উনিশ শতকে সাম্রাজ্যবাদ বা উপনিবেশবাদের উদ্ভব এবং বিকাশ সম্পর্কে হবসন এবং লেনিনের অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাটি সাধারন ভাবে "হবসন - লেনিন থিসিস" নামে পরিচিত।
মূল বক্তব্য
কিছু সূক্ষ পার্থক্য ছাড়া সাম্রাজ্যবাদের উদ্ভব সম্পর্কে হবসন এবং লেনিনের বক্তব্য প্রায় একই। সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে হবসন লেনিনের মূল বক্তব্যটি হল :-
- বাড়তি পুঁজি বা মূলধনের চাপেই সাম্রাজ্যবাদ বা উপনিবেশবাদের উদ্ভব ঘটে,
- সাম্রাজ্যবাদ হলো পুঁজিবাদেরই একটি সম্প্রসারিত রূপ,
আরোও সহজ ভাষায় বলতে গেলে বাড়তি পুঁজি বা মূলধন সুনিশ্চিত এবং লাভজনক ভাবে বিনিয়োগ করতে গিয়েই সাম্রাজ্যবাদ বা উপনিবেশবাদের জন্ম হয়। এটাই হলো "হবসন লেনিন থিসিস এর মূল কথা।
|
হবসন - লেনিন থিসিস |
হবসনের মতবাদ
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
জন অ্যাটকিনসন হবসন (১৮৫৮ - ১৯৪০) ছিলেন একজন ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ, লেখক এবং সুবক্তা। ম্যাঞ্চেস্টার গার্ডিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক হিসাবে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় খবর সংগ্রহের জন্য যান।
এই সময়েই তিনি পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিকাশ এবং প্রভাবের দিকটি খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় সোনার খনির ওপর নিয়ন্ত্রন স্থাপন করতে গিয়ে ইংরেজরা স্থানীয় কৃষক বা বুয়োরদের জমিচ্যুত করতে চাইলে বুয়োরদের সঙ্গে ইংরেজদের যুদ্ধ শুরু হয়।
দ্বিতীয় বুয়োর যুদ্ধকে খুব কাছ থেকে হবসন দেখেছিলেন। তার মতে দ্বিতীয় বুয়োর যুদ্ধ ইংল্যান্ডের সাম্রাজ্যবাদেরই একটি নগ্ন রূপ ছিলো।
যাইহোক, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হবসন ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন।
গ্রন্থ প্রকাশ
অল্প কিছুদিন পর, ১৯০২ খ্রিঃ হবসন প্রকাশ করেন সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে তার বিখ্যাত গ্রন্থ - "Imperialism : A study" । এই গ্রন্থটিতেই সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে হবসন তার যাবতীয় বক্তব্য পেশ করেন।
মূল বক্তব্য
হবসনের মতে -
- সাম্রাজ্যবাদের পিছনে কোন মহান লক্ষ্য বা আদর্শ ছিলো না। অর্থনীতি ছিলো মূল কারন,
- বাড়তি মূলধন বা টাকার লগ্নির ক্ষেত্র অনুসন্ধান করতে গিয়েই সাম্রাজ্যবাদের জন্ম হয়েছে।
অর্থাৎ হবসনের মূল বক্তব্য ছিলো, ইওরোপের পুঁজিপতিদের হাতে অনেক বাড়তি পুঁজি জমা হয়ে গিয়েছিলো। সেই বাড়তি মূলধনের লাভজনক বিনিয়োগ করতে গিয়েই উপনিবেশবাদের জন্ম হয়।
এখন প্রশ্ন হল, ইওরোপের পুঁজিপতিদের হাতে এই বাড়তি টাকা বা পুঁজি কিভাবে সৃষ্টি হলো? হবসন এর একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
(ক.) উদ্বৃত্ত পুঁজির জন্ম
হবসনের মতে, ইওরোপে ধনবন্টনের বৈষম্যের জন্য কিছু মানুষের হাতে অনেক টাকা জমে যায়। এই জমে যাওয়া টাকাকে তারা ব্যবসা বানিজ্যে খাটায়। তারা পিছিয়ে পড়া এশিয়া আফ্রিকার অঞ্চল গুলো থেকে সস্তায় কাঁচামাল এনে নিজেদের দেশে শিল্পের বিকাশ ঘটায়। ঐ শিল্প পন্য বিক্রি করে তারা প্রচুর মুনাফা লাভ করে। এইভাবেই "উদ্বৃত্ত পুঁজির" জন্ম হয়।
