বিগত বছর গুলিতে পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ আয়োজিত মাধ্যমিক বার্ষিক পরীক্ষায় প্রথম অধ্যায় থেকে যে প্রশ্ন গুলি এসেছে সেগুলি উত্তর সহ আমরা নিন্মলিখিত ভাবে তুলে ধরলাম। আশা করি, এটি থেকে অনেকেই উপকৃত হবে।
|
ইতিহাসের ধারনা : ক্লাস - ৪ বিগত বছরের সালের প্রশ্ন ও উত্তর
|
মাধ্যমিক - ২০১৭ (১২ নম্বর প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ ভারতে ফুটবল খেলা প্রবর্তন করেন - (ক) ইংরেজরা, (খ) ওলন্দাজরা, (গ) ফরাসিরা, (ঙ) পোর্তুগিজরা।
উত্তর :- ইংরেজরা।
১.২ বিপিনচন্দ্র পাল লিখেছেন - (ক) সত্তর বৎসর (খ) জীবনস্মৃতি (গ) এ নেশন ইন মেকিং (ঘ) আনন্দমঠ।
উত্তর :- সত্তর বৎসর।
বিভাগ - খ
একটি বাক্যে উত্তর দাও :-
২.১.১ সোমপ্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর :- দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষন।
২.১.২ সরকারি নথিপত্র কোথায় সংরক্ষন করা হয়?
উত্তর :- মহাফেজখানায়।
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ সামাজিক ইতিহাস কী?
উত্তর :- "সামাজিক ইতিহাস" হলো আধুনিক ইতিহাস চর্চার একটি নতুন ধারা বা পদ্ধতি, যেখানে আগেকার রাজা মহারাজা কেন্দ্রীক ইতিহাসের বদলে সাধারণ মানুষের জীবন কাহিনীকে তুলে ধরা হয়।
এটি হলো এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ইতিহাস, যেখানে তল থেকে অর্থাৎ নীচ থেকে ইতিহাসকে দেখা হয় এবং বিশ্লেষন করা হয়। সমাজের অন্তরালে পড়ে থাকা শ্রেনী গুলির ভূমিকা এবং মানুষের প্রাত্যহিক জীবন ধারার সঙ্গে যুক্ত বিষয় গুলির বিবর্তন ও ভূমিকার দিক গুলিকে এই ইতিহাস চর্চায় তুলে ধরা হয়। নতুন সামাজিক ইতিহাসকে তাই ঐতিহাসিকরা "সংশোধনবাদী ইতিহাসও" বলে থাকেন।
৩.২ ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী?
উত্তর :- মূলত ৩ টি কারনের জন্য ঐতিহাসিকরা সংবাদপত্রকে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে থাকেন -
(i) সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ঐতিহাসিককে তথ্য চয়নে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
(ii) সংবাদপত্রে শুধু সংবাদই প্রকাশিত হয় না। সমাজের পরিবর্তিত নানা ভাবনা, সংস্কার ও সমাজ ব্যবস্থার খুঁটিনাটি দিকগুলিও প্রকাশিত হয়, যা ঐতিহাসিককে সমাজ বিশ্লেষনের সুযোগ করে দেয়।
(iii) সংবাদপত্রে সেইসব খবর এবং চিন্তাভাবনাই প্রকাশিত হয়, যা তার সময়কালকে প্রভাবিত করে থাকে। ফলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে যেকোন সময়কালের মনস্তাত্ত্বিক দিকটি ঐতিহাসিক বুঝতে পারেন।
বিভাগ - ঘ
সাত/আটটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৪.১ নারী ইতিহাসের ওপর টীকা লেখো।
উত্তর :- নতুন সামাজিক ইতিহাস চর্চার একটি অন্যতম ধারা বা লক্ষন হলো নারী ইতিহাসের চর্চা।
(১.) নারী ইতিহাস বলতে কি বোঝায়?
