সাহিত্যিক উপাদানের সংক্ষিপ্ত পরিচয় |
(ক.) সাহিত্যিক উপাদানের শ্রেনী বিভাগ:-
(১.) প্রাচীন ভারতে ইতিহাসের কোন মৌলিক গ্রন্থ পাওয়া যায় নি। তাই প্রাচীন যুগের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে সেযুগে রচিত বিভিন্ন "সাহিত্যিক উপাদানের" ওপর ঐতিহাসিকদের নির্ভর করতে হয়।
(২.) প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন বিষয় ও বিষয়বস্তুকে অবলম্বন করে লেখা গ্রন্থ গুলিকেই একত্রে ইতিহাসের "সাহিত্যিক উপাদান" বলা হয়।
(৩.) প্রাচীন ভারতে সাহিত্যিক উপাদানের সংখ্যা অনেক। এই বিশাল সংখ্যক সাহিত্যকে তার বিষয়বস্তু ও রচনার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন -
(ক.) দেশীয় সাহিত্য ও (খ.) বিদেশীয় সাহিত্য।
(ক.) দেশীয় সাহিত্যকে - ধর্মীয় সাহিত্য, ধর্ম নিরপেক্ষ সাহিত্য, আঞ্চলিক সাহিত্য, চরিত সাহিত্য এবং জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্য ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়।
এর মধ্যে ধর্মীয় সাহিত্যকে আবার - বৈদিক সাহিত্য, মহাকাব্য, পুরান ও ধর্মশাস্ত্র ইত্যাদি উপভাগে ভাগ করা হয়।
(খ.) বিদেশী সাহিত্যকে - গ্রীক ও রোমান বিবরনী, চৈনিক বিবরনী, আরবীয় বিবরনী ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়।
সাহিত্যিক উপাদানের বিভিন্ন ভাগ |
(খ.) সাহিত্যিক উপাদান ব্যবহারের ক্ষেত্রে কি কি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়?
সাহিত্য ও ইতিহাসের মধ্যে বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। সাহিত্য রচনার সময় সাহিত্যিক অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করেন। অনেক সময় তিনি কল্পনারও আশ্রয় নেন। কিন্তু ঐতিহাসিক ইতিহাস রচনার সময় কোনও কল্পনার আশ্রয় নেন না এবং অবাধ স্বাধীনতাও ভোগ করেন না।
ইতিহাস হলো বাস্তব ঘটনার বিবরনী। অতীতের সত্য ঘটনাকে তুলে ধরা ও তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষন করাই হলো ঐতিহাসিকের প্রধান কাজ। তাই সাহিত্যকে ইতিহাসের উপাদান হিসাবে ব্যবহার করার সময় ঐতিহাসিককে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন -
(১.) সাহিত্যিক উপাদানে অনেক ঘটনাই কাল্পনিক ও অতিরঞ্জিত আকারে তুলে ধরা হয়। তাই সাহিত্যিক উপাদানের তথ্যকে তার সহযোগী অন্যান্য সাহিত্যিক উপাদান এবং প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের সঙ্গে মিলিয়ে সত্যতা যাচাই করতে হয়।
(২.) অনেক সময় প্রক্ষিপ্ত আকারে কোন রচনা বা লেখা সাহিত্য গ্রন্থে পরবর্তীকালে জুড়ে দেওয়া হয়। এটি সম্পর্কেও ঐতিহাসিককে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। উদাহরন হিসাবে ঋকবেদের পুরুষসুক্তের কথা আমরা উল্লেখ করতে পারি। এটিতে জাতিভেদের উৎপত্তির ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছিলো। পরবর্তী বৈদিক যুগে পুরুষসুক্তের অংশটি লিখে ঋকবেদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিলো।
(৩.) ঐতিহাসিকের মতো নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সাহিত্যিক সাহিত্য রচনা করেন না। তাই তথ্য সংগ্রহের সময় এদিকেও ঐতিহাসিককে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
(গ.) সাহিত্যের প্রাচীন পান্ডুলিপি :-
(১.) প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে প্রাচীন পান্ডুলিপি গুলির গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম।
