ইতিহাসের ধারনা : ক্লাস - ৩ (কতক গুলি ধারনার গুরুত্ব)

"ইতিহাসের ধারনা" অধ্যায়টিতে সিলেবাসের বেশ কতকগুলি ধারনা বা বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রায়ই পরীক্ষায় প্রশ্ন এসে থাকে। আশা করছি, আজকের আলোচনাটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ছাত্রছাত্রীদের অনেকখানি কাজে লাগবে।  

ইতিহাসের ধারনা : ক্লাস - ৩ "কতকগুলি ধারনার গুরুত্ব"
ইতিহাসের ধারনা : ক্লাস - ৩ "কতকগুলি ধারনার গুরুত্ব"

 

(১.) নতুন সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব কী?

উত্তর :- আধুনিক ইতিহাস চর্চায় নতুন সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম। 

(i.) নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা "Total History" বা সম্পূর্ণ অতীতে পৌঁছাতে পারি এবং অতীতের সমগ্র দিক গুলি সম্পর্কে ধারনা করতে পারি। তাছাড়া, 

(ii.) গতানুগতিক ইতিহাসে উপেক্ষিত শ্রেনী গুলি এবং অনালোচিত বিষয় গুলির ধারনা, ভূমিকা এবং অবদানের বিশেষ দিক গুলির কথা একমাত্র সামাজিক ইতিহাস চর্চার থেকেই জানা সম্ভব হয়। 

(২.) খেলার ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী?

উত্তর :- (i) খেলার ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা যেকোন খেলার উদ্ভব ও বিবর্তনের ইতিহাসটি জানতে পারি।

 (ii) খেলার ইতিহাসের মধ্য দিয়ে মানুষের ক্ষমতার ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পরিবর্তন ও বিবর্তনের দিকটি বোঝা যায়। তাছাড়া, 

(iii) খেলার ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে প্রাচীন অতীত ও ঐতিহ্যের অনুসন্ধানও করা যায়। লোকসংস্কৃতি গবেষক ডঃ আশরফ সিদ্দিকী দেখিয়েছেন, গ্রামবাংলার খেলা গুলির সঙ্গে আদিবাসী সমাজের বৈশিষ্ট্যের অদ্ভুত মিল লক্ষ্য করা যায়। হাডুডু, গোল্লাছুট, বাঘবন্দী খেলা গুলির মধ্যে জোটবদ্ধ ও গোষ্ঠীবদ্ধ আদিবাসী সমাজ জীবনের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়। এ থেকে বোঝা যায়, বাংলার গ্রামীন জনপদের সঙ্গে আদিবাসী সমাজের এক গভীর যোগ ছিলো। 

(৩.) খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর :-  (i) খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস চর্চা থেকে বিভিন্ন খাবারের উৎপত্তি ও বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। 

(ii)  খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস একটি অঞ্চলের ভৌগলিক পরিবেশ, বানিজ্য ও অর্থনীতিকেও চিনতে সাহায্য করে। তাছাড়া, 

(iii) খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস চর্চা থেকে এক জনগোষ্ঠীর ওপর অপর জনগোষ্ঠীর "সাংস্কৃতিক প্রভাবের" দিকটি সম্পর্কেও জানতে পারা যায়। 

(৪.) শিল্প চর্চার ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- (i) শিল্প চর্চার ইতিহাস যে কোন সময়কালের মনস্তত্ত্ব, সংস্কৃতি এবং সমাজ ভাবনার দিক গুলিকে বুঝতে সাহায্য করে থাকে। যেমন আদিবাসী সমাজের যৌথ নৃত্যশৈলী থেকে তাদের জোটবদ্ধ সমাজ দর্শনের পরিচয় পাওয়া যায়। 

(ii) তাছাড়া, শিল্প চর্চার অনুশীলন ও উপভোগ হলো মানুষের বিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শিল্প চর্চার ইতিহাস থেকে তাই মানুষের বিনোদন চর্চার বিস্তৃত দিক ও রুচিবোধেরও পরিচয় পাওয়া যায়। 

(৫.) পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কি?