সমাজ ও সভ্যতার বিভিন্ন ক্ষেত্র গুলিতে নারীদের - (১.) ভূমিকা, (২.) অংশগ্রহণ, এবং (৩.) অবদানের দিকগুলি পর্যালোচনা করে ইতিহাসে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং প্রকৃত মূল্যায়নের লক্ষ্যে যে ইতিহাস চর্চা করা হয়, তাকেই সাধারণত নারী ইতিহাস বলা হয় ।
(২.) নারী ইতিহাস চর্চার সূত্রপাত:-
নারী ইতিহাস চর্চার প্রথম সূত্রপাত হয় ১৯৬০ দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
পরে তা ধীরে ধীরে পশ্চিম ইওরোপের দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছিলো। ক্রমে এই ইতিহাসের ধারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ গুলিতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ভারত সহ এশিয়া মহাদেশের দেশগুলিতে নারী ইতিহাস - ইতিহাসের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।
(৩.) ভারতে নারী ইতিহাস চর্চা :-
(i.) ভারতে ১৯৮০ দশক থেকেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নারী ইতিহাস নিয়ে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে।
(ii.) যাদবপুরে নারী ইতিহাস চর্চার জন্য ১৯৮৮ খ্রিঃ প্রতিষ্ঠিত করা হয় - "স্কুল অব উইমেন স্টাডিজ" বা মানবীবিদ্যা চর্চা কেন্দ্র।
(iii.) বর্তমানে মানবীবিদ্যা বা ফেমিনিজমের চর্চা করবার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই মানবীবিদ্যা চর্চা কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।
(৪.) নারী ইতিহাসের মূল উদ্দেশ্য এবং বৈশিষ্ট্য :-
নারী ইতিহাস চর্চার প্রধান উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য গুলি হলো -
- নারীর ঐতিহাসিক অবদান গুলিকে মূল্য দেওয়া এবং সেগুলিকে ইতিহাসে তুলে ধরা,
- নারীর অবমূল্যায়নকারী বিষয় গুলির সমালোচনা করা,
- নারী সম্পর্কে আর্থ - সামাজিক ও নৈতিক বোধ তৈরি করা,
- ইতিহাস চর্চায় দীর্ঘ পুরুষতান্ত্রিক ধারার সংশোধন করা এবং ইতিহাস পর্যালোচনায় লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান ঘটানো,
- নারী কেন্দ্রীয় বিষয় গুলিকে ইতিহাস চর্চার আওতায় নিয়ে আসা,
- পুরুষতন্ত্র কিভাবে নারীর বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা আলোচনা করা,
- নতুন উপাদানের সাহায্যে ইতিহাসের বিভিন্ন ক্ষেত্র গুলিতে নারীদের অংশগ্রহণ এবং ভূমিকার যথাযথ মূল্যায়ন করা,
- প্রচলিত বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির অবসান ঘটিয়ে নারীর মর্যাদা, অধিকার এবং গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করা।
(৫.) নারী ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব :-
- নারী ইতিহাস চর্চার ফলে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক ইতিহাস ধারার বদল ঘটেছে।
- এখন ইতিহাসে সমাজ, রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাধীনতা আন্দোলন, প্রভৃতি নানা ক্ষেত্র গুলিতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ভূমিকার নানা দিক গুলিও আমরা জানতে পারছি।
- ইতিহাসে অনালোচিত ও উপেক্ষিত নারীদের নানা ঐতিহাসিক অবদানের দিক গুলিও এই ইতিহাস চর্চায় উঠে আসছে। নারী ইতিহাস চর্চার ফলেই জানা গেছে, নারীরা প্রথম কৃষিকাজের উদ্ভব ঘটিয়ে ছিলেন। ঋকবৈদিক যুগে আর্য পুরুষরা অনার্যদের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যস্ত থাকার সময়ে নারীরাই সেযুগের অর্থনীতি সচল রেখেছিলেন। একই ভাবে বিশ শতকে মহাযুদ্ধের সময়ে পুরুষরা রনাঙ্গনে চলে গেলে নারী শ্রমিকরাই অর্থনীতি সচল রেখেছিলেন।
