মধ্য যুগের ইতিহাস রচনায় ইন্দো পারসিক ঐতিহ্য

(ক.) ভারতে মধ্য যুগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় :- 

ভারতবর্ষের ইতিহাসে ৬৫০ খ্রিঃ থেকে ১৭০৭ খ্রিঃ পর্যন্ত "মধ্য যুগ" নামে পরিচিত। এর মধ্যে ১২০৬ থেকে ১৭০৭ খ্রিঃ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর ভারতবর্ষকে শাসন করেছিলো বিভিন্ন মুসলিম শাসকগন। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন - (ক.) তুর্কি মুসলমান, (খ.) আফগানি মুসলমান ও (গ.) মোগলরা। 

(১.) ৭১২ খ্রিঃ আরবদের সিন্ধু জয়ের মধ্য দিয়ে সর্বপ্রথম ভারতে মুসলমানদের অনুপ্রবেশ ঘটে। 

(২.) আরবদের সিন্ধু জয়ের প্রায় ৩০০ বছর পর ১০০০ থেকে ১০২৭ খ্রিঃ মধ্যে গজনির সুলতান মামুদ প্রায় ১৭ বার ভারতবর্ষকে আক্রমণ ও লুন্ঠন করেন।

(৩.) মামুদের পর গজনীর ঘুর বংশের শাসক মহম্মদ ঘোরি ১১৯২ খ্রিঃ দিল্লি ও আজমিরের শাসক তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পরাজিত করে ভারতে তুর্কি অধিকৃত অঞ্চলের শাসনভার কুতুবউদ্দিন আইবক নামে তার সেনাপতি ও বিশ্বস্ত দাসের সমর্পন করে স্বদেশে ফিরে যান।

(৪.) কুতুবউদ্দিন আইবক ১২০৬ খ্রিঃ ভারতে তথাকথিত "দাসবংশ" প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ক্রমান্বয়ে ভারতে খলজি, তুঘলককে, সৈয়দ ও লোদী বংশীয় একাধিক সুলতান ভারত শাসন করেন।

(৫.) লোদী বংশের শেষ শাসক ইব্রাহিম লোদীকে ১৫২৬ খ্রিঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে পরিজিত করে বাবর ভারতে মুঘল শাসনের পত্তন করেন। 

(৬.) বাবরের পর ক্রমান্বয়ে হুমায়ুন - আকবর - জাহাঙ্গীর - শেরশাহ ও ঔরঙ্গজেব ভারতবর্ষ শাসন করেন। ১৭০৭ খ্রিঃ ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর সঙ্গে ভারতে মধ্য যুগের পরিসমাপ্তি ঘটে।

মধ্য যুগের ইতিহাস রচনায় ইন্দো পারসিক ঐতিহ্য
মধ্য যুগের ইতিহাস রচনায় ইন্দো পারসিক ঐতিহ্য 


(খ.) ইন্দো - পারসিক ঐতিহ্য :-

মধ্যযুগে মুসলিমদের আগমন এবং মুসলিমদের শাসনকাল ভারতবর্ষকে যে সমস্ত দিক থেকে প্রভাবিত করেছিলো, তার মধ্যে অন্যতম ছিলো ইতিহাস চর্চা

ভারতে মুসলিম শাসনকালে আরবি ও পারসিক ধারায় এবং আরবি ও ফার্সি ভাষাতে ইতিহাস চর্চা ও বহু ঐতিহাসিক গ্রন্থ রচনার যে ধারা বা ঐতিহ্য সৃষ্টি হয়েছিলো, তাকেই এককথায় "ইন্দো পারসিক ঐতিহ্য" বলা হয়।

(গ.) ইতিহাস চর্চায় মুসলিমদের অবদান :-

ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে মুসলমানের অবদান ও ভূমিকা ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হজরত মহম্মদের সময় থেকেই মুসলমানদের মধ্যে ইতিহাস রচনার সূত্রপাত ঘটে। ইসলাম ধর্মের অভ্যুত্থানের প্রথম যুগ থেকেই হজরত মুহম্মদ, বিভিন্ন খলিফা বা ধর্মগুরু এবং প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী রচনার ধারা শুরু হয়। প্রথম দিকের এই সব রচনা গুলি আরবি ধারায় ও ভাষায় লেখা হয়েছিলো। 

