ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন

১৯৩৯ খ্রিঃ ৩ রা সেপ্টেম্বর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তার আঁচ ভারতেও এসে পড়ে। ভারতের রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনরকম আলাপ আলোচনা না করেই ব্রিটেন ভারতকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলে। ভারত থেকে যুদ্ধের অজুহাতে ব্রিটেন নানা অর্থ, রসদ ও সেনা সংগ্রহ করতে শুরু করে। এর প্রতিবাদে ১৯৩৭ খ্রিঃ প্রাদেশিক নির্বাচনে জয়লাভ করা কংগ্রেস সরকার গুলি পদত্যাগ করে। এর ফলে ভারতে বিরাট উত্তেজনা দেখা যায়।

১৯৩৯ খ্রিঃ ২ রা অক্টোবর, বোম্বের প্রায় নব্বই হাজার শ্রমিক যুদ্ধ বিরোধী ধর্মঘট পালন করেন। ঐতিহাসিক রজনীপাম দত্ত এই ধর্মঘটকে বিশ্বের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধ বিরোধী ধর্মঘট বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি মারাত্মক আকার ধারন করে। যুদ্ধের আবহে ব্যবসা বাণিজ্য মারা খায়। ফলে কলকারখানায় উৎপাদনের হারও অনেক কমে যায়। এর ফল সরাসরি শ্রমিক শ্রেণীর ওপর এসে পড়ে।

ইতিমধ্যে ক্রিপশ মিশনের ব্যর্থতা দেশবাসীকে প্রবল হতাশ করে তোলে। ভারতের পূর্ব সীমান্তে জাপানের অভূতপূর্ব উত্থান ও আগ্রাসন ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে আরোও জটিল করে তোলে। এই কঠিন সময়ে দেশবাসীর প্রবল হতাশা ও যুদ্ধজনিত ক্ষোভকে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে চালিয়ে দেওয়ার জন্য গান্ধীজির নেতৃত্বে ১৯৪২ খ্রিঃ ৮ ই আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়

ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরুর আগেই অবশ্য গান্ধিজী সহ কংগ্রেসের প্রথম সারির সমস্ত নেতাদের গ্রেপ্তার করে নেওয়া হয়। এর ফলে প্রধান নেতৃত্বের কোনরূপ নিয়ন্ত্রন ছাড়াই জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে গন আন্দোলন শুরু করে। এই গন আন্দোলনে বিভিন্ন শ্রেণীর পাশাপাশি শ্রমিক শ্রেণীও অংশগ্রহণ করে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন
ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন 

(ক.) শ্রমিক শ্রেণীর অংশগ্রহণের বৈশিষ্ট্য :-

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের ধরন ও প্রকৃতির মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন - 

(১.) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রথম দিকে শ্রমিক শ্রেণী আন্দোলনে সামিল হলেও, তাদের ভূমিকা ছিলো অল্পমেয়াদিসীমিত
(২.) ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের ধরন সম্পূর্ন ভাবে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বের অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল ছিলো
(৩.) ১৯৪১ খ্রিঃ রুশ - জার্মান অনাক্রমন চুক্তি একতরফা ভাবে ভেঙে দিয়ে হিটলার রাশিয়া আক্রমণ করলে,সোভিয়েত রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র পক্ষে যোগদান করে। ফলে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি রাশিয়ার সমাজতন্ত্রকে রক্ষার জন্য অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে মিত্রশক্তির যুদ্ধকে "জনযুদ্ধ" বলে অভিহিত করে এবং  ব্রিটেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে
(৪.) ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হলে কমিউনিস্ট পার্টি এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকে। এমনকি শ্রমিক শ্রেনীকেও আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করার এবং উৎপাদনের কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানায়।
(৫.) ভারতের শ্রমিক শ্রেণীর ওপর কমিউনিস্টদের ব্যাপক সাংগঠনিক প্রভাব থাকায় ভারত ছাড়ো আন্দোলনে দেখা যায় কমিউনিস্ট প্রভাবিত এলাকায় ধর্মঘটি শ্রমিকদের সংখ্যা ছিলো অনেক কম
(৬.) কমিউনিস্ট বলয়ের বাইরের এলাকা গুলিতে গান্ধীজি এবং জাতীয় কংগ্রেসের প্রভাবেই শ্রমিকরা আন্দোলন ও ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছিলো। 
(৭.) প্রবল দেশাত্মবোধ ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রভাবেই শ্রমিক শ্রেণী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।
(৮.) মজুরি বৃদ্ধির মতো কোন অর্থনৈতিক দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে এই পর্বে কোন শ্রমিক আন্দোলন সংগঠিত হয় নি।
(৯.) ভারত ছাড়ো পর্বের পুরো সময়কাল জুড়ে শ্রমিক আন্দোলন হয় নি। শ্রমিক আন্দোলন শুধুমাত্র  প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই দেখা গিয়েছিলো। 