- আসলে নারী ইতিহাস চর্চা আমাদের দেখিয়ে দিতে পেরেছে - অর্থনীতি এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেও, সমাজের অর্থনীতির সুফল একতরফা ভাবে পুরুষরাই ভোগ করে এসেছে।
- শুধু অর্থনীতি নয়, পরিবেশ আন্দোলনের ক্ষেত্রেও নারীদের অংশগ্রহণ ছিলো যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন ভারতে পরিবেশ রক্ষায় মেধা পটেকর, চিপকো আন্দোলনে গৌরীদেবী, পশুরক্ষা আন্দোলনে মেনকা গান্ধী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। নারী ইতিহাস নারীদের এই ঐতিহাসিক অবদান গুলিকে তুলে ধরে।
- নারী এবং প্রকৃতি কে সমার্থক ভাবা হয়।নারী ইতিহাস চর্চা থেকে পরিবেশ প্রধান নারীবাদ বা ইকোফেমিজমের ধারনা এসেছে। নারী ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব বৃদ্ধির ফলে তাই বিভিন্ন বিষয় অধ্যায়নে প্রকৃতি বা পরিবেশের বিষয়কে এখন যুক্ত করা হচ্ছে। ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান প্রভৃতি নানা বিষয় গুলোতে পরিবেশের বিষয়টি সংযোজিত হচ্ছে।
সবচেয়ে বড়ো কথা হল, পুরুষতন্ত্র চিরদিনই নারীকে অক্ষম, দূর্বল, অযোগ্য ও মূল্যহীন বলে মনে করে এসেছে। কিন্তু নারী ইতিহাস চর্চায় দেখা গেছে, সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশে পুরুষদের থেকে নারীদের ভূমিকা এবং অবদান ছিলো কয়েক গুন বেশি। আসলে
নারী ইতিহাস চর্চা নারী সমাজের উপেক্ষিত অবদানের দিক গুলিকে তুলে এনে নারীদের সমাজে প্রকৃত মর্যাদা ও অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। - এখানেই নারী ইতিহাস চর্চার সবথেকে বড়ো গুরুত্ব ।
মাধ্যমিক - ২০১৮ (০৮ নম্বরের প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ জীবনের ঝরাপাতা গ্রন্থটি হলো একটি - (ক) উপন্যাস (খ) কাব্যগ্রন্থ (গ) জীবনীগ্রন্থ (ঘ) আত্মজীবনী।
উত্তর :- আত্মজীবনী।
১.২ সোমপ্রকাশ ছিলো একটি - (ক) দৈনিক পত্রিকা (খ) সাপ্তাহিক পত্রিকা (গ) পাক্ষিক পত্রিকা (ঘ) মাসিক পত্রিকা।
উত্তর :- সাপ্তাহিক পত্রিকা। প্রত্যেক সোমবার এই পত্রিকা প্রকাশিত হতো বলে এর নাম হয়েছিলো সোমপ্রকাশ।
বিভাগ - খ
সত্য বা মিথ্যা নির্নয় করো :-
২.২.১ মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বাঙালিকে নৃত্যের বিষয়ে আগ্রহী করে তুলেছিলেন উদয়শঙ্কর।
উত্তর :- বিবৃতিটি সত্য।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (আলোচ্য প্রশ্নটি ছকের আকারে এসেছিলো। এখানে প্রশ্নের আকারে দেওয়া হলো 👇)
২.৩.১ "লেটারস ফ্রম আ ফাদার টু হিজ ডটার" - কার লেখা?
উত্তর :- জওহরলাল নেহেরুর লেখা।
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী?
উত্তর :- (i) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা পরিবেশের গুরুত্ব ও তার ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। তাছাড়া,
(ii) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট এবং জলবায়ু বদলের কার্যকারন সম্বন্ধ গুলিকে বুঝতে সাহায্য করে। সর্বোপরি,
(iii) পরিবেশের ইতিহাস চর্চা সভ্যতা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার অনিবার্যতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
৩.২ স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে ব্যবহার করা হয় ?
