উনিশ শতকের সংস্কার আন্দোলন গুলির মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো "ব্রাহ্ম সমাজের আন্দোলন"। এটিকে একদিকে যেমন আমরা "সমাজ সংস্কার" আন্দোলন বলতে পারি, তেমনি "ধর্ম সংস্কার" আন্দোলনও বলতে পারি। কারন সমাজ ও ধর্ম দুটিরই সংস্কারের প্রচেষ্টা এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে চলেছিলো।
রামমোহন রায়ের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্মসমাজ |
ব্রাহ্মসভার প্রতিষ্ঠা ও রামমোহন রায়
উনিশ শতকে ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের প্রথম সূচনা করেন রাজা রামমোহন রায়। ১৮২৮ খ্রিঃ নিজের কয়েকজন অনুগামী ও বন্ধু বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে রামমোহন কলকাতায় "ব্রাহ্মসভা" প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার দু বছরের মাথায় যখন সভার সদস্য সংখ্যা অনেক বেড়ে গেলো, তখন ব্রাহ্ম সভার নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো "ব্রাহ্ম সমাজ"।
ব্রাহ্মসভার মূল উদ্দেশ্য
ব্রাহ্ম সভা প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিলো ৪ টি। যথা -
- একেশ্বরবাদের উপাসনা করা।
- পৌত্তলিকতা বা মূর্তিপুজার বিরোধীতা করা।
- হিন্দু ধর্মকে মূল বেদান্ত দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত করা, এবং
- সর্বধর্মের সমন্বয় সাধন করা।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, রামমোহন উত্তর ব্রাহ্ম সমাজের সংস্কারকদের নেতৃত্বে পরবর্তীকালে সমাজ সংস্কারের নানা কর্মসূচিও ব্রাহ্মসমাজের মূল উদ্দেশ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছিলো। সুতরাং সমাজ সংস্কার করাও ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম উদ্দেশ্য গুলির মধ্যে একটি ছিলো।
ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট
এখন প্রশ্ন হলো, রামমোহন রায় হঠাৎ করে ব্রাহ্ম সভার মতো একটি প্রতিষ্ঠান কেন তৈরি করতে গেলেন? আর ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠার পিছনের মূল প্রেক্ষাপট বা পটভূমি বা কি ছিলো?
ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিত বা কারনের কথা আলোচনা করতে গিয়ে ঐতিহাসিকরা দুটি ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। এই দুটি ঘটনাই রামমোহনকে ব্রাহ্ম সভা গঠনে উদ্বুদ্ধ করেছিলো বলে মনে করা হয়।
হিন্দু ধর্মের ওপর মিশনারিদের আক্রমণ
প্রথম ঘটনাটি ছিলো - হিন্দু ধর্মের ওপর খ্রিষ্টান মিশনারিদের আক্রমণ। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতে আগত খ্রিষ্টান মিশনারিরা তাদের পত্র পত্রিকাতে হিন্দু ধর্মকে নানা ভাবে আক্রমণ করতে আরম্ভ করেছিলেন। নানা অযৌক্তিক ভাবনা ও অপব্যাখ্যা থেকে তারা হিন্দু ধর্মকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন করবার চেষ্টা করলে রামমোহন অত্যন্ত ব্যথিত ও বিরক্ত হন এবং হিন্দু ধর্মকে মূল বেদান্ত দর্শনের ওপর প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য তিনি "ব্রাহ্মসভা" প্রতিষ্ঠা করেন।
এখানে একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, রামমোহন রায় পৃথিবীর সমস্ত মূল ধর্ম গুলিকেই পাঠ করেছিলেন। তিনি ১২ টি ভাষা জানতেন এবং মূল ভাষাতেই মূল ধর্মগ্রন্থ গুলি পাঠ করেছিলেন। এই কারনে তার মধ্যে কোন ধর্মীয় সংকীর্নতাবোধ ছিলো না।