(২.) মাথায় রাখতে হবে, ভারতের মূল সাহিত্যিক গ্রন্থ গুলি পান্ডুলিপি আকারেই পাওয়া গিয়েছিলো। যেমন ১৯০৫ খ্রিঃ পন্ডিত শ্যামশাস্ত্রী মহিশূরের ওরিয়েন্টাল লাইব্রেরি থেকে অর্থশাস্ত্রের গ্রন্থটি আবিষ্কার করেন। পুঁথিটি সংস্কৃত ভাষায় তালপাতায় লেখা ছিলো। একই ভাবে ১৯০৭ খ্রিঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ গ্রন্থাগার থেকে তালপাতায় লেখা চর্যাপদের পুঁথি আবিষ্কার করেন।
(৩.) ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রাচীন সাহিত্য গ্রন্থ গুলির পান্ডুলিপি পাওয়া গেলেও, বেশিরভাগ গ্রন্থের পান্ডুলিপিই পাওয়া গেছে নেপাল, কাশ্মীর ও দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন গ্রন্থাগার গুলি থেকে।
(৪.) ভারত বিষয়ক সর্বপ্রাচীন লিখিত পান্ডুলিপির নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে মধ্য এশিয়া অঞ্চল থেকে। ভেড়ার চামড়ার ওপর লেখার কারনে এবং মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়ার কারনে মধ্য এশিয়ার পুঁথিগুলি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিলো।
(৫.) বিশ শতকের প্রথমদিকে স্যার অরেল স্টাইন মধ্য এশিয়ার খোটান ও তার কাছাকাছি অঞ্চলে খননকার্যের মাধ্যমে দেড় হাজার বছরের ভারত সংক্রান্ত পুরাতন বহু পুঁথিপত্র ও দলিল দস্তাবেজ আবিষ্কার করেন। এই পুঁথিগুলি বালির স্তুপের নীচে চাপা দেওয়া ছিলো।
(ঘ.) বিভিন্ন সাহিত্যিক গ্রন্থ গুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় :-
ভারত ইতিহাসের সাহিত্যিক উপাদানকে দুটি মূল ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :-
(অ.) দেশীয় সাহিত্য
(আ.) বিদেশীয় সাহিত্য।
(অ.) দেশীয় সাহিত্য :-
দেশীয় সাহিত্যকে আলোচ্য বিষয়বস্তু ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা -
- ধর্মীয় সাহিত্য
- ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য
- আঞ্চলিক সাহিত্য
- চরিত সাহিত্য
- জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্য।
(1.) ধর্মীয় সাহিত্যের পরিচয় :-
- (১.) বৈদিক সাহিত্য
- (২.) মহাকাব্য
- (৩.) পুরান
- (৪.) ধর্মশাস্ত্র ও স্মৃতিশাস্ত্র।
ধর্মীয় সাহিত্যের বিভিন্ন ভাগ |
(১.) বৈদিক সাহিত্য :-
(ক.) বেদ :-
- (ক.) ঋকবেদে দেবতাদের মূল মন্ত্র বা শ্লোক গুলি লেখা ছিলো।
- (খ.) মন্ত্র বা শ্লোক গুলি কিভাবে সুর দিয়ে পড়া হবে, তা লেখা ছিলো সামবেদে।
- (গ.) যজুর্বেদে ধর্মীয় যাগযজ্ঞের বিধান ও অনুষ্ঠানে পুরোহিতের কর্তব্যকর্ম ও আচরনবিধির উল্লেখ আছে।
- (ঘ.) সর্বশেষ অথর্ব বেদে জাদু বিদ্যা, রোগব্যাধি ও অশুভ শক্তি থেকে মুক্তির মন্ত্র গুলি আলোচনা করা ছিলো।
(খ.) বেদাঙ্গ ও ষড়দর্শন :-
(২.) মহাকাব্য :-
বিভিন্ন মহাকাব্যের নাম :-
(৩.) পুরান :-
(ক.) ভারত :-
(খ.) বিদেশ :-
(৪.) ধর্মশাস্ত্র ও স্মৃতিশাস্ত্র :-
(ক.) বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ :-
(খ.) বৌদ্ধ ও জৈন সাহিত্য :-
- "ত্রিপিটক"
- "জাতক"
- অশ্বঘোষের লেখা - "বুদ্ধচরিত", "সৌন্দরানন্দ কাব্য", "সারিপুত্রপ্রকরন"
- সিংহলি গ্রন্থ - "দীপবংশ" ও "মহাবংশ"
- "অঙ্গুত্তরনিকায়"
- গ্রীক রাজা মিনান্দার ও বৌদ্ধপন্ডিত নাগসেনের প্রশ্নোত্তর ভিত্তিক গ্রন্থ - "মিলিন্দপঞহো" ।
- নাগার্জুন রচিত - "শতসহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা" ও "মাধ্যমিকসূত্র"।
- "দ্বাদশ অঙ্গ"
- "ভাগবতীসূত্ত"
- হেমচন্দ্র রচিত -" পরিশিষ্ট পার্বন"