উত্তর :- (i) পোশাক পরিচ্ছেদের ইতিহাস চর্চা থেকে যেকোন পোশাকের বা পরিধান রীতির উদ্ভব ও বিকাশের ইতিহাসটি জানা যায়। 

(ii) তাছাড়া পোশাক পরিচ্ছেদের ইতিহাস চর্চা থেকে একটি অঞ্চলের মানুষের সংস্কার ভাবনা, জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ, ধর্মভাবনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা যায়।  

(iii) যুগের বদলের সাথে মানুষের রুচি ও ফ্যাশনেরও বদল ঘটে। সাজ পোশাকের ধরনে এবং পোশাকের কাটিং ও ডিজাইনের বদল ঘটে। পোশাক পরিচ্ছেদের ইতিহাস চর্চা থেকে মানুষের এই ক্রমপরিবর্তিত ফ্যাশনের পরিচয় পাওয়া যায়। 

(৬.) যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস থেকে - 

(i) মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম গুলির উদ্ভব ও বিবর্তনের ইতিহাস জানা যায়। 

(ii) যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা কিভাবে মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক জীবনকে প্রভাবিত করে সেই ইতিহাসও এই ইতিহাস চর্চা থেকে জানা যায়। 

(iii) যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকে প্রযুক্তি। তাই যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে একটি সময়কালের প্রযুক্তির উন্নতি ও অগ্রগতির দিক গুলিরও পরিচয় পাওয়া যায়। 

(৭.) দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর :- মানুষের হাতে আঁকা ছবি এবং ফটোগ্রাফির ইতিহাস চর্চাকেই সাধারনত "দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস" বলা হয়ে থাকে। 

(i) দৃশ্যশিল্প অর্থাৎ মানুষের হাতে আঁকা ছবি ও ক্যামেরায় তোলা ফটোগ্রাফি থেকে যেকোন সময়কালের পোশাক পরিধান রীতি ও সাজপোশাকের দিকটি সম্পর্কে জানতে পারা যায়। তাছাড়া দৃশ্যশিল্পের আরেকটি প্রধান গুরুত্বের দিক হলো- (ii) যে কোন সময়কালের জীবন্ত পরিবেশ ও চরিত্র গুলিকে প্রায় অবিকৃত ভাবে দৃশ্যশিল্প তুলে ধরতে পারে। 

(৮.) ইতিহাস চর্চায় ফটোগ্রাফিকে কেন গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়? 

উত্তর :- ইতিহাস চর্চায় ৩ টি কারনে ফটোগ্রাফিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। যথা - 

(i) ফটোগ্রাফি যেভাবে পুরানো সময়কে প্রায় অবিকৃত ভাবে তুলে ধরতে পারে, কোন লেখক বা চিত্রকর অথবা ইতিহাসের অন্য কোন উপাদান তা কখনই পারে না। 

(ii) সাহিত্য বা শিল্পের মতো ফটোগ্রাফিতে কল্পনা বা অনুভূতির স্থান নেই। আলোকচিত্র শিল্পী নিজের চোখে যা দেখেন, তাইই ক্যামেরায় তুলে রাখেন। 

(iii) ফটোগ্রাফি বিভিন্ন রকম অতিরঞ্জন দোষ থেকেও অনেকটাই মুক্ত। সাহিত্য বা অন্যান্য মাধ্যমে গুলির থেকে অনেকটাই নিরপেক্ষ। এককথায় ফটোগ্রাফি বাস্তব সময়ের এক "জীবন্ত জীবাষ্ম"। 

(৯.) স্থাপত্যের ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- স্থাপত্যের ইতিহাসের প্রধান গুরুত্বের দিক গুলি হলো - (i) স্থাপত্য ভাষ্কর্যের ইতিহাস চর্চা থেকে মানুষের সৃষ্টিশীল মনন ও কর্মকান্ডের পরিচয় পাওয়া যায়। 

(ii) এই ইতিহাস চর্চা থেকে মানুষের নান্দনিক ভাবনা ও সৌন্দর্য বোধের পরিচয় পাওয়া যায়। তাছাড়া, 

(iii) স্থাপত্যের ইতিহাস চর্চা থেকে যেকোন সময়কালের স্থাপত্য রীতির বিবর্তন ও সাংস্কৃতিক ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। 

(১০.) স্থানীয় ইতিহাস বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন? 