উত্তর :- আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারন -
(i) সরকারি নথিপত্রের বাইরে বহু অজানা ঐতিহাসিক তথ্য ও ঘটনার কথা আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়।
(ii) ভারতে দেশভাগের ইতিহাস, দাঙ্গার ইতিহাস, স্বাধীনতার পর উদ্বাস্তু সমস্যার ইতিহাস, জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীর ইহুদি নিধন ও অত্যাচারের নানা ইতিহাস আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার ওপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে।
(iii) স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার অনেকটাই স্মৃতিকথার ওপর নির্ভরশীল।
(iv) অতীতের কোন বিশেষ ঘটনার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন একমাত্র আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা থেকেই জানা যায়। উদাহরণ হিসাবে দেশভাগের মানসিক অনুভূতি ও যন্ত্রনার কথা উল্লেখ করা যায়।
মাধ্যমিক - ২০১৯ (১০ নম্বরের প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ মোহনবাগান ক্লাব আই এফ এ শিল্ড জয় করেছিলো - (ক) ১৮৯০ খ্রিঃ (খ) ১৯০৫ খ্রিঃ (গ) ১৯১১ খ্রিঃ (ঘ) ১৯১৭ খ্রিঃ।
উত্তর :- ১৯১১ খ্রিঃ।
১.২ দাদা সাহেব ফালকে যুক্ত ছিলেন - (ক) চলচ্চিত্রের সঙ্গে (খ) ক্রীড়াজগতের সঙ্গে (গ) স্থানীয় ইতিহাস চর্চার সঙ্গে (ঘ) পরিবেশের ইতিহাস চর্চার সঙ্গে।
উত্তর :- চলচ্চিত্রের সঙ্গে।
বিভাগ - খ
সত্য বা মিথ্যা নির্নয় করো :-
২.২.১ সোমপ্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষন।
উত্তর :- বিবৃতিটি সত্য।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (আলোচ্য প্রশ্নটি ছকের আকারে এসেছিলো। এখানে প্রশ্নের আকারে দেওয়া হলো 👇)
২.৩.১ "বঙ্গদর্শন" পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর :- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর :- নিন্মলিখিত কারনে আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয় -
(i) বৃহত্তর পরিসরে ইতিহাস রচনা করতে গিয়ে এমন অনেক বিষয় থাকে, যা ইতিহাসে উপেক্ষিত থেকে যায়। স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে সেই ফাঁক পূরন করা সম্ভব হয়।
(ii) স্থানীয় ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা আঞ্চলিক লোকপরম্পরা, শিল্প স্থাপত্যের বিকাশ, আর্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি রূপরেখা পাই। তাছাড়া,
(iii) স্থানীয় ইতিহাস জাতীয় ইতিহাসের ধারাকে আরোও শক্তিশালী ও বলিষ্ঠ করে তোলে। জাতীয় ঘটনাবলীর শিকড় আঞ্চলিক স্তরে কতদূর প্রসারিত হতে পেরেছিলো, তা একমাত্র স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চার মধ্য দিয়েই নিখুঁত ভাবে জানা সম্ভব হয়।
৩.২ "সরকারি নথিপত্র" বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :- সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মচারী ও আধিকারিকদের লিপিবদ্ধ বিবরন, প্রতিবেদন ও চিঠিপত্রকেই এককথায় "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।
অর্থাৎ সহজ করে বলতে গেলে সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম লিখিত ডকুমেন্টের মধ্য দিয়েই পরিচালিত হয়। এই লিখিত ডকুমেন্ট বা তথ্য গুলিকেই "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।
৩.৩ সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর :- সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রের মধ্যে প্রধান পার্থক্য গুলি হলো -
(i) সাময়িকপত্র নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত পত্রিকা। কিন্তু সংবাদপত্র দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত পত্রিকা।
(ii) সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয় দামি কাগজে। কিন্তু সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে তুলনামূলক সস্তা দামের কাগজে।
(iii) সাময়িকপত্র বাঁধাই আকারে থাকে। কিন্তু সংবাদপত্র বাঁধাই আকারে থাকে না। তা বাঁধাইহীন আকারে প্রকাশিত হয়।
(iv) সাময়িকপত্রে তাৎক্ষণিক সংবাদের দিকে ঝোঁক নেই। অন্যদিকে সংবাদপত্রে তাৎক্ষণিক বা সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া খবরই মূলত প্রকাশিত হয়।
(v) সাময়িকপত্রের দাম সবসময়ই সংবাদপত্রের থেকে বেশি হয়।
(vi) সাময়িকপত্রে ব্যক্তিগত মতামত গুরুত্ব পায়। কিন্তু সংবাদপত্রে ব্যক্তিগত মতামতের গুরুত্বের তেমন জায়গা নেই।
মাধ্যমিক - ২০২০ (০৮ নম্বরের প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয় - (ক) ৮ ই জানুয়ারি (খ) ২৪ জানুয়ারি (গ) ৮ মার্চ (ঘ) ৫ জুন।
উত্তর :- ৫ ই জুন।
১.২ ভারতীয়রা আলুর ব্যবহার শিখেছিলো যাদের কাছ থেকে - (ক) পোর্তুগিজ (খ) ইংরেজ (গ) মুঘল (ঘ) ওলন্দাজ।
উত্তর :- পোর্তুগিজ।
বিভাগ - খ
একটি বাক্যে উত্তর দাও :-
২.১.১ বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী গ্রন্থের নাম কী?
