উচ্চশিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান

 ভারতে উচ্চ শিক্ষার বিস্তারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিলো "আলোকবর্তিকা"স্বরূপ।

  • কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো ইংরেজ শাসিত ভারতের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়
  • সমগ্র এশিয়া মহাদেশের সবথেকে পুরানো আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এবং
  • ভারতের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলির মধ্যে সবথেকে প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়
মনে রাখতে হবে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ভারতকে উচ্চশিক্ষার আলোতে আলোকিত করে নি, এর আলোর ছটা ও দ্যুতি ভারতের মূল ভূখন্ড ছাড়িয়ে সুদূর লাহোর থেকে রেঙ্গুন পর্যন্তও প্রসারিত হয়েছিলো।

উচ্চশিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান
উচ্চ শিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট

  1. ১৮৫৪ খ্রিঃ চার্লস উডের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ভারতে উচ্চশিক্ষার বিকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ, এবং 
  2. ১৮৫৭ খ্রিঃ ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষা সচিব জন কে র রিপোর্টের ভিত্তিতেই - ১৮৫৭ খ্রিঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। 
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

প্রতিষ্ঠা দিবস 

১৮৫৭ খ্রিঃ ২৪ জানুয়ারি, বড়োলাট লর্ড ক্যানিং বিশ্ববিদ্যালয় আইনটিতে স্বাক্ষর করেন। তাই ২৪ জানুয়ারি দিনটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।

উদ্দেশ্য, দায়িত্ব ও কর্মসূচি

১৮৫৭ খ্রিঃ বিশ্ববিদ্যালয় আইনটিতে উচ্চশিক্ষার ভূমিকার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে কতকগুলি দায়িত্বকর্মসূচির অধিকার প্রদান করা হয়। এগুলি হল - 
  1. পরীক্ষা গ্রহন, 
  2. উপাধি প্রদান, 
  3. বিজ্ঞান ভিত্তিক পাঠ্যক্রম তৈরি, 
  4. কলেজ গুলির অনুমোদন প্রদান, 
  5. বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য আচার্য, উপাচার্য নিয়োগ ও সেনেট গঠন। 
অর্থাৎ প্রতিষ্ঠা লাভের প্রথম পর্বে উচ্চশিক্ষায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা প্রশাসনিক দায়িত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, পাঠদান এবং গবেষনার যে দিক গুলোর সঙ্গে আমরা আজ সুপরিচিত, এগুলির কোনটির কথাই ১৮৫৭ খ্রিঃ বিশ্ববিদ্যালয় আইনটিতে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয় নি। ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা এবং গবেষনার কাজ শুরু হয় নি। এর কর্মকান্ড মূলত প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র

  1. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্রে বলা হয়, ভারতের গর্ভনর জেনারেল তার পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নিযুক্ত হবেন। 
  2. বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম পরিচালনার জন্য একটি সেনেট গঠিত হবে। এই নিয়ম অনুযায়ী ১৮৫৭ খ্রিঃ ৬ জন ভারতীয় সহ ৪১ জনকে নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেনেট গঠন করা হয়। এবং
  3. সেনেটের মধ্য থেকে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে তদারকি ও পরিচালিত করবার জন্য একজন উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। 
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এর - 
  • প্রথম আচার্য নিযুক্ত হন - লর্ড ক্যানিং। 
  • প্রথম উপাচার্য নিযুক্ত হন - স্যার জেমস উইলিয়াম কোলভিল। 
  • ১৮৫৭ থেকে টানা ১৮৮৯ খ্রিঃ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের সকল উপাচার্যরাই ছিলেন - ইওরোপীয়। 
  • এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ভারতীয় উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছিলেন - স্যার গুরুদাস ব্যানার্জি (১৮৯০ - ১৮৯২)।

ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব বৃদ্ধি :- 

১৮৫৭ খ্রিঃ বিশ্ববিদ্যালয় আইনটিতে উচ্চশিক্ষায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের করনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট কোন নির্দেশিকা ছিলো না। ইতিমধ্যে লর্ড কার্জন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ দিতে এলে সিনেটের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের করনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে একটি স্পষ্ট নির্দেশিকার দাবি জানান। 

এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার উন্নয়ন ও সুপারিশের জন্য লর্ড কার্জন ১৯০২ খ্রিঃ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করেন এবং তার সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯০৪ খ্রিঃ "ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন" প্রণয়ন করেন। 