- ভদ্রবাহু রচিত - "কল্পসূত্র"।
(গ.) স্মৃতিশাস্ত্র :-
- নারদস্মৃতি
- যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি
- কাত্যায়ন স্মৃতি
- দেবল স্মৃতি
- মনুস্মৃতি
- বৃহস্পতি স্মৃতি
- নারদ স্মৃতি
(2.) ধর্ম নিরপেক্ষ সাহিত্যের পরিচয়
- পানিনির লেখা - "অষ্টাধ্যায়ী"
- পতঞ্জলির লেখা - "মহাভাষ্য"
- কৌটিল্যের লেখা - "অর্থশাস্ত্র"
- কামন্দকের লেখা - "নীতিসার"
- বাৎস্যায়নের লেখা - "কামসূত্র"
- কালিদাসের লেখা - "অভিজ্ঞান শকুন্তলাম্" , "রঘুবংশম", "মালকাগ্নিমিত্রম", "মেঘদূতম" নাটক।
- বিশাখদত্তের লেখা - "মুদ্রা রাক্ষস" ও" দেবীচন্দ্রগুপ্তম" নাটক।
- শূদ্রকের লেখা - "মৃচ্ছকটিক" নাটক
- ভারবির লেখা - "কিরাতার্জুনীয়ম"
- ভরতমুনির - "নাট্যশাস্ত্র"
- ভাস রচিত - "চারুদত্ত" ও "স্বপ্নবাসবদত্তা"
- অমরসিংহের -" অমরকোষ"
- হর্ষবর্ধন রচিত -" প্রিয়দর্শিকা", "রত্নাবলী" ও "নাগানন্দ" ।
(3.) আঞ্চলিক সাহিত্যের পরিচয়
কাশ্মীর :-
- কলহন রচিত "রাজতরঙ্গিনী" গ্রন্থ।
- খ্রিঃ সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকের কাশ্মীরের ইতিহাস এখানে আলোচনা করা হয়েছিলো।
- রাজতরঙ্গিনী হলো প্রাচীন ভারতের একমাত্র ইতিহাস গ্রন্থ।
গুজরাট :-
- সোমেশ্বর রচিত - "রাসমালা" ও "কীর্তিকৌমুদি",
- অরিসিংহের - "সুকৃতিসংকীর্তন"
- মেরুতঙ্গের - "প্রবন্ধ চিন্তামনি"।
(4.) চরিত সাহিত্যের পরিচয়
- হর্ষবর্ধনের সভাকবি বানভট্টের লেখা - "হর্ষচরিত",
- চালুক্যরাজ ষষ্ঠ বিক্রমাদিত্যের সভাকবি বিলহনের লেখা - "বিক্রমাঙ্কদেবচরিত",
- পালরাজা রামপালের কৃতিত্ব সম্বন্ধীয় সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখা - "রামচরিত",
- জয়সিংহের - "কুমার পাল চরিত"
- পদ্মগুপ্তের - "নবসাহসাঙ্কচরিত",
- বাকপতিরাজের - "গৌড়বাহ কাব্য"।
(5.) জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্যের পরিচয়
- আর্যভট্ট রচিত - "আর্যভট্টীয়", "দশগীতিকাসূত্র" ও "আর্যষ্টিশত গ্রন্থ",
- বরাহমিহিরের লেখা - "বৃহৎ সংহিতা" ও "পঞ্চসিদ্ধান্তিকা" ।
- ব্রহ্মগুপ্ত রচিত - "ব্রহ্মসিদ্ধান্ত", "খন্ডখাদ্য" এবং "ধান্যগ্রহ",
- চিকিৎসা বিদ্যা সংক্রান্ত গ্রন্থ - চরকের লেখা "চরকসংহিতা" ও সুশ্রুতের লেখা "সুশ্রুত সংহিতা"।
- নাগার্জুনের - "মাধ্যমিক সূত্র",
- চক্রপানি দত্তের লেখা - "চিকিৎসা সংগ্রহ" ও" শব্দ চন্দ্রিকা"।
(আ.)বৈদেশিক সাহিত্য :-
- গ্রীক ও রোমান বিবরনী
- চৈনিক বিবরনী
- আরবীয় বিবরনী।
(i.) গ্রীক ও রোমান বিবরনী :-
- গ্রীক দূত মেগাস্থিনিসের লেখা - "ইন্ডিকা",
- প্লিনির - "ন্যাচারাল হিস্ট্রি",
- টলেমির - "জিওগ্রাফি",
- জনৈক লেখকের - "পেরিপ্লাস অব দ্য ইরিথ্রিয়ান সি"।
(ii.) চৈনিক বিবরনী :-
- সু - মা - তিয়েন রচিত - "সি - কি"।
- দ্বিতীয় চন্দ্র গুপ্তের আমলে আগত ফা - হিয়েনের (ফাসিয়ানের) গ্রন্থ - "ফো - কুয়ো - কি"।
- হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে আগত হিউয়েন সাঙ (সুয়ান জাং) রচিত গ্রন্থ - "সি ইউ কি"।
- চিনা পর্যটক ইৎ সিং এর গ্রন্থ - "কাউ - ফা - কাং - সাং-চুয়েন" ।
- তিব্বতীয় ঐতিহাসিক লামা তারানাথের - "ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের জন্ম"।
(iii.) আরবীয় বিবরনী :-
(iv.) বৈদেশিকদের বিবরনীর সীমাবদ্ধতা :-
(ঙ.) ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সাহিত্যিক উপাদান কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?