(খ.) পুঁজিপতিদের চাপ
উদ্বৃত্ত পুঁজি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর পুঁজিপতিরা তা পুনরায় লগ্নি করে মুনাফা লাভ করতে চায়।
দ্বিতীয় বারের এই লাভজনক মুনাফা এবং লগ্নি সুনিশ্চিত করবার জন্য পুঁজিপতিরা তাদের দেশের সরকারের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি করেন যেন সরকার উপনিবেশ স্থাপন করে।
হবসনের মতে, ইওরোপে ধনবন্টনের বৈষম্যের জন্য একটি বড়ো অংশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে নি। তার মতে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হলে, এবং ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে একটি দেশের উদ্বৃত্ত বা বাড়তি উৎপাদন তারাই ভোগ করে নেয়। বাজারের জন্য উপনিবেশ স্থাপনের প্রয়োজন পড়ে না।
অর্থাৎ হবসনের মতে, বাড়তি মূলধনের লাভজনক লগ্নির অনুসন্ধান করতে গিয়েই উপনিবেশবাদের জন্ম হয়।
(গ.) মুনাফার নিশ্চিন্তকরন ও শোষন
মুনাফা ও লগ্নির ক্ষেত্র সুনিশ্চিত করবার জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলো এশিয়া আফ্রিকার অনুন্নত দেশ গুলোকে দখল করে নেয় এবং ঐ দেশগুলো কে তাদের উপনিবেশে পরিনত করে ফেলে। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে "সম্পদ ও শ্রম" লাভের জন্য এবং উচ্চ মূল্যে পন্য বিক্রির জন্য শোষন চালায়।
সমাধানের উপায়
হবসন মনে করেন, পুঁজিপতি শ্রেনীর বিপুল পরিমান মূলধন বিনিয়োগের জন্য উপনিবেশ দখলের ঘটনা রোধ করা সম্ভব। এজন্য তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন -
- সম্পদের সুষম বন্টন করতে হবে,
- পুঁজিপতিদের বাড়তি মূলধন দরিদ্র শ্রেনীর মানুষের মধ্যে বিতরন করতে হবে,
- বিভিন্ন জনকল্যানমূলক কাজে ঐ অর্থকে কাজে লাগাতে হবে,
- মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।
লেনিনের মতবাদ
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ভ্লাদিমির ইলিচ উইলিয়ানভ লেনিন ছিলেন রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের নেতা এবং সোভিয়েত রাশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি। ১৯১৬ খ্রিঃ তিনি প্রকাশ করেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ - "Imperialism : The Highest stage of Capitalism"।এই গ্রন্থে লেনিন সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে তার অভিমত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষন করেন।
মূল বক্তব্য
লেনিনের মতে -
- শুধু বাজার দখল নয়, উদ্বৃত্ত পুঁজির বিনিয়োগের সন্ধান করতে গিয়েই সাম্রাজ্যবাদের জন্ম হয়,
- পুঁজিবাদের সবথেকে শেষের স্তর হলো উপনিবেশ স্থাপন বা বিদেশে পুঁজিবাদের রপ্তানি করা,
সহজ ভাষায় বলতে গেলে লেনিনের তত্ত্বের মূল কথা হলো - পুঁজিবাদ যখন চূড়ান্ত একটা স্তরে পৌঁছায়, তখন পুঁজিবাদ আর কার্যকর হয় না। পুঁজিবাদের নিয়মই হলো বিনিয়োগ করে পুঁজির বৃদ্ধি ঘটানো। সাধারন দ্রব্যের রপ্তানি করে পুঁজিবাদ কাজ শুরু করে। এরপর চূড়ান্ত স্তরে পুঁজিবাদ দ্রব্যের বদলে কেবল পুঁজি রপ্তানি করে।
অর্থাৎ লেনিনের মতে, পুঁজির লাভজনক লগ্নি বা রপ্তানি থেকেই সাম্রাজ্যবাদের জন্ম হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদ সম্পর্কে লেনিনের ব্যাখ্যার প্রধান দিক গুলো হল এইরকম :-