এই আইনের ফলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় - 
  1. শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দানের অধিকার লাভ করে। 
  2. গবেষণার বিষয়ে কাজ করার অধিকার পায়। 
  3. কলেজ পরিদর্শন, কলেজ গুলির অনুমোদনে কঠোর নিয়ম নীতি লাগু করা, অধ্যাপক নিয়োগ এবং গবেষনাগার তৈরির অধিকার লাভ করে। 

আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অভূতপূর্ব অগ্রগতির নেপথ্যে একজন ব্যক্তির অসামান্য ভূমিকা ছিলো। তিনি ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। 

স্যার আশুতোষ ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ভারতীয় উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কার্যকাল ছিলো যথাক্রমে - ১৯০৬ - ১৯১৪ এবং ১৯২১ - ১৯২৩

১৯২৩ খ্রিঃ গর্ভনর লর্ড লিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্ত্বশাসন খর্ব করতে চাইলে স্যার আশুতোষ এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। এর ফলে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে তার মতান্তর ঘটে। এই সময়ে অপরাজেয় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে তার দুঃসাহসিক প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য তিনি "বাংলার বাঘ" নামে খ্যাত হন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়ন

যাইহোক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য থাকাকালীন সময়ে এর উৎকর্ষ সাধনের জন্য স্যার আশুতোষ একের পর এক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। 
  1. তিনি শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিন স্কুল কলেজ গুলির ব্যাপক সংস্কার করেন। 
  2. বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের মধ্যে একটি বৈচিত্র্য নিয়ে আসেন। 
  3. বিজ্ঞান, কলা এবং কারিগরি শিক্ষায় নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন। 
  4. বিজ্ঞান শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিখ্যাত পন্ডিত ও অধ্যাপকদের এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনারের ব্যবস্থা করেন। 
  5. গবেষণাগার ও গ্রন্থাগারকে ঢেলে সাজিয়ে তোলেন। 
  6. এছাড়া, স্নাতকোত্তর পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদানেরও ব্যবস্থা করেন। 

ভারতীয়দের অর্থ সাহায্য 

স্যার আশুতোষের এই বিরাট কর্মকান্ডে সরকার অর্থ বরাদ্দে কার্পণ্য করলেও, আশুতোষ দমে যান নি। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষ সাধনে বহু প্রখ্যাত ভারতীয় বিভিন্ন সময়ে অর্থ সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন - 
  • প্রসন্নকুমার ঠাকুর, 
  • প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ, 
  • দ্বারভাঙ্গার মহারাজ রামেশ্বর সিং, 
  • তারকনাথ পালিত, 
  • রাসবিহারী ঘোষ, 
  • মহারাজা মনিন্দ্রচন্দ্র, 
  • নীলরতন সরকার। 

আশুতোষ উত্তর সময় 

  • স্যার আশুতোষ মুখার্জি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নের যে ধারার সূত্রপাত করেন, সেই ধারা তার পরবর্তীকালের ৩৫ জন সুযোগ্য উপাচার্যের নেতৃত্বে (১৯২৩ - ১৯৪৭) অব্যাহত থাকে।
  • এইসব স্বনামধন্য উপাচার্যদের মধ্যে ছিলেন -  ডঃ নীলরতন সরকার, স্যার যদুনাথ সরকার, ডঃ হাসান সোহরাওয়ার্দী, ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, ডঃ বিধানচন্দ্র রায়, ডঃ প্রমথনাথ ব্যানার্জি এবং আরোও অনেকে। 