কিন্তু মৃত্যুর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি মনে প্রানে হিন্দুই ছিলেন। এবং নিজেকে একজন নিষ্ঠাবান হিন্দু হিসাবেই ভাবতেন। এর সবচেয়ে বড়ো প্রমান হচ্ছে, তিনি ব্রাহ্ম সভার প্রতিষ্ঠার পরে কখনই নিজের পইতে ত্যাগ করেন নি। তিনি যেখানেই যেতেন, সঙ্গে করে একজন ব্রাহ্মন পাচককে নিয়ে যেতেন।
কিন্তু জাতিগত ভাবে হিন্দু হলেও, পৌত্তলিক আচার ও সংস্কার সর্বস্বতাকে রামমোহন কখনই প্রকৃত হিন্দু ধর্ম বলে মানতেন না। তার মতে, দেশের মানুষ হিন্দু ধর্ম বলে যে আচার অনুষ্ঠান ও পৌত্তলিকতাকে অনুসরন করছে, সেটা যেমন হিন্দু ধর্মের একটি অযৌক্তিক দিক, তেমনি সেই অযৌক্তিক পৌত্তলিকতাকে অভ্রান্ত মনে করে খ্রিষ্টান মিশনারিরা যেভাবে হিন্দু ধর্মকে ব্যাখ্যা করছেন, সেটাও হিন্দু ধর্মের অপব্যাখ্যার একটি দিক।
ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রামমোহন রায় তাই হিন্দু ধর্মকে তার মূল ভাবাদর্শের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি ব্রাহ্ম সভা বা সমাজকে কখনই হিন্দু ধর্ম থেকে পৃথক হিসাবে ভাবেন নি। মনে রাখতে হবে, রামমোহনের অনেক পরে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরেই মূলত ব্রাহ্ম সমাজ হিন্দু ধর্ম থেকে পৃথক একটি "স্বতন্ত্র ধর্ম" হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলো এবং আত্মপ্রকাশ করেছিলো।
দুঃখের বিষয়, রামমোহনের মধ্যে সংকীর্ণ কোন ধর্মীয় স্বজাত্যবোধ বা হিন্দু ধর্মীয় সংকীর্নতা না থাকায় আমাদের দেশের অজ্ঞ দেশবাসী বুঝতেই পারেন নি যে রামমোহন রায় হিন্দুই ছিলেন। ফলে, সমকালীন সময়ের দেশবাসী রামমোহনকে হিন্দু বিরোধী বলেই মনে করেছিলেন এবং প্রচার করেছিলেন।
রামমোহনের একেশ্বরবাদের চর্চা
যাইহোক, দ্বিতীয় যে ঘটনাটি রামমোহনকে ব্রাহ্মসভা গঠনে উদ্বুদ্ধ করেছিলো বলে মনে করা হয়, তা হলো একেশ্বরবাদের চর্চা। পৃথিবীর সমস্ত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করবার পর রামমোহন সিদ্ধান্তে আসেন, পৃথিবীর সমস্ত ধর্মই একেশ্বরবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
এই একেশ্বরবাদের চর্চার জন্য তিনি ১৮১৫ খ্রিঃ কলকাতায় প্রথমে আত্মীয় সভা গঠন করেছিলেন।" আমরা সকলেই পরমাত্মার সন্তান এবং সকলের অন্তরের মধ্যেই পরমাত্মা বিরাজ করছেন। এই নিয়মে জগতের সকল মানুষই আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ" । - এই বৈদিক ভাবনার ওপর ভিত্তি করে নিরাকার পরমাত্মার উপাসনার জন্য রামমোহন "আত্মীয়সভা" গঠন করেছিলেন।
কিন্তু আত্মীয়সভা রামমোহন বেশিদিন চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন নি। নানা বৈষয়িক মামলা মোকদ্দমাতে তিনি জড়িয়ে পড়লে ১৮১৯ খ্রিঃ আত্মীয়সভার অধিবেশন বন্ধ হয়ে যায়।
ইতিমধ্যে বৈষয়িক নানা সমস্যা মিটে যাওয়ায় এবং হিন্দু ধর্মের ওপর খ্রিষ্টান মিশনারিদের আক্রমণ তীব্র হয়ে ওঠায়, রামমোহন রায় পুনরায় আত্মীয়সভার মতো একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের কথা ভাবতে আরম্ভ করেন। ১৮২৮ খ্রিঃ ব্রাহ্মসভার প্রতিষ্ঠা এই ভাবনারই ফলশ্রুতি ছিলো বলা যায়।