(ক.) পুঁজির জন্ম
লেনিনের মতে -
- শিল্প বিপ্লবের ফলে পুঁজিপতিদের হাতে বিরাট পরিমান পুঁজি বা মূলধন জমা হয়,
- ঐ বিরাট অঙ্কের মূলধনটি ইওরোপীয় ভূখন্ডের মধ্যে লগ্নি করে মুনাফা লাভের সম্ভাবনা খুবই কম ছিলো।
(খ.) পুঁজির বিনিয়োগ
এই অবস্থায় ঐ বিরাট অঙ্কের মূলধনকে পুঁজিপতিরা ইওরোপের বাইরে উপনিবেশে বিনিয়োগ করেন। তারা উপনিবেশ থেকে কাঁচামাল নিজেদের দেশে না নিয়ে গিয়ে, উপনিবেশ গুলিতেই পুঁজি বিনিয়োগ করে উৎপাদন শুরু করে দেয় এবং মুনাফা লাভের চেষ্টা চালায়।
(গ.) পুঁজিবাদী শোষন
লেনিনের মতে, পুঁজি রপ্তানির জন্য পুঁজিবাদী দেশ গুলি পুঁজি হীন দেশ গুলোকে বেছে নেয়। ঐ সমস্ত দেশ গুলোকে সাহায্য করবার দোহাই দিয়ে তারা পুঁজির বিনিয়োগ করে এবং শোষন চালাতে থাকে।
বিষয়টা একটা গল্পের সাহায্যে বুঝে নেওয়া যাক।
আমেরিকা থেকে একজন পুঁজিপতি ভারতে এসে বললেন, আমি তোমাদের বন্ধু। তোমাদের সাহায্য করতে চাই। আমি তোমাদের এখানে একটি খুব বড়ো সাবান তৈরির কারখানা খুলবো। এই কারখানা খুললে তোমাদের এখানে হাজার হাজার ছেলে মেয়ের কর্মসংস্থান হবে। মাথা পিছু আয়ও বাড়বে।
এরপর তিনি নামমাত্র দাম দিয়ে জমি কিনে কারখানা খুললেন। এখান থেকে ছেলেমেয়েদের কাজে নেওয়া হলো ঠিকই, কিন্তু তাদের বেতন দেওয়া হলো কম। ঐ পুঁজিপতির প্রবল অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও প্রাধান্যের চাপে কাঁচামাল আমরা তার কারখানায় জোগান দিতে বাধ্য হলাম। ধীরে ধীরে ঐ আমেরিকান পুঁজিপতি আমাদের দেশের দেশীয় সাবান প্রস্তুতকারি কোম্পানি গুলিকে কিনে নিতে থাকলেন, এবং বাজারে নিজেকে সাবানের মূল্য নির্ধারণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ করালেন।
অর্থাৎ শেষ স্তরে তিনি মুনাফা লাভের জন্য পন্যের দাম বাড়িয়ে দিতে থাকলেন এবং শোষন চালাতে থাকলেন। লেনিন ঠিক এই কথাটাই তার তত্ত্বে বুঝিয়েছেন।
(ঘ.) পুঁজির একত্রিতকরন বা পুঞ্জিভবন
লেনিন বলেছেন, পুঁজি একস্তরে একত্রিত হয় এবং মহাজনী পুঁজির সৃষ্টি হয়। তার মতে পুঁজিবাদ প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প উৎপাদন ক্ষেত্র গুলি বৃহত্তর থেকে বৃহত্তম হয়ে ওঠে। ছোট শিল্প বড়ো শিল্পের প্রাধান্য মেনে নিয়ে একধরনের সমঝোতা করে। বড়ো শিল্পপতির ঠিক করে দেওয়া দামে ছোট শিল্পপতিরা পন্যের মূল্য নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়।
ব্যাঙ্ক গুলোর ক্ষেত্রেও দেখা যায়, ছোট ছোট ব্যাঙ্ক গুলো বড়ো ব্যাঙ্কের অধীন হয়ে পড়ে এবং সংঘবদ্ধ হয়। এইভাবে পুঁজি সীমিত এলাকায় কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে এবং উদ্ভব ঘটে মহাজনি পুঁজিবাদের।
(ঙ.) পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর
মহাজনি পুঁজির উদ্ভবের পর পুঁজিবাদের লক্ষ্য থাকে পুঁজির সরাসরি বিনিয়োগ। মহাজনি পুঁজির রপ্তানি করতে গিয়ে সাম্রাজ্যবাদের জন্ম হয়।
লেনিনের মতে, পৃথিবীর সেইসব এলাকা সাম্রাজ্যবাদের শিকার হয়, যে সব এলাকায় বিদেশী পুঁজির বিনিয়োগ হয়। অর্থাৎ হবসনের মতো বলপূর্বক এলাকা দখলকে লেনিন সাম্রাজ্যবাদ বলেন নি। তার ব্যাখ্যায় সাম্রাজ্যবাদ অনেক নমনীয়।
