বেদান্ত সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দের "নতুন উপলব্ধি" এবং "বাস্তব জীবনে" তার প্রয়োগের বিষয়টিই সাধারন ভাবে "নব্য বেদান্ত" নামে পরিচিত।
স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত |
আধুনিক ভারতে বেদান্ত চর্চা ও বিবেকানন্দ
প্রসঙ্গত বলে রাখা প্রয়োজন, আধুনিক ভারতে বেদান্ত নিয়ে প্রথম চর্চার সূত্রপাত করেন রাজা রামমোহন রায়। বেদান্তের ভাবনা ও দর্শনের আলোকে তিনি ভারতের পুনঃজাগরনের স্বপ্ন দেখেন। আত্মীয়সভা, ব্রাহ্মসভা, বেদান্ত কলেজ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তিনি বেদান্ত ভাবনাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টা চালান।
রামমোহনের পরে স্বামী বিবেকানন্দই ছিলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি অত্যন্ত সফল ভাবে বেদান্ত ভাবনা ও দর্শনের আলোকে নবভারতের নির্মান ও জাগরন ঘটাতে পেরেছিলেন। বেদান্ত চর্চা এবং তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান,দুটি ক্ষেত্রেই স্বামী বিবেকানন্দ রামমোহনের থেকে শুধু যে এগিয়ে ছিলেন, তাই নয়, মৌলিকত্বের সাক্ষরও রেখে যেতে পেরেছিলেন।
(১.) বেদান্ত চর্চায় রামমোহন কোন নতুন ব্যাখ্যা বা ভাষ্য দেন নি। কিন্তু বিবেকানন্দ তার "নব্য বেদান্তের" মধ্য দিয়ে বেদান্ত দর্শনের এক নতুন ব্যাখ্যা ও ভাষ্য তুলে ধরেন।
(২.) রামমোহন রায় বেদান্ত ভাবনার জাগরনের জন্য যে প্রতিষ্ঠান গুলির (আত্মীয়সভা, ব্রাহ্মসভা, বেদান্ত কলেজ) জন্ম দিয়েছিলেন,তা যুগোত্তীর্ণও হতে পারে নি। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ বেদান্ত ভাবনার জাগরন ও প্রসারের জন্য যে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেন, তা যুগ, কাল, এবং স্থান তিনটিকেই অতিক্রম করে আজ শুধু যে টিকে আছে তাই নয়, সারা বিশ্বে মহীরুহের মতো বিস্তার লাভ করেছে।
তাই বলা হয়ে থাকে, সাংগঠনিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং তাত্ত্বিক এই তিনটি দিক থেকেই বিবেকানন্দ উনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজগরনের অন্যান্য নায়ক দের থেকে অনেক বেশি সফল এবং সার্থক ছিলেন।
বেদান্ত চর্চার ক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দই - (১.) প্রথম বিশ্বে ভারতের বেদান্ত দর্শন প্রচার করেন, (২.) অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে সর্বসাধারনের উপযোগী করে বেদান্ত দর্শকে ব্যাখ্যা করেন, এবং (৩.) বেদান্তকে আত্মমুক্তি ও পুঁথিগত স্তরে সীমাবদ্ধ না রেখে তাকে জীবনের সঙ্গে যুক্ত করেন।
বেদান্ত দর্শন ও তার ব্যাখ্যা সম্পর্কে ধারণা
এখন বিবেকানন্দের নব্য বেদান্তের মূল ভাবনা ও বৈশিষ্ট্য গুলিকে বুঝতে গেলে সবার প্রথমে "বেদান্ত" সম্পর্কে আমাদের ধারনা থাকা প্রয়োজন। আলোচনার ক্ষেত্রে তাই আমরা প্রথমেই বেদান্ত সম্পর্কে একটু সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো, তারপর আমরা নব্য বেদান্তের পর্যালোচনাতে আসব।
বেদের শ্রেনীবিভাগ |