উত্তর :- সত্তর বৎসর।
ঠিক বা ভুল নির্নয় করো :-
২.২.১ "নদীয়া কাহিনী" গ্রন্থটি "শহরের ইতিহাস" এর অন্তর্গত।
উত্তর :- বিবৃতিটি ভুল। (সঠিক - স্থানীয় ইতিহাসের অন্তর্গত)
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদান রূপে "সরকারি নথিপত্রের" সীমাবদ্ধতা কী ?
উত্তর :- ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সরকারি নথিপত্রের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এগুলি হলো -
- সরকারি নথিপত্র হিসাবে আধিকারিকদের প্রতিবেদন, রিপোর্ট ও চিঠিপত্র গুলি থেকে কেবলমাত্র সরকারি বক্তব্যটুকুই জানতে পারা যায়।
- এইসব রিপোর্টগুলি শাসকগোষ্টির দৃষ্টিকোন থেকেই লেখা হয়েছিলো। সুতরাং তা সবসময় নিরপেক্ষ ছিলো না। উদাহরন হিসাবে বলা যায়, উনিশ শতকের উপজাতি ও কৃষক বিদ্রোহ গুলিকে সরকারি নথিপত্রে অসভ্য মানুষদের হাঙ্গামা বলা হয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না।
- বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গোয়েন্দা ও পুলিশ রিপোর্ট ভুলে ভরা ও বিকৃত থাকে।
- অনেক সময় সরকারি রিপোর্ট গোপনই থেকে যায়। তা প্রকাশ্যে আনা হয় না। যেমন নেতাজী সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র তফতরের হাতে থাকা নথি গুলি স্বাধীনতার এত বছর পরও প্রকাশ্যে আসে নি।
- বহু সরকারি নথি নষ্টও করে দেওয়া হয়। সরকারি নথির এই সকল সীমাবদ্ধতার জন্য অতীত ইতিহাসের অনেক দিক আজও অজানাই থেকে গেছে।
৩.২ "আত্মজীবনী" ও "স্মৃতিকথা" বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :- আত্মজীবনী :- আত্মজীবনী হলো কোন ব্যক্তির "নিজস্ব জীবনকথা"। এটি এমন এক ধরনের অ - উপন্যাসধর্মী সাহিত্য, যেখানে ব্যক্তি জীবনের আখ্যানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সমকালীন নানা ঘটনা ও সমাজ সংস্কৃতির আখ্যান।
স্মৃতিকথা :- স্মৃতিকথা হলো কোন ব্যক্তির অতীত জীবনে ফেলে আসা স্মরনীয় কোন ঘটনা বা বিশেষ কোন মুহূর্তের "স্মৃতিচারণ মূলক বিবরন"।
আত্মজীবনীর মতো স্মৃতিকথাও স্বনামধন্য, বিখ্যাত ব্যক্তিরা সারধনত লিখে থাকেন।
মাধ্যমিক - ২০২২ (১০ নম্বরের প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ সত্যজিৎ রায় যুক্ত ছিলেন - (ক) খেলার ইতিহাসে (খ) শহরের ইতিহাসে (গ) নারীর ইতিহাসে (ঘ) শিল্প চর্চার ইতিহাসে।
উত্তর :- শিল্প চর্চার ইতিহাস
১.২ রেশম আবিষ্কৃত হয় প্রাচীন - (ক) ভারতে (খ) রোমে (গ) পারস্যে (ঘ) চীন দেশে।
উত্তর :- চীন দেশে।
১.৩ "নিষিদ্ধ শহর" বলা হয় - (ক) লাসাকে (খ) বেইজিংকে (গ) রোমকে (ঘ) কনস্ট্যান্টিনোপলকে।
উত্তর :- লাসাকে।
১.৪ "বঙ্গদর্শন" সাময়িক পত্রটি ছিলো একটি - (ক) সাপ্তাহিক পত্রিকা (খ) পাক্ষিক পত্রিকা (গ) মাসিক পত্রিকা (ঘ) বাৎসরিক পত্রিকা।
উত্তর :- মাসিক পত্রিকা।
বিভাগ - খ
একটি বাক্যে উত্তর দাও :-
২.১.১ কোন বছর "সোমপ্রকাশের" প্রকাশনা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়?