উত্তর :- (i) বৃহত্তর পরিসরে ইতিহাস রচনা করতে গিয়ে এমন অনেক বিষয় থাকে, যা ইতিহাসে উপেক্ষিত থেকে যায়। স্থানীয় ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে সেই ফাঁক পূরন করা সম্ভব হয়। 

(ii) স্থানীয় ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা আঞ্চলিক লোকপরম্পরা, শিল্প স্থাপত্যের বিকাশ, আর্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি রূপরেখা পাই। তাছাড়া, 

(iii) স্থানীয় ইতিহাস জাতীয় ইতিহাসের ধারাকে আরোও শক্তিশালী ও বলিষ্ঠ করে তোলে। জাতীয় ঘটনাবলীর শিকড় আঞ্চলিক স্তরে কতদূর প্রসারিত হতে পেরেছিলো, তা একমাত্র স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়েই নিখুঁত ভাবে জানা সম্ভব হয়। 

(১১.) শহরের ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর :- শহরের ইতিহাস চর্চার একাধিক ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক রয়েছে। যেমন - 

(i) শহরের ইতিহাস চর্চা থেকে একটি শহরের উৎপত্তি ও বিকাশ এবং বিবর্তনের ক্রম ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। 

(ii) একটি শহরের প্রকৃতি ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের পূর্নাঙ্গ পরিচয় এই ইতিহাস চর্চা থেকে জানতে পারা যায়। তাছাড়া, 

(iii) অতীতের অবলুপ্ত বা হারিয়ে যাওয়া শহরের ইতিহাসও শহরের ইতিহাস চর্চায় উঠে আসে। 

(১২.) সামরিক ইতিহাসের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- (i) সামরিক ইতিহাস চর্চা থেকে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধ কৌশল এবং যুদ্ধ প্রযুক্তির নানা দিক গুলির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়। 

(ii) সামরিক ইতিহাস থেকে একটি যুদ্ধের কারন, প্রকৃতি এবং যুদ্ধের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কেও ধারনা লাভ করা যায়। সর্বোপরি, 

(iii) সামরিক ইতিহাস চর্চার আলোকে একটি দেশ তার সামরিক সক্ষমতা ও বিবর্তন সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারে। 

(১৩.) পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী? 

উত্তর :- (i) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা পরিবেশের গুরুত্ব ও তার ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। তাছাড়া,

 (ii) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট এবং জলবায়ু বদলের কার্যকারন সম্বন্ধ গুলিকে বুঝতে সাহায্য করে। সর্বোপরি, 

(iii) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা সভ্যতা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার অনিবার্যতার গুরুত্বকে তুলে ধরে। 

(১৪.) বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যার ইতিহাসের গুরুত্ব কী? 

উত্তর :- বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যার ইতিহাস চর্চার প্রধান গুরুত্ব হলো - 

(i)  সমাজ বিজ্ঞানের শাখা হিসাবে মানব সভ্যতার বিবর্তনের কথা আমরা ইতিহাসে পড়ে থাকি। সভ্যতার অগ্রগতি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যার অগ্রগতির ওপরেই নির্ভর করে। সুতরাং অতীত পর্যালোচনাতে সভ্যতার অগ্রগতির ধারা সঠিক ভাবে বুঝতে গেলে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসা বিদ্যার ইতিহাস চর্চা অপরিহার্য। 

(ii) যেকোন সময়কালের বর্তমান সভ্যতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ওপরেই দাড়িয়ে থাকে। কিভাবে ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা আধুনিক পর্যায়ে উন্নীত হলো, তা এই ইতিহাস চর্চা থেকে জানতে পারা যায়। 

(১৫.) নারী ইতিহাস কেন গুরুত্বপূর্ণ? 

উত্তর :- নারী ইতিহাস চর্চার প্রধান গুরুত্বের দিক গুলি হলো - 

(i) নারী ইতিহাস চর্চার ফলে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক ইতিহাস ধারার বদল ঘটেছে। 

(ii) "নারী ইতিহাস" ইতিহাস চর্চায় প্রচলিত লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সমাজ এবং ইতিহাসের বিভিন্ন ক্ষেত্র গুলিতে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ, অবদান ও ভূমিকার কথা তুলে ধরে। 

(iii) ইতিহাসে অনালোচিত ও উপেক্ষিত নারীদের নানা ঐতিহাসিক অবদানের দিক গুলিকে নারী ইতিহাস গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে। 

(১৬.) ইতিহাস চর্চায় সরকারি নথিপত্র কতখানি গুরুত্বপূর্ণ? 

