ফরাসি বিপ্লবের কারন
১. ফরাসি বিপ্লবের সামাজিক কারন কি ছিলো?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের মূল সামাজিক কারন ছিলো -
(ক.) ফ্রান্সের বৈষম্যমূলক সমাজ জনিত ক্ষোভ এবং
(খ.) শ্রেনীগত দ্বন্দ্বের সংঘাত।
ফরাসি সমাজ ৩ টি শ্রেনীতে বিভক্ত ছিলো। যথা - (১.)যাজক, (২.)অভিজাত ও (৩.)তৃতীয় সম্প্রদায়।
সমাজের মাত্র এক থেকে দেড় শতাংশের হয়েও যাবতীয় সম্পদ, আর্থ - সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ও সম্মান সমাজের প্রথম দুটি শ্রেনী কুক্ষিগত করে রেখেছিলো। অথচ ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার ৯৭% হয়েও বংশকৌলিন্য না থাকায় "তৃতীয় সম্প্রদায়" সমস্ত সুযোগ ও সম্মান থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এইজন্য তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষের মনে ক্ষোভ জন্মেছিলো।
ফ্রান্সের সমাজ কাঠামোতে কেউই সন্তুষ্ট ছিলেন না।সমাজে তৃতীয় সম্প্রদায়ের ক্ষোভ ছিলো যাজক ও অভিজাতদের প্রতি। নিন্মতর যাজকদের ক্ষোভ ছিলো উচ্চতর যাজকদের প্রতি। পোশাকি অভিজাতদের ক্ষোভ ছিলো দরবারি অভিজাতদের প্রতি। ফ্রান্সের এই সামাজিক শ্রেনীগত দ্বন্দ্ব ও অন্তর্দ্বন্দ্ব জনিত ক্ষোভের কারনে "সামাজিক সাম্য" প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লব হয়েছিলো।
২. "এস্টেড" বলতে কি বোঝ?
উত্তর :- অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সের সমাজে ৩ টি শ্রেনী বা স্তর ছিলো। এই এক একটি স্তর "এস্টেট" নামে পরিচিত ছিলো।
৩. ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের সমাজে কটি এস্টেড ছিলো ও কি কি?
উত্তর :- ৩ টি। প্রথম এস্টেডে ছিলেন যাজকরা। দ্বিতীয় এস্টেডে ছিলেন অভিজাতরা। এবং যাজক ও অভিজাত বাদ দিয়ে বাকি সকল পেশার মানুষরা তৃতীয় এস্টেডের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
৪. ফরাসি বিপ্লবের সময় যাজকদের সামাজিক অবস্থান কেমন ছিলো?
উত্তর :- যাজকরা ফ্রান্সের সমাজ কাঠামোতে প্রথম এস্টেডের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এরা ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম ছিলেন। ফ্রান্সের মোট কৃষিজমির ১/৫ ভাগ এরা ভোগদখল করতেন। এরা রাষ্ট্রকে কোন কর দিতেন না। অথচ টাইথ বা ধর্মকর, মৃত্যুকর, বিবাহ কর ইত্যাদি বেআইনি কর আদায় করতেন। ফরাসি সমাজে সবথেকে সুবিধা ভোগী শ্রেনীতে ছিলেন যাজকরা। বিপ্লবের আগে যাজকদের একটি বড়ো অংশের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছিলো।
৫. ফরাসি বিপ্লবের সময় যাজক শ্রেনী কটি ভাগে বিভক্ত ছিলো ও কি কি?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের যাজকরা - (১.)উচ্চতর যাজক ও (২.)নিন্মতর যাজক এই দুই ভাগে বিভক্ত ছিলেন।
উচ্চতর যাজকদের মধ্যে ছিলেন - বিশপ, ক্যানন ও বিভিন্ন খ্রিষ্টান মঠের অধ্যক্ষরা। অন্যদিকে গ্রামের ছোট ছোট চার্চের পাদরিরা নিন্মতর যাজকদের মধ্যে পড়তেন।
৬. ফরাসি বিপ্লবের সময় অভিজাতদের সামাজিক অবস্থান কেমন ছিলো?