- (ক.) ভারতের পুরান গ্রন্থ গুলি হর্যঙ্ক বংশ, শৈশুনাগ বংশ, মৌর্য বংশ, কান্ববংশ সাতবাহন ও গুপ্ত রাজবংশ এবং তাদের কার্যাবলী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারাবাহিক তথ্য প্রদান করে।
- (খ.) বিশাখদত্তের "দেবীচন্দ্রগুপ্তম" ও "নাট্যদর্পন" গ্রন্থ থেকেই একমাত্র জানা যায়, সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের মাঝে সমুদ্র গুপ্তের জেষ্ঠপুত্র রামগুপ্ত কিছুকাল সিংহাসনে বসেছিলেন।
- (গ.) কালিদাসের "মালকাগ্নিমিত্রম" নাটক থেকে শুঙ্গ বংশীয় রাজা অগ্নিমিত্রের জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
- (ঘ.) বৈদিক যুগের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান অপেক্ষা বৈদিক সাহিত্যিক উপাদানই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।
- (ঙ.) মৌর্য যুগের ইতিহাস রচনায় "অর্থশাস্ত্র" গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।সমগ্র প্রাচীন যুগে অর্থশাস্ত্রই ছিলো একমাত্র রাজনীতি বিষয়ক গ্রন্থ।
- (চ.) প্রাচীন ভারতের চরিত সাহিত্য গুলিতে বিভিন্ন রাজার সামগ্রিক কর্মকান্ড ও কৃতিত্বকে তুলে ধরা হয়েছিলো। এগুলিতে অতিরঞ্জন ছিলো ঠিকই, কিন্তু এই কাহিনী গুলি যে সত্য ছিলো তার বহু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমান পাওয়া গেছে।
- (ক.) বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে মৌর্য যুগ, গুপ্ত যুগ ও আদি মধ্য যুগে ভারতে জাতিভেদ প্রথা, বর্নভেদ প্রথা, বিভিন্ন শ্রেণীর সামাজিক অবস্থান কেমন ছিলো তা জানতে বিভিন্ন সাহিত্যিক উপাদান গুলি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে। একমাত্র সাহিত্যিক উপাদানের সাহায্যেই প্রাচীন ভারতের সামাজিক ইতিহাস লেখা সম্ভব হয়েছে।
- (খ.) ভারতে গৌতম বুদ্ধের জীবনী, বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রভাবের দিকগুলি একমাত্র সাহিত্যিক উপাদান থেকেই জানা সম্ভব হয়েছে।
- (গ.) বাংলা ভাষার আদি রূপ ও বিবর্তনের কথা চর্যাপদের পুঁথি আবিষ্কারের পরেই জানা সম্ভব হয়েছে। এগুলি থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সাহিত্যিক উপাদানের মূল্য কতখানি।
- খ্রিঃ প্রথম শতকে লেখা জনৈক লেখকের "পেরিপ্লাস অব দ্য ইরিথ্রিয়ান সি" গ্রন্থ থেকে ভারতের উপকূলীয় বন্দর, ভারত রোম বানিজ্য সম্পর্কে যে মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়, তার গুরুত্বকে তুলে ধরার জন্য ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বইটিকে সোনা দিয়ে ওজন করা যায়। এই গ্রন্থ না পেলে ভারতের বৈদেশিক বানিজ্য, বন্দরের বহু দিক অজানাই থেকে যেতো।