উত্তর :- ইতিহাস চর্চায় সরকারি নথিপত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

প্রথমত, সরকারি নথিপত্রের মধ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট এবং ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন গুলি ব্যবহার করেই - (i.) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, (ii) শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস এবং (iii) ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস যথার্থ ভাবে রচনা করা সম্ভব হয়েছে। 

দ্বিতীয়ত, সরকারি আধিকারিকদের প্রতিবেদন ও চিঠিপত্র থেকেই ভারতে - (i) ১৯০৫ খ্রিঃ বঙ্গভঙ্গের প্রকৃত কারন ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়েছে। এবং (ii) নীল কমিশনের রিপোর্ট থেকে নীল বিদ্রোহের কারন ও বিদ্রোহের প্রতি সরকারের মনোভাব জানা সম্ভব হয়েছে। 

(১৭.) ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের প্রধান সীমাবদ্ধতা গুলি কী কী? 

উত্তর :- ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এগুলি হলো - 

  1.  সরকারি নথিপত্র হিসাবে আধিকারিকদের প্রতিবেদন, রিপোর্ট ও চিঠিপত্র গুলি থেকে কেবলমাত্র সরকারি বক্তব্যটুকুই জানতে পারা যায়। 
  2. এইসব রিপোর্টগুলি শাসকগোষ্টির দৃষ্টিকোন থেকেই লেখা হয়েছিলো। সুতরাং তা সবসময় নিরপেক্ষ ছিলো না। উদাহরন হিসাবে বলা যায়, উনিশ শতকের উপজাতি ও কৃষক বিদ্রোহ গুলিকে সরকারি নথিপত্রে অসভ্য মানুষদের হাঙ্গামা বলা হয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না।
  3.  বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গোয়েন্দা ও পুলিশ রিপোর্ট ভুলে ভরা ও বিকৃত থাকে। 
  4. অনেক সময় সরকারি রিপোর্ট গোপনই থেকে যায়। তা প্রকাশ্যে আনা হয় না। যেমন নেতাজী সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র তফতরের হাতে থাকা নথি গুলি স্বাধীনতার এত বছর পরও প্রকাশ্যে আসে নি। 
  5. বহু সরকারি নথি নষ্টও করে দেওয়া হয়। সরকারি নথির এই সকল সীমাবদ্ধতার জন্য অতীত ইতিহাসের অনেক দিক আজও অজানাই থেকে গেছে। 

(১৮.) ইতিহাস চর্চায় আত্মজীবনী বা স্মৃতিকথার গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- (i) সরকারি নথিপত্রের বাইরে বহু ঐতিহাসিক তথ্য ও ঘটনার কথা আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়। 

(ii) ভারতে দেশভাগের ইতিহাস, দাঙ্গার ইতিহাস, স্বাধীনতার পর উদ্বাস্তু সমস্যার ইতিহাস, জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীর ইহুদি নিধন ও অত্যাচারের নানা ইতিহাস আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার ওপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে। 

(iii) স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার অনেকটাই স্মৃতিকথার ওপর নির্ভরশীল। 

(iv) অতীতের কোন বিশেষ ঘটনার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন একমাত্র আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকেই জানা যায়। উদাহরণ হিসাবে দেশভাগের মানসিক অনুভূতি ও যন্ত্রনার কথা উল্লেখ করা যায়। 

(১৯.) আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর :- (i) আত্মজীবনী হলো ব্যক্তির জীবনী মূলক আখ্যান। কিন্তু স্মৃতিকথা ব্যক্তির জীবনের সঙ্গে যুক্ত অতীতের স্মরনীয় কোন ঘটনা বা বিশেষ মুহুর্তের কথন। 

(ii) আত্মজীবনী কিছুটা আত্মবিশ্লেষনের ঢঙে লেখা। যেখানে ব্যক্তি জীবনের আখ্যানের সঙ্গে সমকালীন সমাজ জীবনের আখ্যানেরও পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু স্মৃতিকথা অতীতের প্রত্যক্ষ বিবরন, যেখানে জড়িত থাকে লেখকের নিজস্ব অনুভূতি ও আবেগ। 