(খ.) শ্রমিক আন্দোলনের পরিচয় :-

সুমিত সরকারের মতে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনাপর্বে এর মূল ভরকেন্দ্র ছিলো বড়ো বড়ো শহর গুলি। গোড়ার দিকে আন্দোলন শুরু হয় বোম্বাই, কলকাতা, দিল্লি, পাটনা, নাগপুর, আমেদাবাদ, জামসেদপুর প্রভৃতি বড়ো শহরাঞ্চলে।

 লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, ব্রিটিশ আমলে ভারতের ছোট বড়ো কলকারখানা গুলির সবকটিই এইসব বৃহৎ শহরাঞ্চল গুলিতে অবস্থিত ছিলো। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গোড়ার দিকে তাই শহরাঞ্চলের গন আন্দোলনের সঙ্গে তাল রেখে শ্রমিক আন্দোলনও সংগঠিত হয়। আগস্ট আন্দোলনের প্রথম পর্বেই শ্রমিকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলো। এই সময় আমেদাবাদের, জামসেদপুর, বোম্বাই ও পুনার শ্রমিকরা সক্রিয় ভাবে ধর্মঘটে সামিল হয়। 

বলা বাহুল্য, ১৯৪২ খ্রিঃ ৮ ই আগস্ট কংগ্রেসের ভারত ছাড়ো প্রস্তাব গ্রহণের দিন ভোররাতে গান্ধীজি সহ কংগ্রেসের প্রথম সারির সব কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলে ৯ ই আগস্ট স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। 

কংগ্রেসের নেতৃত্বের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দিল্লি, লক্ষ্মৌ, কানপুর, বোম্বের, নাগপুর, আমেদাবাদ, জামসেদপুর, ব্যাঙ্গালোর ও মাদ্রাজের শ্রমজীবী মানুষ এক সপ্তাহ ব্যাপী ধর্মঘট ও হরতাল পালন করেন। 

এই সব স্থানের শ্রমিক আন্দোলনের রূপটি আমরা সংক্ষেপে নিন্মলিখিত ভাবে তুলে ধরতে পারি - 

(১.) দিল্লি :- 

ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হলে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী শহর দিল্লি উত্তাল হয়ে উঠেছিলো। ১২ আগস্ট আমেরিকে লিনলিথগো লেখেন - দিল্লি উত্তাল হয়ে ওঠার জন্য দায়ী মূলত ঘর্মঘটী মিল শ্রমিকরা। তার এই উক্তি থেকেই বুঝে নেওয়া যায়, দিল্লিতে শ্রমিক আন্দোলনের তীব্রতা ঠিক কতখানি ছিলো। 

(২.) বোম্বাই :- 

৯ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বোম্বাইয়ে ভারত ছাড়ো আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছিলো। গান্ধীজি সহ জাতীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ৯ ই আগস্ট থেকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বোম্বাইয়ের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে ধর্মঘট করেন। 