ভারতের প্রাচীনতম গ্রন্থ ছিলো বেদ। এই বেদ চারটি ভাগে বিভক্ত ছিলো - ঋকবেদ, সামবেদ, যজ্জুবেদ, এবং অর্থববেদ।প্রত্যেকটি বেদের আবার চারটি ভাগ ছিলো। যথা - সংহিতা, ব্রাহ্মন, আরন্যক এবং উপনিষদ। উপনিষদে বেদের দর্শনভাবনা এবং মূল তত্ত্ব তুলে ধরা হয়েছিলো। উপনিষদ বেদের একেবারে অন্তে বা শেষে অবস্থান করে বলে উপনিষদকে "বেদান্ত" বলা হয়। বেদান্ত বা উপনিষদেই বর্তমান হিন্দু ধর্মের মূল দর্শন সংকলিত হয়েছিলো।
বেদান্তের মূল ভাবনা ও দর্শনটিতে বলা হয়েছিলো, এই জগতে ঈশ্বর পরম ব্রহ্ম রূপে বিরাজ করছেন। প্রতিটি প্রানীতে এবং প্রতিটি বস্তুতেই তার অবস্থান। জীবের ভিতরে তিনি "আত্মা" রূপে বিরাজ করছেন। ব্রহ্মকে চোখে দেখা যায় না, আগুনে পোড়ানো যায় না, কিন্তু তিনিই সকল শক্তির আধার। তিনি সাকার ও নিরাকার রূপে অবস্থান করেন।
তিনটি ব্যাখ্যা
এখন প্রশ্ন হলো, বেদান্তে ব্রহ্ম কে ঈশ্বর বলা হয়েছে, আবার এটিও বলা হয়েছে, সেই ব্রহ্মই জগতে প্রতিটি প্রানীর মধ্যে বিরাজ করছেন। তাহলে ব্রহ্ম এবং জগৎ এক, নাকি আলাদা? - এই জটিল এবং কঠিন প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেদান্ত শাস্ত্রকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মে তিনটি মতবাদের জন্ম হয়েছিলো। যথা - (১.) দ্বৈতবাদ, (২.) দ্বৈতাদ্বৈতবাদ বা বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ এবং (৩.) অদ্বৈতবাদ। দ্বৈতবাদের প্রবক্তা ছিলেন মাধবাচার্য, দ্বৈতাদ্বৈতবাদের প্রবক্তা ছিলেন শ্রীরামানুজ, এবং অদ্বৈতবাদের প্রবক্তা ছিলেন জগতগুরু শংকরাচার্য।
এখন এই ৩ টি মতবাদে জগৎ ও ব্রহ্ম সম্পর্কে কি বলা হয়েছিলো, দেখে নেওয়া যাক।
দ্বৈতবাদ
দ্বৈতবাদে বলা হয়েছিলো, ব্রহ্ম বা ঈশ্বর এবং জগৎ এক নয়, আলাদা। দ্বৈত কথাটির অর্থই হলো, দুই অর্থাৎ এই মতবাদ অনুসারে ঈশ্বর এবং জগৎ আলাদা বা পৃথক। ঈশ্বর আনন্দ স্বরূপ এবং একমাত্র ভক্তির মধ্য দিয়েই তার দর্শন পাওয়া যায়।
দ্বৈতাদ্বৈতবাদ
দ্বৈতাদ্বৈতবাদে সম্পূর্ন আলাদা কথা বলা হয়। এখানে বলা হয়েছিলো, জগৎ ব্রহ্ম থেকে আলাদা বা পৃথক নয়। ব্রহ্মই জগতে পরিনত হয়েছে। কিন্তু জগৎ মানেই ব্রহ্ম নয়।
মুন্ডক উপনিষদে বিষয়টা বোঝাবার জন্য একটা ভালো উদাহরন দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, মাকড়সা তার দেহ থেকে সুতা নির্গত করে জাল তৈরি করে। ঐ জাল মাকড়সার দেহ থেকে আলাদা নয়। ঐ জাল মাকড়সার দেহেরই একটি রূপান্তরিত অংশ। কিন্তু তাই বলে জালকে মাকড়সা বলা যাবে না। ঠিক তেমনিই জীব জগৎ মানেই ব্রহ্ম নয়, তারা ব্রহ্মের পরিবর্তিত রূপ।
অদ্বৈতবাদ
অদ্বৈত কথাটির অর্থ হল দুই নয়, এক। অদ্বৈতবাদের মতে, ব্রহ্ম এবং জগৎ আলাদা কোন সত্ত্বা নয়, একই। ব্রহ্মই সত্য। শংকরাচার্য বলেছিলেন, "ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা" অর্থাৎ জগতের পৃথক অস্তিত্ব নেই। জগৎ বলে যেটি আমরা দেখে থাকি ওটি মায়া ছাড়া আর কিছুই নয়।
জগৎ সদা পরিবর্তনশীল। তাই এক একজন ব্যক্তি এক একরকম ভাবে জগৎ এবং জগতের বস্তু গুলিকে দেখে থাকেন। সকলের কাছে জগৎ একই রকম ভাবে ধরা দেয় না। তাই জগৎ মায়া এবং মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এখানে বলা প্রয়োজন, শংকরাচার্যের অদ্বৈতবাদ জগৎ ও ঈশ্বরের আলাদা অস্তিত্ব স্বীকার না করলেও, এই মতবাদ জগৎ এবং যাবতীয় জাগতিক বিষয় সম্পর্কে একটি উদাসীন মানসিকতার জন্ম দেয় এবং ব্যক্তিকে জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
