রৈখিক ও চক্রাকার সময়কাল |
(১.) কাল বা সময়কালের গতি প্রকৃতি কেমন, তা নিয়ে মানব সভ্যতায় দুটি ধারনা প্রচলিত আছে। একটি হল রৈখিক সময়কাল, অন্যটি হল চক্রাকার সময়কাল।
(ক.) রৈখিক কালচেতনা :-
(২.) রৈখিক কালচেতনা অনুযায়ী, কাল বা সময় অতীত থেকে বর্তমান হয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলে। অর্থাৎ রৈখিক কালচেতনা অনুযায়ী সময় সর্বদা তীরের ফলার মতো সম্মুখবর্তী হয়।
(৩.) পাশ্চাত্যের সকল ঐতিহাসিকরাই রৈখিক কালচেতনায় বিশ্বাসী।
(৪.) খ্রিস্টান, ইহুদী ও মুসলিম ধর্মে রৈখিক কালচেতনার কথা বলা ছিলো।
(৫.) রৈখিক কালচেতনায় বিশ্বাসী ঐতিহাসিকরা হলেন - লর্ড অ্যাকটন, এ এল ব্যাসাম, ই এইচ কার।
(খ.) চক্রাকার কালচেতনা :-
(৬.) চক্রাকার কালচেতনা অনুযায়ী, সময় বা কাল সর্বদা চাকার ন্যায় চক্রাকারে আবর্তিত হয়। এই কালচেতনা অনুযায়ী পৃথিবীতে একই ঘটনা, যুগ বা সময় বারে বারে ঘুরে ফিরে আসে। পুরাতন অতীতের কোন ঘটনা বর্তমানে, বা ভবিষ্যতে ফিরে আসে। ফলে অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটে।
(৭.) চক্রাকার কালচেতনা অনুযায়ী প্রতিটি পরবর্তী যুগ পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় নিকৃষ্ট। অর্থাৎ বর্তমান যুগ অতীতকালের থেকে নিকৃষ্ট ও হীনতর।
(৮.) ধ্রুপদী গ্রীক ও ভারতীয়রা চক্রাকার সময়কালের ধারনায় বিশ্বাসী ছিলেন।
(৯.) চক্রাকার কালচেতনায় বিশ্বাসী ও সমর্থক ঐতিহাসিকরা হলেন - গ্যামিস্টো ভিকো, ইবন খালদুন, রোমান ঐতিহাসিক পলিবিয়াস, আর্নল্ড টয়েনবি, থুকিডিডিস, গ্রিক দার্শনিক প্লেটো।
(১০.) চক্রাকার ও রৈখিক কালচেতনার মধ্যে রৈখিক কালচেতনাকে সবথেকে গ্রহনযোগ্য বলে ঐতিহাসিকরা মনে করে থাকেন।