যদিও অরবিন্দ সহায়ের মতে, বোম্বাইয়ে ধর্মঘটী শ্রমিকদের মধ্যে সুতোকল শ্রমিকদের অংশগ্রহণ ছিলো খুবই অল্প ও সীমিত। এর প্রধান কারন ছিলো এখানে শ্রমিকদের ওপর কমিউনিস্টদের প্রভাব। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এখানে শ্রমিক আন্দোলনের রাশ অনেকটাই টেনে রেখেছিলো কমিউনিস্টদের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরোধিতা। 

(৩.) পুনা :-

পুনাতে ভারত ছাড়ো আন্দোলন এত ভয়াবহ আকার ধারন করেছিলো যে চারদিন ধরে সেখানে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে আন্দোলন দমন করা হয়েছিলো। পুনাতে গন আন্দোলন শুরু হলে শ্রমিক শ্রেণী তাতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং কয়েকমাস ধরে ধর্মঘট চালিয়ে যায়। 

(৪.) গুজরাট :- 

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছিলো গুজরাটের আমেদাবাদ শিল্পাঞ্চলে। এই অঞ্চলটি গান্ধী প্রভাব বলয়ের অর্ন্তগত ছিলো। এখানে কমিউনিস্টদের কোন প্রভাব ছিলো না। 

আমেদাবাদের শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রন করতো গান্ধীর "মজদুর মহাজন" নামক সংগঠনটি। এই সংগঠনটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারনেই এই সময় ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সমর্থনে শ্রমিক ধর্মঘট সংগঠিত করে। টানা প্রায় তিন মাস ধরে আমেদাবাদ সুতাকলে ধর্মঘট চলেছিলো।

লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, এই ব্যাপক ধর্মঘটের প্রতি আমেদাবাদের শিল্পপতিদেরও প্রচ্ছন্ন সমর্থন ছিলো। গোয়েন্দা দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী এই সময় প্যাটেল শিল্পপতিদের শ্রমিকদের ধর্মঘটকে সমর্থন করতে বলেন এবং দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে অনুরোধ করেন। এর ফলে দেখা যায়, আমেদাবাদের মিল মালিকরা ধর্মঘটে আপত্তি তো করেন নি, উল্টে প্রচুর চাঁদা দেন। কর্মীরা কাজে না আসায় মিল মালিকরা ক্ষুব্ধও হন নি। গান্ধীজির ব্যাপক প্রভাব ও দেশপ্রেম এর পিছুনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো। 

আমেদাবাদের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে বরোদার কারখানার শ্রমিকরাও ধর্মঘট শুরু করেছিলো। 
 

(৫.) বিহার :-

বিহারে জাতীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জামসেদপুর, ঝরিয়া ও কাতরার হাজার হাজার শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করে। বিহারের জামসেদপুরে ২০ আগস্ট থেকে প্রায় ২০,০০০ শ্রমিক টানা ১৩ দিন ধরে ধর্মঘট পালন করে ঘোষনা করে যে, জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যোগ দেবে না। জামসেদপুরের পুলিশ ও ঝাড়ুদাররাও ধর্মঘট করে। 

জামসেদপুর ছাড়া, বিহারের পালামৌতে একটি সিমেন্ট কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে। 

(৬.) বাংলা :- 

ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হলে ১০ থেকে ১৭ আগস্ট কলকাতা শহর উত্তাল হয়ে উঠেছিলো। এই সময় কলকাতাতেও ব্যাপক শ্রমিক ধর্মঘটের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ১৯৪২ সালে ১৫ আগস্ট শ্রমিক ধর্মঘট সংগঠিত করার অপরাধে বীনা দাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এই সময় বীনা দাসের কাছ থেকে "বাংলার শ্রমিকদের প্রতি আবেদন" শিরোনামে একটি হিন্দি লিফলেট পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কলকাতা শিল্পাঞ্চলে ব্যপক শ্রমিক ধর্মঘট সংগঠিত করা যায় নি। কমিউনিস্টদের বিরোধিতাই ছিলো এর প্রধান কারন।