লেনিনের মতে পুঁজি যেসব জায়গায় রপ্তানি করা হয়, সেখানে পুঁজির নিরাপত্তা দানের জন্য রাজনৈতিক আধিপত্য স্থাপন করা এবং অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রন কায়েম করা আবশ্যিক হয়ে পড়ে। এটিই হলো সাম্রাজ্যবাদ।
(চ.) মুমূর্ষ পুঁজিবাদ
লেনিনের মতে সাম্রাজ্যবাদ বাড়তে বাড়তে যখন চরমে উঠবে তখন বিশ্ব বিপ্লবের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের বিনাশ ঘটবে এবং আর্ন্তজাতিক সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সাম্রাজ্যবাদকে তাই লেনিন ক্ষয়িষ্ণু বা মুমূর্ষ পুঁজিবাদ আখ্যা দিয়েছেন।
হবসন - লেনিন তত্বের মধ্যে পার্থক্য
গবেষক এবং ঐতিহাসিকদের মধ্যে কেউ কেউ হবসন ও লেনিনের তত্ত্বের মধ্যে কয়েকটি গুরুতর পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন। যেমন -
- লেনিন পুঁজিবাদী মূলধনের একচেটিয়া কারবারের অর্থনীতিকে সাম্রাজ্যবাদের বিস্তার নীতির চালিকা শক্তি বলে তার তত্ত্বে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু হবসন এই বিষয়ে তেমন কোন বক্তব্য পেশ করেন নি।
- হবসন বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দখলদারিকে সাম্রাজ্যবাদ বলেছেন। কিন্তু লেনিনের সংজ্ঞাতে সাম্রাজ্যবাদ অনেকটাই নমনীয়। তিনি কোন এলাকার ওপর আনুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রনকেও সাম্রাজ্যের সংজ্ঞার মধ্যে আনবার পক্ষপাতী।
- হবসনের মতে পুঁজিবাদের সংকট সংস্কারের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কিন্তু লেনিন পুঁজিবাদকে বিশ্বজোড়া একটি বৈশিষ্ট্য মনে করেন। তার মতে পুঁজিবাদ অনিবার্য ভাবেই বিপ্লব সংগঠিত করবে।
সমালোচনা
অনেক ঐতিহাসিকই হবসন লেনিন তত্ত্বের কিছু ত্রুটি তুলে ধরে তার সমালোচনা করেছেন। যেমন -
- শিল্প বিপ্লবের আগে কেন উপনিবেশবাদ বা সাম্রাজ্যবাদের উদ্ভব ঘটেছিলো, তার কোন ব্যাখ্যা হবসন লেনিন তত্ত্বে পাওয়া যায় না।
- ইংল্যান্ড, ফ্রান্স প্রভৃতি সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি তাদের মূলধনের বেশিরভাগটাই রাশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকায় বিনিয়োগ করেছিলো। অধ্যাপক জে ডি ফেজ দেখিয়েছেন, ১৯১৩ খ্রিঃ পর ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি তাদের অর্থের বেশিরভাগটাই বিনিয়োগ করেছিলো ইওরোপে। সুতরাং উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করতে গিয়েই সাম্রাজ্যবাদের জন্ম হয়েছে, একথা সবসময় সত্যি নয়।
- ১৮১৫ - ১৮৭০ পর্বে ফ্রান্স শিল্প গঠনে ইওরোপের অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে ছিলো। তাও ফ্রান্সের উপনিবেশের সংখ্যা এইসময় দ্বিগুন ছিলো। ফ্রান্সের উপনিবেশ স্থাপনের কোন সংগত ব্যাখ্যা হবসন লেনিন থিসিসে পাওয়া যায় না।
- বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঔপনিবেশিক শোষন নয়, সুসম্পর্কের দ্বারাই অধিক পরিমান উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করা সম্ভব।
তবে এই সমালোচনা সত্ত্বেও, ১৮৭০ - ১৯০০ খ্রিঃ মধ্যে ইওরোপীয় সাম্রাজ্যবাদের পিছনে অনুন্নত দেশে পুঁজি বিনিয়োগের বিষয়টি যে একটা বড়ো ভূমিকা নিয়েছিলো, সেটিকে কোন ঐতিহাসিক কখনই অস্বীকার করতে পারেন নি। হবসন - লেনিন তত্ত্বের সবচেয়ে বড়ো ঐতিহাসিক মূল্য এখানেই।