অ্যাডাম সাহেবের সভা থেকে "ব্রাহ্মসভা" গঠনের সিদ্ধান্ত
১৮২০ দশকের প্রথম দিক থেকে খ্রিষ্টান মিশনারিদের সঙ্গে রামমোহনের সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত হয়ে ওঠে। ভারতে খ্রিষ্টান মিশনারিরা ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে যীশু খ্রিষ্ট ও খ্রিষ্টান ধর্মের নানা অলৌকিক তত্ত্ব প্রচার করে বেড়াতো। রামমোহন এর তীব্র বিরোধিতা করেন।
তিনি খ্রিষ্টান ধর্মের অবতারবাদ ও অলৌকিকত্বের নানা তত্ত্ব কথা গুলিকে ভ্রান্ত বলে প্রচার করেন। অবতারবাদ ও ঈশ্বরীয় অলৌকিকত্বকে সমালোচনা করে তিনি দাবি করেন, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের পক্ষে অলৌকিক ঘটনা ঘটানো একান্তই অসম্ভব। কেননা সৃষ্টিকর্তা তার "লৌকিক জগতের" নিয়ম বিরুদ্ধ নিশ্চয়ই কিছু "অলৌকিক ও অসম্ভব" কিছু সৃষ্টি করবেন না।
খ্রিষ্টান ধর্মের অলৌকিকত্ববাদকে সমালোচনা করবার পরেই মিশনারিদের সঙ্গে রামমোহনের সম্পর্ক অত্যন্ত তিক্ত হয়ে ওঠে। রামমোহনের মতবাদের দ্বারা প্রোটেস্ট্যান্ট মিশনারি উইলিয়াম অ্যাডাম ভীষন ভাবে প্রভাবিত হন। অ্যাডাম খ্রিষ্টান ধর্মমতের আলোচনার জন্য" ইউনিটেরিয়ান সোসাইটি" নামে একটি সভা প্রতিষ্ঠা করেন। এই সভাতে রামমোহন রায় ও তার কিছু অনুগামী ধর্মীয় আলোচনায় অংশ নিতেন।
কিন্তু ১৮২৪ খ্রিঃ এই সভার সদস্য সংখ্যা মারাত্মক ভাবে কমে যায়। এই সময় রামমোহনের অনুগামীরা একেশ্বরবাদের চর্চার জন্য বিকল্প একটি সভা প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরেন। অ্যাডাম সাহেবের সভা থেকে বাড়ি ফিরে আসবার পথে তারাচাঁদ চক্রবর্তী এবং চন্দ্রশেখর দেব রামমোহনকে বললেন, একেশ্বরবাদের চর্চার জন্য বিদেশীদের উপাসনালয়ে আমাদের যাবার দরকার কি? আমরা তো আমাদের নিজস্ব একটি উপাসনালয় গড়ে তুলতে পারি।
ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠা ও গৃহনির্মান
অনুগামীদের প্রস্তাব পর্যালোচনা জন্য রামমোহন রায় তার বন্ধু প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ও টাকি নিবাসী রায় কালীনাথ মুন্সির সঙ্গে পরামর্শ করলেন। পরে ব্রাহ্ম সভা গঠনের জন্য নিজের বাড়িতে একটি সভার আহ্বান করেন। সকলেই রামমোহনের ব্রাহ্ম সভা গঠনের প্রস্তাবে সম্মতি জানান এবং প্রয়োজনীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন।
শেষপর্যন্ত, সকলের সহযোগিতায় ১৮২৮ খ্রিঃ ৬ ই ভাদ্র চীৎপুর রোডের কমললোচন বসুর বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয় "ব্রাহ্মসভা"।
কিছুদিন পর যথেষ্ট অর্থ সংগ্রহ করে চীৎপুর রোডের পাশেই একখন্ড জমি কিনে ব্রাহ্মসভার স্থায়ী বাড়ি নির্মানের পরিকল্পনা করা হয়।
১৮৩০ খ্রিঃ ২৩ জানুয়ারি, বাংলা ১১ মাঘ, সভার নতুন গৃহের দ্বার উৎঘাটন হয়। ঐ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবার জন্য পরবর্তীকালে ১১ মাঘ ব্রাহ্মসমাজের বাৎসরিক উৎসব "মাঘোৎসব" অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মসভার ধরন ও নিয়ম
- রামমোহনের সময় প্রত্যেক শনিবার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ব্রাহ্মসভার কাজ চলতো। ইংরেজ আমলে সেসময় রবিবার সরকারি ছুটির দিন থাকতো বলে যাবতীয় সভা সমিতি ও পত্র পত্রিকার প্রকাশ শনিবারেই করা হতো।
