উনিশ শতকের সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র - দ্বিতীয় পর্ব

উনিশ শতকে বাংলার ইতিহাসের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য ছিলো - সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের উদ্ভব ও বিকাশ। প্রথম পর্বটিতে আমরা দেখেছিলাম কিভাবে ধারাবাহিক ভাবে উনিশ শতকে সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের বিকাশ ঘটেছিলো। দ্বিতীয় পর্বে আমরা সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের কাঠামো, সংজ্ঞা ও ধারনা সম্পর্কে খুঁটিনাটি আলোচনা করবো এবং উনিশ শতকে প্রকাশিত সংবাদপত্র গুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ তালিকা তুলে ধরবো। 

উনিশ শতকের সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র - দ্বিতীয় পর্ব
উনিশ শতকের সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র


মনে রাখতে হবে, বর্তমান কালে পেশার তাগিদে সংবাদপত্র প্রকাশিত হলেও, উনিশ শতকে বেশির ভাগ সংবাদপত্র গুলিই প্রকাশিত হয় নেশার তাগিদে। অনেকে সংস্কার আন্দোলন পরিচালনা করবার তাগিদে, অনেকেই আবার সংস্কৃতি চর্চা,শিক্ষা বিস্তার এবং প্রতিবাদী মননকে তুলে ধরবার জন্যই  সংবাদপত্র প্রকাশ করতেন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই সময়ের সংবাদপত্র গুলি সমাজে শিক্ষিত শ্রেনী সহ আপামোর জনসাধারণের কাছে এক বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছিলো। 

 সংবাদপত্র সমাজ জীবনের আয়না :-

 উনিশ শতকের এই সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রগুলির মাধ্যমে উদীয়মান শিক্ষিত শ্রেনী -

(১.) তৎকালীন সমাজব্যবস্থাকে আপামর জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেছিল। এর ফলে সংবাদপত্রের দর্পনে  সমকালীন সমাজ ব্যবস্থার ভালো মন্দের দিকগুলি উঠে এসেছিলো।

(২.) ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার কাজেও এই সময়ের সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র গুলি বাঙালির কাছে প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছিলো।  স্বাভাবিক নিয়মেই  সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্র গুলিই  হয়ে ওঠেছিলো উনিশ শতকে বাঙালির দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রচারের প্রধান স্মারক। 

(৩.) উনিশ শতকের সংস্কার আন্দোলন গুলি সংবাদপত্রের মাধ্যমেই আবর্তিত হয়েছিলো। জনমত গঠন করা থেকে শুরু করে সংস্কারের পক্ষে বিপক্ষে বাঙালি সমাজের চিন্তা ভাবনা ও মনস্তাত্ত্বিক নানা দিকের প্রতিফলন সবই, সংবাদপত্রের মাধ্যমে ঘটেছিল। 

(৩.) মোটকথা, উনিশ শতকে বাঙালির সাহিত্য সাধনা থেকে সংস্কৃতি চর্চা, সমাজ সংস্কার থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠা, জীবনধারার সমস্ত পর্ব গুলিই সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছিলো। এছাড়াও, 

(৪.) নীলচাষিদের দুঃখ দুর্দশার কাহিনী, অত্যাচারী নীলকরদের প্রকৃত স্বরূপ, সন্ন্যাসী বিদ্রোহকালীন বাংলার চিত্র, জমিদার শ্রেনীর অসংযমি, বিলাসপ্রিয় জীবনযাপনের কথা, সতীদাহ, বিধবাবিবাহ, ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের প্রতি বাঙালির মনোভাব, নারী শিক্ষা এবং সমাজে নারীর অবস্থান - উনিশ শতকের সমাজ জীবনের এমন সব বিচিত্র ছবির কোলাজ উনিশ শতকের সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রে উঠে এসেছিলো।

এই সমস্ত কারনের জন্যই উনিশ শতকের সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্রগুলি হয়ে উঠেছিলো সমকালীন সমাজজীবনের জীবন্ত দলিল ও দর্পন। তাই তো আধুনিক কালের ঐতিহাসিকরা বলছেন, উনিশ শতকের সমাজ ব্যবস্থা এবং সমাজ জীবনকে বুঝতে গেলে এবং তার প্রকৃত রূপের স্বাদ আস্বাদন করতে গেলে সংবাদপত্রের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। 

সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের কাঠামোগত পরিচয় :-

এখন সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্র সম্পর্কে একটা কাঠামোগত পরিচয় আমরা করে নেব। এখানে মূলত আমরা সাময়িকপত্রের সঙ্গে সংবাদপত্রের মূল কাঠামোগত ফারাক টি কে বোঝবার চেষ্টা করবো। 