উত্তর :- ১৮৮৯ খ্রিঃ।
২.১.২ কলকাতার ঔপনিবেশিক স্থাপত্য গুলির যে কোন একটি উল্লেখ করো।
উত্তর :- ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল / রয়টার্স বিল্ডিং /কলকাতা হাইকোর্ট।
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী?
উত্তর :- সামরিক ইতিহাস চর্চার প্রধান গুরুত্ব গুলি হলো -
(i) সামরিক ইতিহাস চর্চা থেকে যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধ কৌশল এবং যুদ্ধ প্রযুক্তির নানা দিক গুলির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়।
(ii) সামরিক ইতিহাস থেকে একটি যুদ্ধের কারন, প্রকৃতি এবং যুদ্ধের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কেও ধারনা লাভ করা যায়। সর্বোপরি,
(iii) সামরিক ইতিহাস চর্চার আলোকে একটি দেশ তার সামরিক সক্ষমতা ও বিবর্তন সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারে।
৩.২ "সরকারি নথিপত্র" বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :- সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মচারী ও আধিকারিকদের লিপিবদ্ধ বিবরন, প্রতিবেদন ও চিঠিপত্রকেই এককথায় "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।
অর্থাৎ সহজ করে বলতে গেলে সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম লিখিত ডকুমেন্টের মধ্য দিয়েই পরিচালিত হয়। এই লিখিত ডকুমেন্ট বা তথ্য গুলিকেই "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।
মাধ্যমিক - ২০২৩ (০৭ নম্বরের প্রশ্ন পড়েছে)
বিভাগ - ক
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :-
১.১ রাচেল কারসন যুক্ত ছিলেন - (ক) আঞ্চলিক ইতিহাসে (খ) নারীর ইতিহাসে (গ) পরিবেশের ইতিহাসে (ঘ) শহরের ইতিহাসে।
উত্তর :- পরিবেশের ইতিহাসে।
১.২ বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গদর্শন পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন - (ক) তিন বছর (খ) চার বছর (গ) দশ বছর (ঘ) বারো বছর।
উত্তর :- চার বছর।
বিভাগ - খ
ঠিক বা ভুল নির্নয় করো :-
২.২.১ বিপিনচন্দ্র পালের জীবনীগ্রন্থের নাম "সত্তর বৎসর"।
উত্তর :- বিবৃতিটি সঠিক।
বিভাগ - গ
দুটি অথবা তিনটি বাক্যে উত্তর দাও :-
৩.১ ভারতের জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে ১৯১১ খ্রিঃ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর :- ভারতের জাতীয়তাবাদের ইতিহাসে ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দটি দুটি ঐতিহাসিক ঘটনার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, ১৯১১ খ্রিঃ স্বদেশী আন্দোলনের চাপে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হন। ফলে ব্রিটিশ সরকারের ভেদ নীতিকে ব্যর্থ করে দিয়ে দুই বাংলা পুনরায় একত্রিত হয়।
দ্বিতীয়ত, ১৯১১ খ্রিঃ ২৯ শে জুলাই, মোহনবাগান ক্লাব ইউরোপীয় সিভিল ও মিলিটারি দলকে হারিয়ে আই এফ এ শিল্ড জয় করেছিলো। ফুটবল খেলার মধ্য দিয়ে ইংরেজদের পরাজিত করবার ঘটনায় সারা বাংলায় প্রবল গন উদ্মাদনা, গভীর আত্মবিশ্বাস ও জাতীয়তাবাদী চেতনার সঞ্চার ঘটে।
এই প্রবল জাতীয়তাবাদী চেতনায় ভীত হয়েই ব্রিটিশ সরকার ১৯১১ খ্রিঃ কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেছিলো বলে ড. রামচন্দ্র গুহ অভিমত প্রকাশ করেন।
৩.২ "সরকারি নথিপত্র" বলতে কী বোঝায়?
উত্তর :- সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মচারী ও আধিকারিকদের লিপিবদ্ধ বিবরন, প্রতিবেদন ও চিঠিপত্রকেই এককথায় "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।
অর্থাৎ সহজ করে বলতে গেলে সরকারের যাবতীয় কাজকর্ম লিখিত ডকুমেন্টের মধ্য দিয়েই পরিচালিত হয়। এই লিখিত ডকুমেন্ট বা তথ্য গুলিকেই "সরকারি নথিপত্র" বলা হয়।