক ঘটনাবলী ও বিষয়বস্তুতেই সীমাবদ্ধ রাখেন।
  • (ঘ.) ইন্দো - পারসিক ধারার ইতিহাস চর্চার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এই ধারার ঐতিহাসিকরা সমস্ত ঘটনা ও কার্যক্রমকে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন এবং ব্যাখ্যা করেন।
  • (ঙ.) সমাজের উচ্চস্তরের মানুষদের কার্যকলাপকে নিয়েই এই ইতিহাস চর্চা করা হতো। একে "মনাফির" বা "ফজাইল" বলা হতো। 
(৫.) ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার মধ্যে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও দেখা যায়। যেমন - 
  • (ক.) এই সময়ের ইতিহাস গ্রন্থ গুলি নিরপেক্ষ ছিলো না। 
  • (খ.) ইতিহাসের আলোচনা শুধুমাত্র রাজনৈতিক ঘটনাক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। 
  • (গ.) সমকালীন সমাজ,অর্থনীতি,সংস্কৃতি এবং সাধারণ মানুষের কথা এই ইতিহাস চর্চায় পাওয়া যায় না। 
  • (ঘ.) সংকীর্ণ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে এই ইতিহাস চর্চা করা হতো বলে এই ইতিহাস চর্চা ছিলো অবৈজ্ঞানিক, পক্ষপাতদুষ্ট ও সাম্প্রদায়িক। 

ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম :- 

(১.) "তারিখ - ই - ফিরোজশাহী" ও "ফতোয়া - ই - জাহান্দারি" - জিয়াউদ্দিন বরনি।
(২.) "তহকিক - ই - হিন্দ" - অলবিরুনী।
(৩.) "তুঘলকনামা" ও "কিরান উস সাদাইন" - আমির খসরু (হিন্দুস্থানের তোতাপাখি)।
(৪.) "হুমায়ুননামা" - বাবরের কন্যা গুলবদন বেগম। 
(৫.) "তুজুক - ই - বাবরি" বা" বাবরনামা" - বাবর 
(৬.)আকবরনামা" ও" আইন - ই - আকবরি" - আবুল ফজল। 
(৭.) "পাদশাহনামা" - আব্দুল হামিদ লহোরি। 

মক টেস্ট 

মক টেস্ট দেওয়ার জন্য নিন্মলিখিত প্রশ্ন গুলির উত্তর দাও :-

1/15
জিয়াউদ্দিন বরনির লেখা গ্রন্থ হল
মেঘদূত
গীতগোবিন্দম্
ফতোয়া ই জাহান্দরি
ইন্ডিকা
2/15
আমির খসরু ছিলেন
সুলতানি যুগের বিখ্যাত ঐতিহাসিক
ব্রিটিশ যুগের বিখ্যাত ঐতিহাসিক
প্রাচীন যুগের বিখ্যাত ঐতিহাসিক
মোগল যুগের বিখ্যাত ঐতিহাসিক
3/15
আমির খসরু রচিত গ্রন্থটির নাম হল
তারিখ ই ফিরোজশাহী
কিরান উস সাদাইন
আকবরনামা
বাদশাহনামা
4/15
হিন্দুস্থানের তোতাপাখি বলা হয়
জিয়াউদ্দিন বরনিকে
আমির খসরুকে
আবুল ফজলকে
ইসামিকে
5/15
ফতোয়া ই জাহান্দারি গ্রন্থের লেখক হলেন
আমির খসরু
ইসামী
জিয়াউদ্দিন বরনি
আফিফ
6/15
ফজাইল হল
প্রাচীন ভারতে রাজার প্রশস্তিমূলক লিপি
শাসকের প্রবর্তিত মুদ্রা
ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চায় শাসকের প্রশস্তিমূলক গদ্য রচনা
সাল অনুসারে বিষয়বস্তুর বিন্যাস
7/15
ইতিহাসে ধারাবাহিক কালানুক্রম অনুসরন করতো
আরবরা
ভারতীয়রা
পারসিকরা
রোমানরা
8/15
পারসিক ইতিহাস চর্চার একটি বৈশিষ্ট্য হল
সন তারিখের ব্যবহার
উচ্চবর্নের মানুষদের কীর্তিকলাপ
সাধারন মানুষদের আলোচনা
পরিবেশের আলোচনা
9/15
তুলসীদাস, বিষেনদাস, সন্ধ্যাকর নন্দী, জিয়াউদ্দিন বরনি - এদের মধ্যে কে সুলতানি যুগের ঐতিহাসিক নন?
জিয়াউদ্দিন বরনি
তুলসীদাস, বিষেনদাস দাস ও সন্ধ্যাকর নন্দী
জিয়াউদ্দিন বরনি ও তুলসীদাস
জিয়াউদ্দিন বরনি ও বিষেন দাস
10/15
কোন গ্রন্থ থেকে আরবদের সিন্ধু বিজয়ের কথা জানা যায়
কিরান উস সাদাইন
চাচনামা
পাদশাহনামা
তারিখ ই ফিরোজশাহী
11/15
ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চা শুরু হয়েছিল
প্রাচীন যুগে
মধ্য যুগে
আদি মধ্য যুগে
আধুনিক যুগে
12/15
ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার একটি সীমাবদ্ধতা হল
এই ইতিহাস ছিল নিরস ও সমালোচনাহীন
এই ইতিহাস শুধুমাত্র রাজনৈতিক ঘটনাবলীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল
এই ইতিহাসে সাল তারিখের উল্লেখ ছিলো না
এই ইতিহাসের সঙ্গে ভারতের কোন যোগ ছিল না
13/15
"বাবরনামা" কার আত্মজীবনী ছিল?
বাবর
হুমায়ুন
আকবর
জাহাঙ্গীর
14/15
আরবি ধারায় রচিত একটি ইতিহাস গ্রন্থ হল
তারিখ ই ফিরোজশাহী
ফতোয়া ই জাহান্দারি
তহকিক ই হিন্দ
পাদশাহনামা
15/15
তুজুক কথার অর্থ হল
আত্মজীবনী
স্মৃতিকথা
জীবনীগ্রন্থ
উপন্যাস
Result:
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post