উত্তর :- অভিজাতরা ফ্রান্সের সমাজ কাঠামোতে দ্বিতীয় এস্টেডের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। এরা ছিলো ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার মাত্র দেড় শতাংশ। ফ্রান্সের মোট কৃষিজমির তিন ভাগের এক ভাগ এদের দখলে ছিলো। এরা সরকারকে কোন কর প্রদান করতো না। অথচ সমস্ত সরকারি চাকুরি ও দরবারি পদ বংশকৌলিন্যের জোরে এরা ভোগদখল করতো। বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সে সবথেকে সুবিধাবাদী শ্রেনীতে ছিলো অভিজাতরা।
৭. ফরাসি বিপ্লবের সময় অভিজাত শ্রেনী কটি ভাগে বিভক্ত ছিলো ও কি কি?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের অভিজাতরা - (১.) দরবারি অভিজাত ও (২.) পোশাকি অভিজাত ও (৩.) গ্রামীন অভিজাত এই ৩টি ভাগে বিভক্ত ছিলো।
৮. দরবারি অভিজাত কাদের বলা হত?
উত্তর :- ফ্রান্সে জন্মসূত্রে অভিজাতদের "দরবারি অভিজাত" বলা হতো। এদের নীল রক্ত ছিলো বলে এরা বংশ পরম্পরায় "আভিজাত্য" অর্জন করতেন। রাজদরবারে গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলি এদের একচেটিয়া দখলে ছিলো বলে এদের "দরবারি অভিজাত" বলা হতো। ফ্রান্সে এদের মোট সংখ্যা ছিলো মাত্র চার হাজার।
৯. ফ্রান্সে দরবারি অভিজাতরা আর কি কি নামে পরিচিত ছিলেন?
উত্তর :- জন্মসূত্রে অভিজাত/সাবেক অভিজাত/অসিধারী অভিজাত প্রভৃতি নামে পরিচিত ছিলেন।
১০. পোশাকি অভিজাত কাদের বলা হতো?
উত্তর :- বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সে ধনী বুর্জোয়াদের একাংশ নিজেদের সামাজিক মর্যাদা ও ক্ষমতা লাভের জন্য অনেক সময় পার্লেমেন্টের বিচারকের পদ বা ইন্টেন্ডেন্টের পদ কিনে নিয়ে বংশানুক্রমিক ভাবে তা ভোগ করতো। পদমর্যাদার জোরে এরা অভিজাত হয়েছিলো বলে এদের "পোশাকি অভিজাত" বলা হতো।
বংশকৌলিন্য না থাকায় দরবারি অভিজাতরা পোশাকি অভিজাতদের অবজ্ঞার চোখে দেখতো।
১১. বুর্জোয়া কাদের বলা হতো?
উত্তর :- বুর্জোয়ারা ছিলো বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সের তৃতীয় সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত একটি উপ শ্রেনী। "বুর্জোয়া" বলতে সাধারনত পুঁজিপতি বা অর্থনৈতিক দিকে স্বচ্ছল শ্রেনীকে বোঝায়। ফরাসি বিপ্লবের সময় শহরে বসবাসকারী ধনী শিল্পপতি, ব্যাঙ্কার, ব্যবসায়ী, সাধারন দোকানদার, কারিগর, চাকুরিজীবীদের "বুর্জোয়া" বলা হতো। বুর্জোয়ারা ছিলো ফরাসি সমাজের সবচেয়ে অসন্তুষ্ট শ্রেনী।
১২. বুর্জোয়া শব্দের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিলো?