সাময়িকপত্রের সংজ্ঞা :-

যখন কোন পত্রিকা একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পর পর ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়, তখন তাকেই সাধারণ ভাবে সাময়িকপত্র, সাময়িক বা ম্যাগাজিন বলা হয়ে থাকে। 

সাময়িকপত্রের বৈশিষ্ট্য :-

  1. নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশের ধরন অনুযায়ী সাময়িকপত্র বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। যেমন - সাপ্তাহিক (প্রতি সপ্তাহে একবার প্রকাশিত হয়), পাক্ষিক (প্রতি ১৫ দিন অন্তর একবার প্রকাশিত হয়) মাসিক (প্রতি মাসে একবার করে প্রকাশিত হয়) এবং ত্রৈমাসিক (প্রতি ৩ মাস অন্তর একবার করে প্রকাশিত হয়)। 
  2. সাময়িকপত্রে পত্রিকার কাগজ উন্নতমানের থাকে এবং তা বাঁধাই আকারে থাকে। 
  3. সাময়িকপত্রের আরেকটি বিশেষত্বের দিক হল, সাময়িকপত্রে বিভিন্ন বিষয়ের আলোচনার সমাহার থাকে।ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রন্ধনশৈলী, গৃহপরিচর্চা ইত্যাদি নানা বিষয়ক লেখা দিয়ে সাজানো থাকে সাময়িকপত্র। 
অর্থাৎ সাময়িকপত্র থেকে যেকোন সময়ের সমাজ ভাবনা এবং সংস্কৃতি ভাবনার দিকগুলির আভাস পাওয়া যায়। 

সংবাদপত্রের সংজ্ঞা :-

যখন কোন পত্রিকা দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত হয়, তখন তাকেই সংবাদপত্র বলা হয়। 

সংবাদপত্রের বৈশিষ্ট্য :-

  1. সংবাদপত্র দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত হয়। 
  2. সংবাদপত্রে তাৎক্ষণিক নানা সংবাদ ই পরিবেশিত হয়।
  3. সংবাদপত্র ছাপা হয় সস্তা দামের কাগজে এবং তা বাঁধানো আকারে থাকে না। 

সাময়িকপত্রের সঙ্গে সংবাদপত্রের পার্থক্য :-

সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি থেকে মূল পার্থক্যের যে দিক গুলি উঠে আসে,তা হল - 
  1. সাময়িকপত্র নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত পত্রিকা। কিন্তু সংবাদপত্র দৈনিক বা প্রত্যহ প্রকাশিত পত্রিকা। 
  2. সাময়িকপত্র প্রকাশিত হয় দামি কাগজে। কিন্তু সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে তুলনামূলক সস্তা দামের কাগজে। 
  3. সাময়িকপত্র বাঁধাই আকারে থাকে। কিন্তু সংবাদপত্র বাঁধাই আকারে থাকে না। তা বাঁধাইহীন আকারে প্রকাশিত হয়। 
  4. সাময়িকপত্রে তাৎক্ষণিক সংবাদের দিকে ঝোঁক নেই। এখানে ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রন্ধনশৈলী, গৃহপরিচর্চা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার একটি বৈচিত্র্যময় সমাহার থাকে। অন্যদিকে সংবাদপত্রে তাৎক্ষণিক বা সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া খবরই মূলত প্রকাশিত হয়। 
  5. সাময়িকপত্রের দাম সবসময়ই সংবাদপত্রের থেকে বেশি হয়। সংবাদপত্র যেহেতু দৈনিক বা প্রতিদিনই প্রকাশিত হয়, তাই তার দাম সাময়িকপত্রের থেকে অনেক কম হয়। 
  6. সাময়িকপত্রে ব্যক্তিগত মতামত গুরুত্ব পায়। কিন্তু সংবাদপত্রে ব্যক্তিগত মতামতের গুরুত্বের তেমন জায়গা নেই। 

সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র সম্পর্কে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :-

সাময়িকপত্র এবং সংবাদপত্র সম্পর্কে ৩ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে - 

বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাময়িকপত্র :-

বাংলার প্রথম সাময়িকপত্রের নাম ছিলো - দিগ্দর্শন। জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনাতে এটি প্রকাশিত হয়েছিলো। 

বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাংবাদ পত্র :-

বাংলার প্রথম সংবাদপত্রের নাম ছিলো - সমাচার দর্পন। ১৮১৮ খ্রিঃ জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনাতে এটিও প্রকাশিত হয়েছিলো। 

ভারতের প্রথম সংবাদপত্র :-

ভারতের প্রথম সংবাদপত্রের নাম ছিলো - বেঙ্গল গেজেট। ১৭৮০ খ্রিঃ জেমস অগাস্টাস হিকির সম্পাদনাতে ইংরেজি ভাষায় এই পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়েছিলো।  

সংবাদপত্রকে কেন ঐতিহাসিকরা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে থাকেন? 