তবে কমিউনিস্টদের বিরোধিতা সত্ত্বেও, ১৯৪২ খ্রিঃ মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টি প্রভাবিত কলকাতা ট্রাম শ্রমিক ইউনিয়ন কমিউনিস্ট নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে একাধিক ধর্মঘট করে। এছাড়া, ১৯৪২ সালের ২৯৩০ সেপ্টেম্বর, কলকাতার ঝাড়ুদাররাও ধর্মঘটে সামিল হয়।

(৭.) ব্যাঙ্গালোর :-

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিলো ব্যাঙ্গালোর। ব্যাঙ্গালোরের ট্রেড ইউনিয়ন গুলি ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে স্বাগত জানায়। সেখানে ৩০ হাজার শ্রমিক অল্প কিছুদিনের জন্য হলেও, ধর্মঘটে সামিল হয়। ব্যাঙ্গালোরের ট্রেড ইউনিয়ন গুলির নেতৃত্ব দেন কে টি ভাস্যমব্যাঙ্গালোরের বিমান কারখানার শ্রমিকরা দু সপ্তাহের জন্য ধর্মঘট পালন করে। 

(৮.) মাদ্রাজ ও মহিশূর :-

দক্ষিণ ভারতে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রভাব তেমন ভাবে না পড়লেও, শ্রমিক শ্রেণী এখানেও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলো। দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে রেল শ্রমিক ও কুলিরা ধর্মঘট করেমাদ্রাজের বাকিংহাম ও কর্নাটকের মিলে শ্রমিকরা ধর্মঘট করে। মহিশূরের বিনি, মহারাজা, মিনার্ভা প্রভৃতি কারখানায় শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করে।

(গ.) অসংগঠিত শ্রমিকদের ধর্মঘট :- 

মাথায় রাখতে হবে, ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হলে তার জাতীয়তাবাদী উদ্মাদনা ভারতের সমস্ত শ্রেনী গুলিকেই কম বেশি স্পর্শ করেছিলো। এই সময় দোকানপাট, রেল ও গরুর গাড়ি, রিক্সা, নৌকা প্রভৃতি যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যম গুলিও আন্দোলনের তীব্র অভিঘাতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো। ঐ সমস্ত ক্ষেত্র গুলিতে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করতো। তাদের একটা বৃহৎ অংশই ছিলেন অসংগঠিত ও শ্রমিক ইউনিয়নের বাইরে। ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে তীব্র করে তোলার ক্ষেত্রে এই সমস্ত অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ধর্মঘটের ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ ছিলো না।

(ঘ.) মূল্যায়ন :-

কমিউনিস্টদের বিরোধিতা ও কংগ্রেসের তরফ থেকে সাংগঠনিক বিমুখতা থাকা সত্ত্বেও, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শ্রমিক শ্রেণী যেভাবে ভারত ছাড়ো পর্বে ধর্মঘটে সামিল হয়, তা নিঃসন্দেহে ছিলো এক অভূতপূর্ব ঘটনা। ভারত ছাড়ো পর্বে শ্রমিক আন্দোলন নিছক অর্থনৈতিক দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে সংগঠিত হয় নি। হয়েছিলো সম্পূর্ন ভাবে জাতীয়তাবাদী মানসিকতা ও দেশপ্রেমের প্রভাবে। এইজন্য এই পর্বের শ্রমিক আন্দোলনের চরিত্র ছিলো তাই জাতীয়তাবাদীজাতীয়তাবাদী গন আন্দোলনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই পর্বের শ্রমিক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিলো

(ঙ.) সীমাবদ্ধতা :- 

তবে এই পর্বের শ্রমিক আন্দোলনের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার দিক লক্ষ্য করা যায় -

(১.) কমিউনিস্টদের বিরোধিতার জন্য এই পর্বে শ্রমিক আন্দোলন জোরদার হয়ে উঠতে পারে নি।
(২.) শ্রমিক আন্দোলন ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রথম পর্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো।
(৩.) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের শেষপর্বে শ্রমিক আন্দোলনের কোন প্রভাব তেমন ভাবে পরিলক্ষিত হয় নি

প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। *** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। *** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। **** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post