ভারতীয় আধ্যাত্মিক জীবনে শংকরাচার্যের অদ্বৈতবাদের প্রভাব ছিলো সবথেকে বেশি। এই মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই আমাদের দেশে এমন একটি আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী বা সন্ন্যাসীদলের সৃষ্টি হয়েছিলো, যারা জগৎ সংসার থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে, পর্বতগুহা এবং বন জঙ্গলে নিজেদের আবদ্ধ রেখে আত্মমুক্তির প্রলভনে পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বরের সাধনায় নিমগ্ন হয়েছিলেন। এরা সংসারকে মায়া এবং মোহ বলেই মনে করেছিলেন। এই মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েই বহু সাধু সন্ন্যাসী জগৎ সংসার কে মিথ্যা মনে করে গৃহত্যাগ করে আসছিলেন।
নব্য বেদান্তের মূল দর্শন
বেদান্ত দর্শনের ক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দ উপরে উল্লেখিত তিনটি পরস্পর বিরোধী ব্যাখ্যার সমন্বয় সাধন করে বেদান্তের একটা সহজ সরল ব্যাখ্যা দেন।
দ্বৈতবাদের ঈশ্বরের আলাদা অস্তিত্বের তত্ত্ব এবং দ্বৈতাদ্বৈতবাদ ও অদ্বৈতবাদের ঈশ্বর ও জগতের অভিন্ন সত্ত্বার দিকটির সমন্বয় সাধন করে তিনি বলেন - জগৎ, জীব এবং মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের প্রকাশ ঘটে থাকে। যত্র জীব, তত্র শিব। প্রত্যেক মানুষ ও জীবের মধ্যেই দেবত্ব লুকিয়ে থাকে। সেই সুপ্ত দেবত্ব কে মহৎ গুনাবলীর দ্বারা জাগরিত করা যায়।
তার মতে, যেহুতু পরমব্রহ্ম "আত্মা" রূপে সকল জীবের মধ্যেই অবস্থান করছেন, তাই জীব ও জগতের সেবা করা মানেই ঈশ্বরের সেবা করা। এই জন্য তিনি বলেন, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।
তিনি আরও বললেন, ঈশ্বর লাভের জন্য বন, জঙ্গল বা হিমালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ঈশ্বর এই জগতের মধ্যেই রয়েছেন। এই জগৎই ঈশ্বর। জগতের সেবা ও কল্যানের মধ্য দিয়েই প্রকৃত ঈশ্বরের সেবা হয়ে থাকে।
বেদান্ত দর্শনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে পূর্বক্ত মতবাদ গুলি জীব ও জগৎ সম্পর্কে একটি উদাসীন মানসিকতার জন্ম দিয়েছিলো। জীব ও জগৎ সম্পর্কে উন্নাসিক একদল সাধক ও সন্ন্যাসী তৈরি করেছিলো। স্বামী বিবেকানন্দ বেদান্ত দর্শনের ভাষ্য ও ব্যাখ্যায় জগৎ সম্পর্কে যাবতীয় উদাসীন ও উন্নাসিক মানসিকতার অবসান ঘটান। জগৎ ও ব্রহ্ম বা ঈশ্বর সম্পর্কে যাবতীয় সংশয়ের অবসান করেন। বেদান্ত দর্শনে স্বামী বিবেকানন্দের এই নব ভাষ্য ও ব্যাখ্যাই "নব্য বেদান্ত" নামে পরিচিত হয়।
নব্য বেদান্ত থেকে প্র্যাকটিক্যাল বেদান্ত
বিবেকানন্দ শুধু বেদান্তের নতুন ব্যাখ্যাই দিলেন না, মানুষের প্র্যাকটিক্যাল লাইফে তাকে প্রয়োগ করতেও উদ্যোগী হলেন। এতদিন যে বেদান্ত বনে, জঙ্গলে, পর্বতে এবং নিভৃত গুহাতে লোকচক্ষুর অন্তরালে মুনি ঋষিদের মধ্যেই আবদ্ধ ছিলো, সেই বেদান্তকে তিনি লোকালয়ে টেনে নিয়ে এলেন। জীবনের সঙ্গে বেদান্ত ভাবনার সংযোগ ঘটিয়ে তাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করলেন। প্র্যাকটিক্যাল লাইফে নব্য বেদান্তের এই প্র্যাকটিক্যাল প্রয়োগটিই "প্র্যাকটিক্যাল বেদান্ত" নামে পরিচিত।