মূলত ৩টি বিশেষ অবদানের জন্যই ঐতিহাসিকরা সংবাদপত্র কে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে মনে করে থাকেন - 

  • সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ঐতিহাসিককে তথ্য চয়নে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। 
  • সংবাদপত্রে শুধু সংবাদ ই প্রকাশিত হয় না। সমাজের পরিবর্তিত নানা ভাবনা, সংস্কার, ও সমাজ ব্যবস্থার খুঁটিনাটি দিকগুলিও প্রকাশিত হয়, যা ঐতিহাসিককে সমাজ বিশ্লেষনের সুযোগ করে দেয়
  • সংবাদপত্রে সেইসব খবর এবং চিন্তাভাবনাই প্রকাশিত হয়, যা তার সময়কালকে প্রভাবিত করে থাকে। ফলে সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে যেকোন সময়কালের মনস্তাত্ত্বিক দিকটি ঐতিহাসিক বুঝতে পারেন। 
তবে মনে রাখতে হবে, সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য গ্রহনের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিককে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কারন ইতিহাসের উপাদান হিসাবে সংবাদপত্রেরও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা দিক আছে - 

সংবাদপত্রের সীমাবদ্ধতা :-

  • সংবাদপত্রের সংবাদ সবসময় নিরপেক্ষ হয় না। তা কতটা নৈর্ব্যক্তিক বা নিরপেক্ষ হবে, তা সম্পাদকের মানসিকতার ওপরেই নির্ভর করবে। 
  • সরকারি নিষেধাজ্ঞা বা চাপের ফলে অনেক সময়েই সমকালীন সত্য ঘটনা এবং সামাজিক প্রভাব সংবাদপত্রে যথাযথ ভাবে প্রতিফলিত হয় না। সংবাদপত্রে প্রদত্ত তথ্যকে তাই অন্য উপাদানের সাহায্যে যাচাই করে তবেই গ্রহন করতে হবে।

সংবাদপত্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একঝলকে :-

(১.)ভারতের প্রথম সংবাদপত্র 

নাম - বেঙ্গল গেজেট 
প্রকাশকাল - ১৭৮০ 
সম্পাদক - জেমস অগাস্টাস হিকি
বৈশিষ্ট্য - ১. এটি ছিলো একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। 
২. ইংরেজি ভাষায় এটি প্রকাশিত হয়েছিলো। 
৩. বাংলাদেশ বা ভারতে প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র ছিলো। 
                                                                    

(২.) বাংলার প্রথম সাময়িকপত্র 

নাম - দিগদর্শন
প্রকাশকাল - ১৮১৮
সম্পাদক - জন ক্লার্ক মার্শম্যান
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি ছিলো একটি মাসিক পত্রিকা। 
(২.) এটি প্রকাশিত হয়েছিলো মূলত শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের পরিচালিত স্কুলের ছাত্রদের জন্য। 
(৩.) দিগ্দর্শন ই ছিলো বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বাংলার প্রথম সাময়িকপত্র বা ম্যাগাজিন। 
                                                                   

(৩.) বাংলার প্রথম সংবাদপত্র 

নাম - সমাচার দর্পন 
প্রকাশকাল - ১৮১৮
সম্পাদক - জন ক্লার্ক মার্শম্যান
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি ছিলো সাপ্তাহিক পত্রিকা। প্রতি শনিবার প্রকাশিত হতো। 
(২.) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বাংলার প্রথম সংবাদপত্র ছিলো এটি।
(৩.) বাংলার প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকাও ছিলো এটি।
                                                                            

(৪.) বাঙালি সম্পাদিত প্রথম বাংলা সংবাদপত্র 

নাম - বাঙ্গাল গেজেটি
প্রকাশকাল - ১৮১৮
সম্পাদক - গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য 
বৈশিষ্ট্য - (১.) একটি সংবাদপত্রের বিজ্ঞপ্তি থেকে এর প্রকাশকাল সম্পর্কে জানা যায়। 
(২.) দিগদর্শনের আগেই এটি প্রকাশিত হয়েছিলো বলে জানা যায়। 
(৩.) এই পত্রিকার কোন সংখ্যা আজও খুঁজে পাওয়া যায় নি। 
                                                                          