উত্তর :- "বুর্জোয়া" একটি ফরাসি শব্দ। মধ্যযুগে ফ্রান্সের নগরগুলি প্রাচীর দ্বারা ঘেরা থাকতো। এই প্রাচীর ঘেরা অংশকে বলা হতো "বার্জ" (Burg)। বার্জের অভ্যন্তরে যারা ব্যবসা বানিজ্য, শিল্প ও কারিগরি কাজকর্ম দ্বারা জীবিকা অর্জন করতো তাদের বলা হতো "বার্জেস"। এই "বার্জেস" কথাটি থেকেই "বুর্জোয়া" কথাটির উদ্ভব হয়েছিলো।
পরবর্তীকালে শহরবাসী যেকোন ব্যবসায়ী,শিল্পী ও কারিগর প্রভৃতি অর্থনৈতিক দিকে স্বচ্ছল বা পুঁজিপতি শ্রেনীকে "বুর্জোয়া" নামে ডাকা হয়।
১৩. সাঁ - কুলোৎ নামে কারা পরিচিত ছিলেন?
উত্তর :- বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সের তৃতীয় সম্প্রদায়ের একটি উপশ্রেনী ছিলো "সাঁ - কুলোৎ"। এরা ছিলো খেটে খাওয়া ভবঘুরে শহরবাসী প্রলিতারিয়েত বা শ্রমজীবী মানুষ। দিনমজুর, কারখানার শ্রমিক, কারিগর, বাগানের মালিক, রাজ মিস্ত্রি, জেলে, গৃহভৃত্য প্রমুখ ছিলো এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
১৪. "তৃতীয় সম্প্রদায়" নামে কারা পরিচিত ছিলো?
উত্তর :- যাজক ও অভিজাত বাদ দিয়ে ফ্রান্সের অবশিষ্ট অংশের জনসাধারণ "থার্ড এস্টেড" বা "তৃতীয় সম্প্রদায়" নামে পরিচিত ছিলেন। এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ব্যবসায়ী, কারিগর, শিল্পী, দোকানদার, উকিল, শিক্ষক, চাকুরীজীবী, শ্রমিক, কৃষক, সাঁকুলেৎ বা ভবঘুরে দীনমজুর। ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার ৯৭% ছিলো তৃতীয় সম্প্রদায়।
১৫. ফরাসি বিপ্লবের পিছনে অর্থনৈতিক কারন কি ছিলো?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের পিছনে অর্থনৈতিক ক্ষোভের প্রধান কারন গুলি ছিলো -
(১.) বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সের ত্রুটিপূর্ন কর কাঠামোর জন্য যাদের কর দেওয়ার ক্ষমতা ছিলো সেই যাজক ও অভিজাতদের ওপর কোন কর বসানো হয় নি।
(২.) যাবতীয় কর অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত তৃতীয় সম্প্রদায়ের ওপর চাপানো হয়েছিলো।
(৩.) তৃতীয় সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কৃষকরা বিভিন্ন সামন্ততান্ত্রিক কর ভারে জর্জরিত ছিলো।
(৪.) ফরাসি রাজ পরিবারের বিলাসপূর্ন জীবন যাপন ও ভ্রান্ত যুদ্ধনীতি ফ্রান্সের রাজকোষকে শূন্য করে দিয়েছিলো।
(৫.) ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ শুল্ক নীতি ও শিল্প নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা অবাধ বানিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তৃতীয় সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত পুঁজিপতি বুর্জোয়াদের অসন্তুষ্ট করে।
(৬.) প্রাক্ বিপ্লব ফ্রান্সে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তৃতীয় সম্প্রদায়ের নিন্মবর্গের মানুষদের ক্ষুব্ধ করে তোলে।
মূলত তৃতীয় সম্প্রদায়ের বহুবিধ অর্থনৈতিক ক্ষোভের কারনেই ফ্রান্সে বিপ্লব হয়।
১৬. ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের কর ব্যবস্থা কেমন ছিলো?