- বেদপাঠের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্ম সভার অধিবেশন শুরু হতো। বেদপাঠ করতেন দুজন তেলেগু বা হিন্দুস্থানী ব্রাহ্মন।
- সাধারনত ৫০ থেকে ৬০ জন লোক ভালো পোশাক আশাক পরে সভায় উপস্থিত হতেন।
- নিয়ম ছিলো সভাতে কোন মূর্তি পুজা, বলিদান, নৈবেদ্য নিবেদন, আহার, পান ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক কোন অনুষ্ঠান করা চলবে না। কোন ধর্মের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা কটুক্তিও করা যাবে না। এমনকি কোন মানুষ, সম্প্রদায় বা জাতির বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ, হিংসা ঘৃনা বা সমালোচনার মতো নিন্দনীয় কাজগুলিও এই সভার সদস্যরা কখনোই করতে পারবেন না।
- উপদেশ, বক্তিতা, নিরাকার ব্রহ্মের প্রার্থনা ও ধ্যান এবং সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভার কাজকর্ম চলতো। সভার কাজ শেষ হতো যন্ত্রসহযোগে ব্রহ্মসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে।
মোটামুটি রামমোহনের সময় এই ভাবেই ব্রাহ্মসমাজের উপাসনার কাজ চলতো।
রামমোহনের ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতিক্রিয়া
রামমোহনের সময় ব্রাহ্মসমাজ খুব বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করতে না পারলেও, ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠা করে রামমোহন রায় একদিকে যেমন খ্রিষ্টান মিশনারিদের চূড়ান্ত ভাবে হতাশ করেছিলেন, তেমনি মূর্তিপুজার বিরোধীতা করে রক্ষনশীল হিন্দু সমাজেরও তিনি বিরাগভাজন হন। ব্রাহ্মসমাজের বিরুদ্ধে রক্ষনশীল হিন্দুদের পত্রিকা "সমাচার চন্দ্রিকা" তে প্রায়ই বিরুপ মন্তব্য প্রকাশিত হতো।
অন্যদিকে খ্রিষ্টান মিশনারিরা এতদিন ধরে ভেবে এসেছিলেন,রামমোহনের একেশ্বরবাদের তত্ত্ব ভারতে বহু ইশ্বরবাদী হিন্দু ধর্মের বিপ্রতীপে এক ইশ্বরবাদী খ্রিষ্টান ধর্মের প্রসারের পথকে প্রশস্ত করবে। কিন্তু তাদের সব আশাতে জল ঢেলে দিয়ে রামমোহনের ব্রাহ্মসভার প্রতিষ্ঠার কাজটিতে মিশনারিরা শুধু ক্ষুব্ধই হন নি, কিছুটা মুষড়েও পড়েন।
মোটকথা, রামমোহনের ব্রাহ্ম সভা প্রতিষ্ঠার কাজটিকে সমকালীন সময়ের অনেকেই সুনজরে দেখেন নি। কারন ব্রাহ্ম সভার প্রতিষ্ঠা যেমন তাদের কোন আশা আকাঙ্খাকে পূরন করতে পারে নি, তেমনই কোন স্বার্থও সংরক্ষণ করতে পারে নি। ফলে ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতে এদের কেউই সেভাবে খুশি হতে পারেন নি।
যাইহোক,১৮৩০ খ্রিঃ ১৫ ই নভেম্বর রামমোহন ইংল্যান্ড যাত্রা করেন। বিলাত যাত্রার আগে রামমোহন ব্রাহ্মসমাজের দায়িত্ব বন্ধু প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের হাতে দিয়ে যান। তার বিলাত যাত্রার ফলে বাংলার প্রগতিশীল শিবিরে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়। ব্রাহ্ম আন্দোলনেও ভাঁটা পড়ে।
১৮৩৩ খ্রিঃ ২৭ সেপ্টেম্বর, ব্রিস্টলে রামমোহন রায়ের মৃত্যু হয়।
তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মসমাজে এক গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। ১৮৩০ খ্রিঃ রামমোহনের বিলাত যাত্রার পর প্রায় ১৩ বছর ব্রাহ্ম সমাজ নিস্প্রভ ভাবে কোনমতে টিকে থাকে।
চলবে.....
দ্বিতীয় পর্ব - "দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্মসমাজ"