(৫.) বাংলার প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র 

নাম - সংবাদ প্রভাকর 
প্রকাশকাল - ১৮৩১
সম্পাদক - ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত 
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি প্রথমদিকে সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো। পরে ১৮৩৯ খ্রিঃ থেকে দৈনিক পত্রিকা হিসাবে প্রকাশিত হতে শুরু করেছিলো। 
(২.) সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে এই পত্রিকাটি সমকালীন সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। 
                                                                         

(৬.) বাংলার প্রথম রাজনৈতিক সংবাদপত্র 

নাম - সোমপ্রকাশ 
প্রকাশকাল - ১৮৫৮
সম্পাদক - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষন 
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি ছিলো একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। প্রতি সোমবার এটি প্রকাশিত হতো বলে এর নাম হয়েছিলো সোমপ্রকাশ। 
(২.) সোমপ্রকাশ ছিলো বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক সংবাদপত্র।
                                                                             

(৭.) বাংলার পূর্ণাঙ্গ সাহিত্য পত্রিকা 

নাম - বঙ্গদর্শন 
প্রকাশকাল - ১৮৭২
সম্পাদক - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি ছিলো একটি মাসিক পত্রিকা। 
(২.) বঙ্গদর্শন ই ছিলো বাংলার প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাহিত্য পত্রিকা। 
(৩.) এটি ছিলো বাংলার প্রথম পেশাদারি পত্রিকা।
                                                                         

(৮.) ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী সংবাদপত্র 

নাম - হিন্দু প্যাট্রিয়ট
প্রকাশকাল - ১৮৫৩
সম্পাদক - গিরিশ চন্দ্র ঘোষ (প্রথম সম্পাদক), হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (দ্বিতীয় সম্পাদক) 
বৈশিষ্ট্য - (১.) এটি প্রথমদিকে সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিলো।পরে জনপ্রিয় হয়ে উঠলে এটি দৈনিক পত্রিকা হিসাবে প্রকাশ হতো। (২.) এই পত্রিকাই একমাত্র সাঁওতাল বিদ্রোহকে সমর্থন করে। নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও নীলবিদ্রোহের স্বপক্ষে জোরালো জনমত গঠন করে। ১৮৫৭ মহাবিদ্রোহকে দ্ব্যর্থবোধক ভাষায় সমর্থন দেয়। সমকালীন ঘটাবলীর মূল্যায়নে এই পত্রিকা জাতীয়তাবাদী মনোভাবের স্বাক্ষর রেখেছিলো বলেই এটিকে ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী পত্রিকা বলা হয়েছে। 
                                                                          

(৯.) রামমোহন রায় প্রকাশিত সংবাদপত্র 

নাম - ব্রাহ্মণ সেবধি (১৮২১), সম্বাদ কৌমুদি (১৮২১),মীরাতুল আখবার (১৮২২)
                                                                            

(১০.) ইয়ংবেঙ্গল দলের প্রকাশিত সংবাদপত্র 


নাম - পার্থেনন, জ্ঞানান্বেষন, এনকোয়ারার, হিন্দু পাইওনিয়ার, হেসপেরাস, বেঙ্গল স্পেকটেটর।
                                                                            

(১১.) ব্রাহ্মসমাজের প্রকাশিত সংবাদপত্র সমূহ

(ক) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা
প্রকাশকাল - ১৮৪৩
প্রতিষ্ঠাতা - মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। 
সম্পাদক - অক্ষয় কুমার দত্ত। 
বৈশিষ্ট্য - ব্রাহ্মসমাজের তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র ছিলো।

(খ) বামাবোধিনী পত্রিকা 
প্রকাশকাল - ১৮৬৩ 
সম্পাদক - উমেশচন্দ্র দত্ত।
বৈশিষ্ট্য - ব্রাহ্মসমাজের বামাবোধিনী সভার মুখপত্র ছিলো। এটি ছিলো বামা অর্থাৎ নারীদের জন্য প্রকাশিত পত্রিকা। 
                                                                          

(১২) পরিশিষ্ট 

(ক) গ্রামবার্তা প্রকাশিকা 
প্রকাশকাল - ১৮৬৩
সম্পাদক - হরিনাথ মজুমদার বা কাঙাল হরিনাথ
বৈশিষ্ট্য - (১.)পত্রিকাটি প্রথমে ছিলো মাসিক পত্রিকা। পরে পাক্ষিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিলো।
(২.) গ্রামের মানুষের কথা পত্রিকাটি তুলে ধরতো। 

(খ) সর্বশুভকরী পত্রিকা 
প্রকাশকাল - ১৮৫০
সম্পাদক - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।


 




1 Comments

  1. ভালোই লাগলো পড়ে খুব উপকারী লেখা

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post