(২০.) সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রের মধ্যে প্রধান পার্থক্য লেখো। 

উত্তর :- (i) সাময়িকপত্র নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত পত্রিকা। কিন্তু সংবাদপত্র দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত পত্রিকা। 

(ii) সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয় দামি কাগজে। কিন্তু সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে তুলনামূলক সস্তা দামের কাগজে। 

(iii) সাময়িকপত্র বাঁধাই আকারে থাকে। কিন্তু সংবাদপত্র বাঁধাই আকারে থাকে না। তা বাঁধাইহীন আকারে প্রকাশিত হয়। 

(iv) সাময়িকপত্রে তাৎক্ষণিক সংবাদের দিকে ঝোঁক নেই। অন্যদিকে সংবাদপত্রে তাৎক্ষণিক বা সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া খবরই মূলত প্রকাশিত হয়। 

(v) সাময়িকপত্রের দাম সবসময়ই সংবাদপত্রের থেকে বেশি হয়। 

(vi) সাময়িকপত্রে ব্যক্তিগত মতামত গুরুত্ব পায়। কিন্তু সংবাদপত্রে ব্যক্তিগত মতামতের গুরুত্বের তেমন জায়গা নেই। 

(২১.) ইতিহাস চর্চায় সংবাদপত্র কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর :- মূলত ৩ টি কারনের জন্য ঐতিহাসিকরা সংবাদপত্রকে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে থাকেন - 

(i) সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ঐতিহাসিককে তথ্য চয়নে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। 

(ii) সংবাদপত্রে শুধু সংবাদই প্রকাশিত হয় না। সমাজের পরিবর্তিত নানা ভাবনা, সংস্কার ও সমাজ ব্যবস্থার খুঁটিনাটি দিকগুলিও প্রকাশিত হয়, যা ঐতিহাসিককে সমাজ বিশ্লেষনের সুযোগ করে দেয়। 

(iii) সংবাদপত্রে সেইসব খবর এবং চিন্তাভাবনাই প্রকাশিত হয়, যা তার সময়কালকে প্রভাবিত করে থাকে। ফলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে যেকোন সময়কালের মনস্তাত্ত্বিক দিকটি ঐতিহাসিক বুঝতে পারেন। 

(২২.) ইতিহাস চর্চায় চিঠিপত্রের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- (i) চিঠি ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ মাধ্যম। তাই এর মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের নানা দিক গুলির পরিচয় পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসাবে ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহেরুর ব্যক্তিগত চিঠি গুলি থেকে নেহেরুর উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী ও সমাজতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

(ii) আবার সরকারি বিভিন্ন চিঠিপত্র থেকে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি, প্রকল্প, সিদ্ধান্ত ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের মনোভাবের কথা জানা যায়। যেমন ১৯০৫ খ্রিঃ ভারত সচিব জন ব্রোডরিখকে লেখা লর্ড কার্জনের চিঠি থেকে বঙ্গভঙ্গের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কথা জানতে পারা যায়।

(২৩.) আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চায় "সত্তর বৎসর" কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর :- আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চায় বিপিনচন্দ্র পালের "সত্তর বৎসর" একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে পরিগনিত হয়। ইতিহাস চর্চায় এর প্রধান গুরুত্বের দিক গুলি হলো - 

(i.) এই গ্রন্থ থেকে ১৮৫৮ থেকে ১৮৮০ খ্রিঃ পর্যন্ত পরিবর্তনশীল সময়ের একটি ধারাভাষ্য পাওয়া যায়। 

(ii.) সত্তর বৎসরে উল্লেখিত তথ্য সামাজিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে। গ্রামবাংলার সমাজ জীবনের পাশাপাশি পুরানো কলকাতার পথঘাট, খাদ্যাভ্যাস, সমাজ জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নানা তথ্য এই গ্রন্থটি থেকে পাওয়া যায়। 

(iii.) উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করেছিলো। কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে কিভাবে নানা গুপ্ত সমিতি গড়ে উঠতে শুরু করে, ভারতসভা ও হিন্দুমেলার কিভাবে তৎকালীন যুব সম্প্রদায় দেশবাসীকে দেশাত্মবোধক ভাবনায় উদ্দীপ্ত করেছিলো, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরন ও তথ্য সত্তর বৎসর থেকে জানা যায়। 