স্বামী বিবেকানন্দই প্রথম নব্য বেদান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে বললেন, জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আত্মমুক্তির সাধনা স্বার্থপরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকৃত মুক্তির জন্য সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। ঈশ্বরকে খোঁজার জন্য বনে বা জঙ্গলে যাওয়ারও দরকার নেই। জীব ও জগতের মধ্যেই ঈশ্বর রয়েছেন। তাই জীব জগতের কল্যানের জন্য নিষ্কাম কর্ম করে যেতে হবে।
নব্য বেদান্তের প্র্যাকটিক্যাল প্রয়োগ
স্বামী বিবেকানন্দ তাই তার নব্য বেদান্তকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে গিয়ে -
- এমন একদল সন্ন্যাসীর জন্ম দেন, যারা বনে, জঙ্গলে আত্মমুক্তির সাধনায় নিমগ্ন না হয়ে, সংসারের মধ্যে থেকে, মানব কল্যানের ব্রত নিয়ে পরমব্রহ্মের সাধনায় নিজেদের নিয়োজিত করেন।
- ১৮৯৭ খ্রিঃ মানবসেবা, জগৎ কল্যান ও শিক্ষার প্রসারের জন্য তিনি রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিষয়ে বিবেকানন্দের অভিমত ছিলো, একমাত্র প্রকৃত শিক্ষাই মানুষের অন্তরের দেবত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
- সকল প্রানের মধ্যেই যেহেতু পরমব্রহ্মের অবস্থান, তাই বিবেকানন্দ সব ধরনের জাতিভেদ ও বর্নবৈষম্যবাদের তীব্র সমালোচনা করে সব মানুষের ঐক্যের কথা বলেন।
- জীব ও জগৎ পরম সত্ত্বার অংশ,এই বৈদান্তিক ভাবনায় স্বামীজি প্র্যাকটিক্যাল লাইফে সমন্বয়বাদের কথা বলেন। তার মতে এই সমন্বয় হবে - মানুষের সঙ্গে মানুষের, ভারতীয় জীবনাদর্শের সঙ্গে পাশ্চাত্যের কারিগরি জ্ঞানের, বৈদান্তিক হৃদয়ের সঙ্গে ইসলামের দেহের।
- আধ্যাত্মিক জীবনে আত্মমোক্ষের বদলে বিবেকানন্দ সমষ্টির মোক্ষের কথা তুলে ধরেন। এই বিষয়ে তার অভিমত ছিলো - "আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্বিতায়চ" অর্থাৎ জগতের কল্যানের ঘটবে নিজের মোক্ষ।
- সবচেয়ে বড়ো কথা, প্র্যাকটিক্যাল বেদান্তের মধ্য দিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ সন্ন্যাস এবং সমাজের মেলবন্ধন ঘটান। সংসার বিমুখ সন্ন্যাসকে অরন্য, এবং পর্বত গুহার অন্ধকার থেকে টেনে এনে সামাজিক দায়বদ্ধতার কর্তব্যস্থানে প্রতিষ্ঠা করেন।
- বেদান্তের মূল ভাবনাই হলো জাগরন। বিবেকানন্দ পরাধীন, জাতি বৈষম্যে জর্জরিত নূন্যমান দেশবাসীকে আত্মজাগরনের নতুন মন্ত্র দেন, এবং এইভাবেই স্বামী বিবেকানন্দ নব্য বেদান্তের ভাবনাকে প্র্যাকটিক্যাল রূপ দেন।
নব্য বেদান্তের পর্যালোচনা ও বৈশিষ্ট্য
- সমন্বয়বাদী ভাবধারায় ও আদর্শ, যা ধর্মের সঙ্গে ধর্মের, মানুষের সঙ্গে মানুষের, প্রাচ্যের সঙ্গে পাশ্চাত্যের মিলনের কথা তুলে ধরে।
- আত্মমুক্তির বদলে সমষ্টির মুক্তি, যা ব্যক্তির কল্যানের বদলে গোষ্ঠীর কল্যান ও বৃহৎ মানব সমাজের কল্যানের কথা বলে।
- মানবতাবাদী দর্শন ও আদর্শ, যা সমস্ত সামাজিক বৈষম্যকে অস্বীকার করে এবং ভেঙ্গে ফেলে সকল মানুষের মিলনের কথা তুলে ধরে।
- ঈশ্বর জ্ঞানে মানব ও জীবসেবার আদর্শ, যা অসহায়, নিপীড়িত, দরিদ্র, অশিক্ষিত, ক্ষুধার্ত মানুষের মুক্তির মহান সামাজিক দায়বদ্ধতার কর্তব্যবোধে আমাদের দীক্ষিত করে।