পরবর্তীকালে দশম শতকে পারস্যে ইসলামের প্রতিষ্ঠার পর মুসলিম জগতে পারসিক জাতীয়তাবাদের পুনরুজ্জীবিত ঘটে। এর ফলে তুর্কি রাজবংশ গুলি পারসিক ভাষা ও সংস্কৃতি গ্রহন করে। তুর্কি রাজবংশ গুলি পারসিক রাজতন্ত্রের আদর্শে ভারতে রাজতন্ত্রকে সাজিয়ে তোলেন। তুর্কিদের হাত ধরে মুসলিম জগতে পারসিক ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যাপক প্রসার ঘটে এবং কালক্রমে পারসিক ভাষায় ও ধারায় ইতিহাস রচনা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। ভারতে আগমনকালে মুসলমানগন এই ফার্সি ভাষায় ইতিহাস রচনার ঐতিহ্য বা ধারাকেই বহন করে নিয়ে আসেন।

(ঘ.) ভারতে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার সূচনা ও বিকাশের সময়কাল :-

ভারতে মুসলিম আক্রমণের সময়, বিশেষত গজনির সুলতান মামুদ ও মহম্মদ ঘোরির ভারত আক্রমণের সময় একদল পারসিক বুদ্ধিজীবী, লেখক ও ঐতিহাসিক ভারতে প্রবেশ করেন এবং উত্তর পশ্চিম ভারতে বসবাস শুরু করেন। এদের এদের হাত ধরেই মূলত একাদশ শতাব্দী থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে পারসিক ভাষার বিদ্যাচর্চা ও ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার সূত্রপাত ঘটে

ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চার ধারা ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০ বছর ধরে চালু ছিলো। ভারতে সুলতানি যুগ থেকে শুরু করে মুঘল যুগ পর্যন্ত এই ইতিহাস চর্চার ধারা বজায় ছিলোঅষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতে ব্রিটিশ শক্তির আবির্ভাব ও ভারত শাসনের ফলে এই ইতিহাস চর্চার অবসান ঘটে। 

(ঙ.) ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চার বৈশিষ্ট্য :- 

ভারতে একাদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত ইন্দো - পারসিক "ইতিহাস চর্চার" যে ধারা গড়ে উঠেছিলো, তার মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন - 

(১.) মধ্য যুগের ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চার মধ্যে পারসিক এবং আরবি ইতিহাস চর্চার ধারা বা রীতির বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। 

(২.) আরবের ইতিহাস চর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ধারাবাহিক কালানুক্রম ও সঠিক সন - তারিখের ব্যবহার। এটি ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চাতেও দেখা যায়। "তারিখ" একটি আরবি শব্দ, যার আক্ষরিক অর্থ হলো Date বা দিনপঞ্জী, কালানুক্রম, ও যুগ। বৃহত্তর অর্থে তারিখ শব্দটি ইতিহাস কথাটিকেই প্রতিফলিত করে। মধ্য যুগে একাধিক গ্রন্থ তোয়ারিখ বা তারিখ নামে রচিত হয়েছিলো। যেমন - 

  • জিয়াউদ্দিন বরনির - "তারিখ - ই - ফিরোজশাহি
  • মির মহম্মদ মাসুমের - "তারিখ - ই - সিন্ধ
  • হুসেন আল বাকির - "তারিখ - ই-মাসুদ" 
  • ইয়াহিয়া - বিন - শিরহিন্দি রচিত - "তারিখ - ই - মুবারকশাহি
  • আব্বাস শেরওয়ানির - "তারিখ - ই - শেরশাহি
  • আবদুল্লার - "তারিখ - ই - দাউদি
  • বদায়ুনির - "মুন্তাখাব - উৎ - তোয়ারিখ
  • আহমদ ইয়াদসারের -" তারিখ - ই - শাহি/তারিখ - ই - আফগান
  • ফেরিস্তার - "তোয়ারিখ - ই - ফেরিস্তা" ইত্যাদি।
(৩.) ভারতে ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চায় ইতিহাস গ্রন্থ গুলি ৩ টি ভাষায় রচিত হয়েছিলো। যথা - (ক.) আরবি ভাষা, (খ.) তুর্কি ভাষা ও (গ.) ফার্সি ভাষা। সুলতানি ও মুঘল যুগে ফার্সি ছিলো দরবারি বা সরকারি ভাষা। তাই এইসময়ের বেশিরভাগ ইতিহাস গ্রন্থ ফার্সি ভাষাতেই লেখা হয়েছিলো। 