(২৪.) আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে "জীবন স্মৃতি" কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর :- ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের সামাজিক এবং কিছু পরিমানে রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "জীবনস্মৃতি" গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই গ্রন্থটি -

 (i) রবীন্দ্র গবেষণায় নানা ভাবে সাহায্য করে, কেননা রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের প্রথম ২৫ বছরের ইতিহাস এই আত্মকথাতে তুলে ধরেছিলেন। এছাড়া, 

(ii.) ঠাকুরবাড়ীর অন্দরমহল সম্পর্কে নানা অজানা তথ্যও এই গ্রন্থটি থেকে পাওয়া যায়। 

(iii.) উনিশ শতকে কলকাতার সমাজ জীবন, জমিদার বাড়ির জীবন ধারন পদ্ধতি, কলকাতা শহরের চলমান রাজনৈতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে ঠাকুরবাড়ীর সম্পর্ক ইত্যাদি সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়। 

(২৫.) আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে "জীবনের ঝরাপাতা" কতখানি গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর :- ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সরলাদেবী চৌধুরানীর" জীবনের ঝরাপাতার" ঐতিহাসিক মূল্য ছিলো অপরিসীম। 

(i.) প্রাথমিকভাবে এই গ্রন্থটি সরলাদেবী সম্পর্কে জানতে এবং উনিশ শতকে নারীদের ক্ষমতায় ও নারী জাগরন সম্পর্কে জানতে আকর উপাদান হিসাবে কাজ করে থাকে। 

(ii.) সরলাদেবী চৌধুরানীর এই আত্মজীবনী থেকে ঠাকুরবাড়ীর নানা অজানা "প্রথা ও ঐতিহ্য" সম্পর্কে জানতে পারা যায়। 

(iii.) এছাড়া সরলাদেবীর এই আত্মজীবনী থেকে বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনের গোড়ার নানা অজানা তথ্যের কথাও জানতে পারা যায়। 

(২৬.) আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চায় "বঙ্গদর্শন" পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর :- উনিশ শতকের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসাবে "বঙ্গদর্শন" পত্রিকার ঐতিহাসিক অবদান ছিলো অপরিসীম।

প্রথমত, বাঙালির মনীষার প্রতিফলন :- 

বঙ্গদর্শন ছিলো বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাহিত্যধর্মী পত্রিকা। উনিশ শতকের শিক্ষিত বাঙালির আধুনিক চিন্তা,মনন ও মনীষার প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিলো বঙ্গদর্শন পত্রিকার মধ্য দিয়ে। 

উনিশ শতকে তাই বাংলা ভাষাচর্চা, সাহিত্য রচনা, দর্শন চর্চা, বিজ্ঞান মনস্কতা প্রভৃতি বাঙালি মনীষার অনুসন্ধান পেতে হলে এবং বিবর্তনের ইতিহাস জানতে গেলে বঙ্গদর্শনের গুরুত্বকে কোন মতেই উপেক্ষা করা যায় না। 

দ্বিতীয়ত, সামাজিক ইতিহাস রচনার নানা তথ্য :- 

বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধ গুলি থেকে উনিশ শতকে কৃষক সমস্যা, ইংরেজদের অত্যাচার, অপশাসন, কলকাতার বাবু কালচার, ইত্যাদি বিভিন্ন দিক গুলি সম্পর্কে যেসব তথ্য পাওয়া যায়, তা সেই সময়ের সামাজিক ইতিহাস রচনায় প্রভূত ভাবে সাহায্য করে থাকে। 

(২৭.) আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চায় "সোমপ্রকাশ" পত্রিকার গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর :-উনিশ শতকের "ইতিহাস রচনার উপাদান" হিসাবে সোমপ্রকাশের গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম। সংক্ষেপে এর গুরুত্বের প্রধান দিক গুলিকে আমরা নিন্মলিখিত ভাবে তুলে ধরতে পারি -