উত্তর :- (১.) ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের কর কাঠামো ছিলো বৈষম্যমূলক ও ভ্রান্ত নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(২.) যাবতীয় কর তৃতীয় সম্প্রদায়কে দিতে হতো।
(৩.) যাজক ও অভিজাতরা কোন কর দিতো না।
(৪.) কৃষক সম্প্রদায়কে বহুবিধ সামন্ততান্ত্রিক কর প্রদান করতে হতো।
(৫.) নানা ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করভারে তৃতীয় সম্প্রদায়ের জীবন জর্জরিত ছিলো।
১৭. ফরাসি বিপ্লবের পিছনে রাজনৈতিক কারন কি ছিলো?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের পিছনে রাজনৈতিক ক্ষোভের প্রধান কারন গুলি ছিলো -
(১.) বিপ্লব পূর্ব ফ্রান্সের বুরবোঁ রাজবংশ ছিলো সীমাহীন স্বৈরাচারী ও জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন।
(২.) রাজাদের অদক্ষতা ও দুর্বলতায় ফ্রান্সে দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। দেশ অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
(৩.) ভ্রান্ত কর ব্যবস্থা ও রাজপরিবারের অবাঞ্ছিত বিলাসপ্রিয়তায় রাজকোষ শূন্য হয়ে যায়।
(৪.) স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র ছিলো সংস্কার বিমুখ এবং পুরাতনতন্ত্র, সামন্ততন্ত্র, অভিজাততন্ত্র, ও যাজকতন্ত্রের রক্ষক। এজন্য ফ্রান্সে বিপ্লব হয়।
১৮. ফরাসি বিপ্লবের পিছনে দার্শনিকদের ভূমিকা কি ছিলো?
উত্তর :- দার্শনিকরা ফরাসি বিপ্লবে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত না থাকলেও, তারা -
(১.) পুরাতনতন্ত্রের দোষ ত্রুটি গুলি তুলে ধরেন,
(২.) স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র, দুর্নীতিপরায়ন গির্জা ও বৈষম্যমূলক সমাজের নিরন্তর সমালোচনা করে পুরাতনতন্ত্রের প্রতি মানুষের যাবতীয় আস্থা ও আনুগত্য নষ্ট করে দেন। এর ফলে বিপ্লবের ভাব তরঙ্গ সৃষ্টি হয়।
(৩.) মনে রাখতে হবে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষোভ থাকলেই বিপ্লব হয় না। তার জন্য চাই মানসিক প্রস্তুতি ও বিপ্লব মনস্কতা। দার্শনিকরা সামাজিক চুক্তি, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতি প্রভৃতি কয়েকটি দার্শনিক মতাদর্শ দ্বারা বিপ্লবের স্বপক্ষে মানসিক প্রেক্ষাপট রচনা করেন।
১৯. ফরাসি বিপ্লবের "ঝড়ের পাখি" কাকে বলা হয়? অথবা,
ফরাসি বিপ্লবের "প্রিন্স" কাকে বলা হয়?
অথবা, "ফরাসি বিপ্লবের জনক" কাকে বলা হয়?
উত্তর :- ফরাসি দার্শনিক রুশোকে।
২০. রুশোর সম্পূর্ণ নাম কি?
উত্তর :- জাঁ জেকুইস রুশো।
২১. রুশোর লেখা দুটি গ্রন্থের নাম কর।
উত্তর :- (ক.) "কনট্রাক্ট সোসিয়েল" (১৭৬২ খ্রিঃ প্রকাশিত),
(খ.) "ডিসকোর্স অন ইন ইকোয়ালাটি",
(গ.) "এমিল",
(ঘ.) "হেলোইজ",
(ঙ) কনফেশনস (১৭৭০ খ্রিঃ প্রকাশিত),
(চ) ডিসকোর্সেস অন পলিটিক্যাল ইকোনমি (১৭৫৫ খ্রিঃ প্রকাশিত) ।
২২. সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবক্তা কে ছিলেন?
উত্তর :- রুশো।
২৩. ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের সম্পূর্ণ নাম কি ছিলো?