উচ্চশিক্ষায় অবদান

ভারতীয় উপমহাদেশে উচ্চশিক্ষার বিস্তারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতখানি অবদানের সাক্ষ্য রাখতে পেরেছিলো, তা নীচের বক্তব্য গুলি থেকেই বোঝা যায়।
  1. ১৮৫৭ খ্রিঃ প্রতিষ্ঠার সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ২৪৪। ১৯০২ খ্রিঃ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭,০০০। এই তথ্য পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায়, এদেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটেছিলো। 
  2. ভারতের প্রথম স্নাতক ( ১৮৫৮ - যদুনাথ বসু ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়), প্রথম মহিলা স্নাতক (১৮৮২ - চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়) থেকে শুরু করে এশিয়ার প্রথম ডিলিট (বেনীমাধব বড়ুয়া), সকলেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। 
  3. ১৮৮২ খ্রিঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছর পূর্তিকালেই তার এক্তিয়ার লাহোর থেকে রেঙ্গুন পর্যন্ত প্রসারিত হয়। এমনকি সিংহলও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিজেদের এক করে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। 
  4. ১৯৪৭ খ্রিঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষপঞ্জীতে ২১৬ টি অন্তর্ভুক্ত কলেজের নাম পাওয়া যায়। এ থেকে বোঝা যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে এদেশে উচ্চ শিক্ষার অগ্রগতির ধারা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে অব্যাহত ছিলো। 
  5. স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে স্নাতকোত্তর বিভাগ চালু হওয়ার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ও বিজ্ঞানের সক্রিয় গবেষণা কেন্দ্রে পরিনত হয় এবং সমগ্র বিশ্বে তা স্বীকৃতি লাভ করে। 
  6. ১৯৪৭ খ্রিঃ স্বাধীনতা লাভের আগে পর্যন্ত শিক্ষা পদ্ধতি ও কার্যক্রম নিয়ে যে বহুবিধ পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষনা চলে, তার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিলো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। 
  7. ভারতীয় ভাষা গুলির চর্চাপঠন পাঠনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই শুরু হয়। 
  8. পরবর্তীকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমানোর জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। ফলে দেশে উচ্চশিক্ষার আরোও প্রসার ঘটতে থাকে। 
স্বদেশী আন্দোলনের সময় অনেকেই মনে করতেন, ভারতীয়দের কেরানি তৈরি করে গোলাম করে রাখার উদ্দেশ্যেই গোলদিঘির পাড়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। এই কারনে অনেকেই সেসময় ব্যঙ্গ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে "গোলদিঘির গোলামখানা" বলে ডাকতেন।

বলা বাহুল্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পিছনে ভারতীয়দের এই আশঙ্কা অমূলক ছিলো। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মধ্যে কোন ঔপনিবেশিক স্বার্থ ছিলো, তা কখনোই বলা যায় না। বরং এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে ভারতীয়রা উচ্চশিক্ষার শেষতম স্তরে পৌঁছানোর সুযোগ লাভ করেছিলো। 

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন বা গবেষনার মান নিয়ে স্বাধীনতার পূর্বে কখনো কোন প্রশ্ন ওঠে নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এক স্বাধীন সংস্থা হিসাবেই ধীরে ধীরে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দিতে পেরেছিলো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত চারজন নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলে - রোনাল্ড রস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সি ভি রমন এবং অমর্ত্য সেন। এই গৌরব বিশ্বের খুব কম বিশ্ববিদ্যালয়েরই আছে। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র

পরিশেষে বলা যায়, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উৎকর্ষ এবং সাফল্য তার কৃতি ছাত্রদের কৃতিত্বের মধ্যেই প্রতিফলিত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য, কৃতি ছাত্রদের সুদীর্ঘ তালিকা প্রমান করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলো। 

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন - 
  • নোবেলজয়ী সি ভি রমন, 
  • জগদীশ চন্দ্র বসু, 
  • প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, 
  • সত্যেন্দ্রনাথ বসু, 
  • মেঘনাথ সাহা, 
  • হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী, 
  • রমেশচন্দ্র মজুমদার, 
  • নীহাররঞ্জন রায়, 
  • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, 
  • ডি আর ভান্ডারকর, 
  • সর্বপল্লী রাধাকৃষণন, এবং অরোও অনেক ব্যক্তি। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য 

  1. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবস - ১৮৫৭ খ্রিঃ ২৪ জানুয়ারি।
  2. প্রথম আচার্য - লর্ড ক্যানিং।
  3. প্রথম উপাচার্য - স্যার জেমস উইলিয়াম কোলভিল। 
  4. প্রথম ভারতীয় উপাচার্য - স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। 
  5. দ্বিতীয় ভারতীয় উপাচার্য - স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। 
  6. প্রথম স্নাতক - যদুনাথ বসু ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। 
  7. প্রথম মহিলা স্নাতক - চন্দ্রমুখী বসু ও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। 
  8. এশিয়ার প্রথম ডিলিট - বেনীমাধব বড়ুয়া। 
  9. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা হয় - লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে। 
  10. ১৯০৪ খ্রিঃ ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করেন - লর্ড কার্জন।
  11. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো - গোলদিঘির গোলামখানা। 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post