(i.) রাজনৈতিক ইতিহাসের উপাদান :- 

সোমপ্রকাশ ছিলো বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক সংবাদপত্র। খুব স্বাভাবিক ভাবেই উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা গুলির পরিচয় সোমপ্রকাশ থেকে পাওয়া যায়। এইসব ঘটনা গুলির মধ্যে অন্যতম ছিলো - 
  • সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রন আইন, 
  • ভারত সভার প্রতিষ্ঠা,
  •  ইলবার্ট বিল আন্দোলন, 
  • জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।

(ii.) সামাজিক ইতিহাস রচনার উপাদান :- 

রাজনৈতিক সংবাদের পাশাপাশি সোমপ্রকাশে নীলচাষীদের দুরাবস্থা, বিধবা বিবাহ, নারী শিক্ষা, ব্রাহ্ম আন্দোলন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য সামাজিক ঘটনা গুলি সম্পর্কেও নানা তথ্য পাওয়া যায়। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি শিক্ষিত শ্রেনীর সামাজিক মানসিকতা ও জটিল মনস্তাত্ত্বিক নানা দিকের আভাসও সোমপ্রকাশ থেকে পাওয়া যায়।

(iii.) বাংলা ভাষার বিবর্তন :-

বাংলা ভাষার বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হলে সোমপ্রকাশকে ইতিহাসের উপাদান হিসাবে কখনোই উপেক্ষা করা যায় না।  

সোমপ্রকাশ আগেকার সাহেবি বাংলা, মৈথিলি বাংলা এবং সংস্কৃত বাংলা ভেঙ্গে চুরে বিশুদ্ধ বাংলা ভাষা চালু করে। বাংলা ভাষার বিকাশ ও বিবর্তনের ক্ষেত্রে এটি ছিলো এক বিরাট অবদানের দিক। সোমপ্রকাশ থেকে তাই বাংলা ভাষার বিবর্তনের নানা দিক সম্পর্কেও ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

(iv.)  তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা :-

মনে রাখতে হবে, উনিশ শতকে অন্যান্য পত্র পত্রিকার মতো সোমপ্রকাশ কখনোই সরকারের কাছে নতি স্বীকার করে নি, অথবা বিশেষ কোন পক্ষকেও অবলম্বন করে নি। অত্যন্ত নির্ভিক ও বলিষ্ঠ ভাবে সোমপ্রকাশ সংবাদ পরিবেশন করতো। সামাজিক ক্ষেত্রে সোমপ্রকাশের দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো উদারনৈতিক। ফলে একপেশে, বিকৃত ও পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন কখনোই সোমপ্রকাশ করতো না।

এই বৈশিষ্ট্যের জন্য ঐতিহাসিকরা উনিশ শতকের অন্যান্য পত্রিকা গুলির চাইতে ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সোমপ্রকাশকে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন।  

(২৮.) ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা জওহরলাল নেহেরুর চিঠি গুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী ছিলো?

উত্তর :- জওহরলাল নেহেরুর লেখা চিঠিগুলির ঐতিহাসিক মূল্য এবং গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম। 

(i.) চিঠিগুলির প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল নিঃসঙ্গ ইন্দিরার জীবনে পিতার স্নেহ এবং জ্ঞানের পরশকে পৌঁছে দেওয়া। পরবর্তীকালে ইন্দিরা গান্ধী স্বীকার করেছিলেন, তার উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাধারার পিছনে পিতার লেখা এই চিঠি গুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলো।

(ii.) জওহরলালের লেখা চিঠিগুলি পড়ে উপলব্ধি করা যায় , এই পৃথিবীতে "প্রকৃতি","মানুষ" আর "ইতিহাসের" মধ্যে এক নিবিড় এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে।

(iii.) চিঠিগুলিতে মানব সভ্যতার ইতিহাস আলোচনা করতে গিয়ে নেহেরু কোন জাতি বা দেশের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করেন নি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই চিঠিগুলির ভাষ্য পাঠককে সংকীর্ণ জাতি পরিচয়ের উর্ধ্বে উঠে বৃহত্তর বিশ্ব পরিবারের সঙ্গে একাত্ম করে তোলে। 

যথার্থ অর্থেই তাই এই চিঠিগুলি থেকে নেহেরুর (ক.) উদারনৈতিক চিন্তাধারা ও দর্শন এবং  (খ.) মুক্ত মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। 

প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। *** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। *** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা। **** প্রতি রবিবার প্রকাশিত হয় নতুন লেখা।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post