(৪.) আরবি ইতিহাস চর্চার ধারা ও আলোচনার পরিধি ছিলো অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। আরবীয় ইতিহাস চর্চায় রাজনৈতিক ঘটনাবলীর পাশাপাশি সমকালীন সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিও ইতিহাসের বিষয়বস্তু হিসাবে গুরুত্ব পেতো এবং আলোচিত হতো। ভারতে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার প্রথম দিকে এই আরবী ধারায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থ লেখা হয়েছিলো। 
  • আরবি ভাষায় লেখা আবু রিহান ওরফে অলবেরুনীর "কিতাব - উল - হিন্দ" বা "তহকিক - ই - হিন্দ" ছিলো এমনই একটি গ্রন্থ। সুলতান মামুদের ভারত আক্রমণের সময় অলবেরুনী ভারতে আসেন। তার গ্রন্থ থেকে একাদশ শতকে ভারতের জ্ঞান - বিজ্ঞান, সমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। 
  • আরবি ভাষায় লেখা আরেকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ছিলো -" চাচনামা"।মূল গ্রন্থটির লেখকের নাম জানা যায় না। পরবর্তীকালে এই গ্রন্থটি ফার্সিতে অনুবাদ করেন মহম্মদ আলি কুফি। আরবদের সিন্ধু বিজয়ের ইতিহাস এই গ্রন্থ থেকে পাওয়া যায়। 
  • আরবি ভাষায় লেখা অন্যান্য গ্রন্থ গুলির মধ্যে ছিলো - মহম্মদ উৎবির - "কিতাব - উল - ইয়ামিনি", হুসেন আল বাকির - "তারিখ - ই-মাসুদি"। 
(৫.) ভারতে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চায় শুরুর দিকে ইতিহাসের আলোচ্য বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে আরবীয় ধারা অনুসৃত হলেও, পরে পারসিক ধারা অনুসৃত হয়। পারসিক লেখকরা শাসক শ্রেণীর কার্যকলাপের মধ্যেই ইতিহাস চর্চাকে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত বলে মনে করতেন। ফলে ভারতে ইন্দো - পারসিক ঐতিহাসিকরা ইতিহাস আলোচনাকে রাজনৈতিক ঘটনাবলী ও বিষয়বস্তুতেই সীমাবদ্ধ রাখেন। 

(৬.) পারসিক ঐতিহাসিকরা ভারতে বিভিন্ন রাজদরবারের সমর্থনপুষ্ট ছিলেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার বিষয়বস্তু ছিলো সুলতান, অভিজাত ও আমির ওমরাহদের কার্যকলাপ। এদের মহানুভবতা ও গুনকীর্তন করাই ছিলো এই ইতিহাস চর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য বিষয়। উপরতলার মানুষদের নিয়ে রচিত এই ইতিহাস চর্চার ধারাকে বলা হয় "মনাফির" বা "ফজাইল"। আমির খসরু, জিয়াউদ্দিন বরনী, ইয়াহিয়া বিন আহম্মদ, সিরাজ আফিফ প্রমুখের রচনা এই ফজাইল ধারারই অনুসারী ছিলো। 

সুলতানি যুগে ফার্সি ভাষায় রচিত ফজাইল ধারার এরকম কয়েকটি ইতিহাস গ্রন্থ ছিল - 
  • হাসান নিজামির - "তাজ - উল - মাসির", 
  • মিনহাজ - উস - সিরাজের - "তবকাত - ই নাসিরি
  • জিয়াউদ্দিন বরনীর - "তারিখ - ই-ফিরোজশাহী" ও "ফতোয়া ই জাহান্দারি", 
  • হিন্দুস্থানের তোতাপাখি (তুতিয়ানে হিন্দ) খ্যাত আমির খসরুর -" তুঘলকনামা" ।
অন্যদিকে মুঘল যুগে রচিত দরবারি ইতিহাস গ্রন্থ গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল - 
  • আব্দুল হামিদ লহোরির - "পাদশাহনামা", 
  • এনায়েৎ খাঁর - "শাহজাহাননামা", 
  • কাফি খাঁর -" মুন্তাখাব উল লুবাব", 
  • ভীমসেনের - "নকস ই দিলখুসা", 
  • মহম্মদ সাকির - "মাসিরে উল আলমগিরি", 
  • আবুল ফজলের - "আকবরনামা" ও "আইন ই আকবরি"। 
  