উত্তর :- মারি ফ্রাঁসোয়া আরুয়েৎ।
২৪. ভলতেয়ারের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম কর।
উত্তর :- "লেতর ফিলোজফিক" (১৭৩৪ খ্রিঃ প্রকাশিত), "কাঁদিদ" (১৭৫৯ খ্রিঃ প্রকাশিত)।
২৫. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির প্রবক্তা কে ছিলেন?
উত্তর :- চার্লস ডি মন্তেস্কু।
২৬. মন্তেস্কুর লেখা দুটি গ্রন্থের নাম কি?
উত্তর :- "পার্সিয়ান লেটার্স" (১৯২১ খ্রিঃ প্রকাশিত), "দ্য স্পিরিট অব লজ" (১৭৪৮ খ্রিঃ প্রকাশিত)।
২৭. ফিজিওক্রাটস কাদের বলা হতো?
উত্তর :- ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে একদল অর্থনীতিবিদের আবির্ভাব ঘটেছিলো, যারা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি মার্কেনটাইলবাদের বিরোধিতা করে অবাধ বানিজ্য নীতি ও বেসরকারী শিল্প স্থাপনের দাবি তোলেন। এই অর্থনীতিবিদদেরই বলা হতো "ফিজিওক্রাটস"।
ফ্রান্সে কুইসনে ছিলেন এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা।
২৮. "দি ওয়েলথ অব নেশনস্" গ্রন্থের লেখক কে?
উত্তর :- অ্যাডাম স্মিথ।
২৯. ফ্রান্সে বিশ্বকোষ কারা সংকলন করেন?
উত্তর :- ডেনিস দিদেরো ও ডি এলেমবার্ট।
৩০. "যদি ঈশ্বর না থাকেন, তবে তাকে সৃষ্টি করার প্রয়োজন আছে" - এটি কার উক্তি?
উত্তর :- ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের।
৩১. ফরাসি বিপ্লবকে প্রভাবিত করেছিলেন এমন দুজন দার্শনিকের নাম কর।
উত্তর :- রুশো, মন্তেস্কু, ভলতেয়ার।
৩২. "তাবলো ইকোনমিক" কার লেখা?
উত্তর :- কুইসনের লেখা।
৩৩. ফ্রান্সের কোন দার্শনিক ব্যাঙ্গাত্মক রচনায় পারদর্শী ছিলেন?
উত্তর :- ভলতেয়ার।
৩৪. "বিশ্বকোষ" কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর :- ১৭৫১ খ্রিঃ।
ফরাসি দার্শনিকদের গ্রন্থ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
দার্শনিক | গ্রন্থ | গুরুত্বপূর্ণ তথ্য |
---|---|---|
জাঁ জ্যাক রুশো | ১. কট্রাক্ট সোসিয়েল, ২. ডিসকোর্স অন ইন ইকোয়ালিটি, ৩. হেলোইজ, ৪. এমিল | সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন। রুশোকে ফরাসি বিপ্লবের ঝড়ের পাখি বলা হয়। |
ভলতেয়ার | ১. লেতর ফিলোজফিক, ২. কাঁদিদ | প্রকৃত নাম ছিলো মারি ফ্রাঁসোয়া আরুয়েৎ। তিনি তার ব্যাঙ্গাত্মক রচনা গুলিতে ক্যাথলিক গির্জার দুর্নীতি ও ভন্ডামিকে আক্রমণ করতেন। |
মন্তেস্কু | ১.পার্সিয়ান লেটার্স, ২. দ্য স্পিরিট অব লজ | ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরন নীতির প্রবক্তা ছিলেন। |
ডেনিস দিদেরো ও ডি এলেমবার্ট | বিশ্বকোষ | ৩৫ টি খন্ডে এই বিশ্বকোষ প্রকাশিত হয় (১৭৫১ - ১৭৮০) |
ফ্রান্সিস কুইসনে | তাবলো ইকোনমিক | ফ্রান্সে ফিজিওক্রাটস মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন |