"তারিখ ই মহম্মদিয়া" ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইসলামের ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আদর্শ বা মতাদর্শ ছিলো।
তারিখ ই মহম্মদিয়া |
অর্থ
"তারিখ ই মহম্মদিয়ার" আক্ষরিক বাংলা অর্থ ছিলো ইসলাম ধর্মের প্রবর্ত্তক হজরত মহম্মদ প্রদর্শিত বা নির্দেশিত পথ। অর্থাৎ হজরত মহম্মদের বানী ও নির্দেশিত মূল পথে ইসলাম ধর্মকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা।
অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে যে ওয়াহাবি আন্দোলন চলেছিলো, তার প্রকৃত নাম ছিলো -" তারিখ ই মহম্মদিয়া"।
প্রবর্ত্তক
- অষ্টাদশ শতাব্দীতে আরবে আব্দুল ওয়াহব নামে এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই মতবাদ প্রচার করেন।
- পরবর্তীকালে ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রথমার্ধে ভারতে সৈয়দ আহমেদ ব্রেলভি এবং বাংলাদেশে মির নিসার আলি "তারিখ ই মহম্মদিয়া" আদর্শের প্রচার করেন।
উদ্দেশ্য
" তারিখ ই মহম্মদিয়া" মতাদর্শের মূল উদ্দেশ্য ছিলো ৪ টি -
- ইসলাম ধর্মকে হজরত মহম্মদ প্রদর্শিত পথে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
- ইসলাম ধর্মের ভিতরে পীর, সন্ত, মাজহাব প্রভৃতি পৌত্তলিক আচার ও সংস্কার গুলিকে দূর করা।
- ইসলাম ধর্মের মধ্যে অমুসলিম নানা প্রথা ও সংস্কার গুলিকে দূর করা।
- ইসলামকে তার বিশুদ্ধ রূপে প্রতিষ্ঠিত করা।
"তারিখ ই মহম্মদিয়ার" ধর্মীয় আদর্শ
তারিখ ই মহম্মদিয়ার মূল আদর্শে বলা হয়েছিলো -
- নামাজ, রোজা, কোরান, শরিয়ৎ ইত্যাদি ইসলামের অনুশাসন গুলি প্রত্যেক মুসলমানকে পালন করতে হবে।
- নিরাকার আল্লাহের উপাসনা করতে হবে।
- প্রত্যেক মুসলমানকে দাড়ি রাখতে হবে ও মুসলিম সংস্কৃতির অনুসারী হতে হবে।
ফলাফল
তারিখ ই মহম্মদিয়ার আদর্শের প্রভাবে -
- আরবে ও ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
- ইসলাম ধর্মের ব্যাপক সংস্কার হয় এবং
- মুসলিমদের মধ্যে শ্রেনী সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।