(৭.) ইন্দো - পারসিক ধারার ইতিহাস চর্চার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এই ধারার ঐতিহাসিকরা সমস্ত ঘটনা ও কার্যক্রমকে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতেন ও ব্যাখ্যা করতেন। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতেই এই সময়ের ইতিহাস রচয়িতারা মুসলিম শাসকদের এবং তাদের বিভিন্ন কার্যাবলীকে বিচার বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করতেন। 

(৮.) সবশেষে বলা যায়, ভারতে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চা বিভিন্ন ধারায় বিকশিত হয়েছিলো। এইসব ধারার মধ্যে অন্যতম ছিল - 
  • আত্মজীবনীমূলক রচনা ( বাবরের তুর্কি ভাষায় লেখা আত্মজীবনী - "তুজুক ই বাবরি", জাহাঙ্গিরের - "তুজুক - ই ইজাহাঙ্গিরি" ।(তুজুক কথার অর্থ - স্মৃতিকথা)। বাবরের কন্যা গুলবদন বেগমের - "হুমায়ুননামা"
  • কাব্য
  • নীতিশাস্ত্র
  • প্রশাসনিক বিবরন
  • কথোপকথন
  • উপদেশমূলক সাহিত্য
  • সুফিসাধকদের জীবনী
  • রাজনৈতিক ইতিহাস। 

(চ.) ইন্দো - পারসিক ইতিহাস চর্চার ক্রুটি ও সীমাবদ্ধতা :- 


মধ্য যুগে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার বেশ কিছু ক্রুটি ও সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। যেমন - 

(১.) এই সময়ের ইতিহাস গ্রন্থ গুলি রাজ আনুকুল্যে রচিত হওয়ায় এগুলি নিরপেক্ষ ছিলো না। 

(২.) সুলতানদের গুনকীর্তন করা বা তাকে মহিমান্বিত করার উদ্দেশ্যেই এই গ্রন্থ গুলি রচনা করা হয়েছিলো।আমির খসরু নিজেই লিখেছিলেন রাজ আদেশ পালনের জন্যই তিনি কিরান উস সাদাইন রচনা করেছেন। 

(৩.) এই ইতিহাস চর্চা সুলতান বা বাদশার দরবার, যুদ্ধ বিগ্রহ, রাজ্য বিস্তার, প্রশাসন পরিচালনা ইত্যাদি রাজনৈতিক ঘটনাবলী ও আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। 

(৪.) সমকালীন সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি অথবা সাধারণ মানুষের কথা এই ইতিহাস চর্চায় পাওয়া যায় না। 

(৫.) এই সময়কালের ঐতিহাসিকরা ধর্মীয় সংকীর্ণতা ও অসহিষ্ণুতায় আচ্ছন্ন ছিলেন। তারা  সুলতান বা ইতিহাসের সমস্ত ঘটনাবলীকে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছিলেন ও মূল্যায়ন করেছিলেন। ফলে তারা নিরপেক্ষ মূল্যায়ন ও ইতিহাস রচনা করতেও পারেন নি। 

(ছ.) শেষকথা :- 

তবে এই ক্রুটি সত্ত্বেও, ভারতে ইতিহাস চর্চায় ইন্দো - পারসিক ঐতিহ্যের ধারাকে কখনই উপেক্ষা করা উচিত হবে না। মাথায় রাখতে হবে, ভারতে যথার্থ লিখিত ইতিহাস চর্চার সূত্রপাত মুসলিম ঐতিহাসিকদের হাত ধরেই শুরু হয়েছিলো। এক্ষেত্রে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার অবদান ও গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ডডওয়েল তাই বলেছেন, মুসলিমদের আগমনের ফলেই ভারতে সমৃদ্ধ লিখিত বিবরনের অধ্যায় শুরু হয়েছিলো। তিনি আরোও বলেন, ভারতে মুসলিম লেখকদের রচনাগুলি মধ্য যুগের ইওরোপীয় ঐতিহাসিকদের থেকেও অনেক বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ ছিলো। 

স্যার যদুনাথ সরকার তাই যথার্থই বলেছেন, "ভারতীয় সংস্কৃতিতে মুসলিম ইতিহাস চর্চা ছিলো পারসিক ভাবধারাযুক্ত তুর্কিদের একটি মহান উপহার" । ভারতে ইন্দো পারসিক ইতিহাস চর্চার অসংখ্য পান্ডুলিপি ভারতের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত করে রাখা আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি, চেন্নাইয়ের গভর্নমেন্ট ওরিয়েন্টাল ম্যানুস্ক্রিপ্টস লাইব্রেরি। 

  

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post